আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাড়ি নিয়ে বাড়াবাড়ি


* সে সময়টাতে জনপ্রিয়তার তুংগে ছিলো বেসরকারী টেলিভিশণ ইটিভি । চার দলীয় জোট সরকারে এসে প্রায় হঠাৎ করেই ইটিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দিলো । কারণ , ইটিভিকে যে লাইসেন্স দেয়া হয়েছিলো তা যথাযথ নিয়ম মেনে দেয়া হয়নি । এক সরকারের সময়ে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে দেয়া ইটিভির লাইসেন্স আরেক সরকার এসে বাতিল করে দিলো । ** রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান-এর মৃত্যুর পর সে সময়ের সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে নাম মাত্র মুল্যে একটি বাড়ি বরাদ্দ দিলেন ।

এই বরাদ্দ প্রক্রিয়াটি যথাযথ ভাবে হয় নি বলে পরবর্তি এক সরকার সেই বরাদ্দ বাতিল করে দিলো । * সি এম এইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত লেখক হুমায়ুন আজাদকে দেখতে গেলে সে সময়কার বিরোধী দলীয় নেত্রীকে জাহাঙ্গীর গেইটে আটকে দেয়া হলো , ক্যান্টনমেন্ট এলাকা একটি সংরক্ষিত এলাকা বলে । পরিশেষে গাড়ি বহর ও নেতা কর্মীদের সেখানে রেখে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বিরোধী দলীয় নেত্রী সি এম এইচে গিয়ে পৌঁছালেন । ** এই একই ক্যান্টনমেন্টের সংরক্ষিত এলাকায় আর এক বিরোধী দলীয় নেত্রী সপরিবারে বসবাস করেন । তার বাড়িতে দলীয় নেতা কর্মীদের অবাধ যাতায়াত ।

রাজনৈতিক কর্মকান্ড চলে সারা বছর । * আমার পরিচিত একজন সরকারী পদস্থ কর্মকর্তা উত্তরা তৃতীয় পর্ব এবং পূর্বাচল দুই জায়গাতেই প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন । কিছু দিন পরে তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়া হলো বরাদ্দকৃত প্লট দু’টির যে কোনো একটি ছেড়ে দিতে হবে । কারণ, একই ব্যাক্তিকে একাধিক প্লট বরাদ্দ দেবার নিয়ম নেই । তিনি একটি প্লট রেখে অন্যটি ছেড়ে দিলেন ।

** বেগম খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়াও গুলশানে আরো একটি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে । ক্যান্টনমেন্ট একটি সংরক্ষিত এবং স্পর্শকাতর এলাকা হওয়ায় এবং এখানে বসে রাজনীতি পরিচালনা করা প্রশ্নবোধক হওয়ায় , বেগম খালেদা জিয়াকে এই বাড়িটি ছেড়ে দেবার আহ্ববান জানানো হয় । বেগম খালেদা জিয়া সেই আহ্ববানে সাড়া না দিয়ে কোর্টের দাঁড়স্থ হলেন । কোর্টও সেই বাড়ি ছেড়ে দেবার জন্য একটি নির্দষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিলেন । আমাদের নেতা নেত্রীবৃন্দ সব সময় কিছু কথা বলেন ।

কথাগুলো মূল্যবান এবং অবশ্য পালনীয় বলেই বলে থাকেন । আমরা আম-জনতা সেই কথগুলো প্রতিনিয়ত শুনি এবং সবাই মেনে চলবে বলে আশা করি ... • আইন সবার জন্য সমান । • ব্যাক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড় । • প্রয়োজনে আমার শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও এই দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো । ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে মুইনুল রোডে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি নিয়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের বর্তমান কর্মকান্ডে কি মনে হয় তারা এই কথাগুলো মেনে চলেন ? বা এই কথাগুলোর প্রতি তাদের নুন্যতম শ্রদ্ধা আছে ? ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরের এই বাড়িটি বিএনপিকে দেয়া হয় নাই, বিএনপির চেয়ারপার্সনকেও দেয়া হয় নাই ।

দেয়া হয়েছিলো প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর বিধবা স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে , তার সেই সময়ের আর্থিক এবং সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে । মাশাআল্লাহ এখন আর জিয়া পরিবারের আর সে সময়ের আর্থিক দৈন্যতা নেই । তবে কেনো বাড়ি নিয়ে এতো কাড়াকাড়ি ? ব্যাক্তি বেগম খালেদা জিয়ার বাড়িটি বরাদ্দ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষই বরাদ্দ বাতিল করেছে । এর জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকার মানে কি ? তাও আবার কোরবানী ঈদের দুইদিন আগে ! এই হরতালের কারনে রাষ্ট্র এবং সারা দেশে সাধারন মানুষের যে অর্থ এবং সম্পদের ক্ষতি হবে তার ক্ষতি পূরণ কে দেবে ? বিএনপির রাজনীতি কি তাহলে শুধু মাত্র জিয়া পরিবারের জন্য ? দেশ এবং জনগন গোল্লায় গেলেও তাদের তাতে কিছুই যায় আসে না ? বিএনপির রাজনীতির মূলে কি ? জিয়া পরিবার নাকি জিয়ার আদর্শ ? যদি জিয়া পরিবারই হয়ে থাকে বিএনপির রাজনীতির মূল কথা তাহলে সেটাও তাদের পরিষ্কার করে বলা উচিৎ । তা না হলে দেশ ও দশের প্রয়োজনে আইনের কথা বলে রেংস ভবনের মতো বিশতলা ভবন বা ভূমি থেকে যাদের উচ্ছেদ করা হয় তারা নিজেদের বঞ্চিত মনে করবে ।

বোকা মনে করবে নিজেদের, যারা প্রিয় নেতা/নেত্রীর আহ্বানে দেশত্ববোধে উদবুদ্ধ হয়ে দেশের প্রয়োজনে বাপ দাদার ভিটে-মাটিটাও ছেড়ে দিয়ে আসে । লজ্জ্বায় মাথা হেট হয়ে যাবে তাদের, যারা ঘর-বাড়ি সংসার ফেলে, নিজের জীবন ও জীবিকার দিকে না তাকিয়ে জীবনের প্রায় পুরোটাই ব্যয় করে ফেলেছেন পার্টির আদর্শের কথা বলতে বলতে ! আর ... জীবনের ওপারের জীবন থেকে একজন জিয়া যখন দেখবেন তার সৃজিত দলের নেতা কর্মীরা , তাদের জন্য রেখে আসা তার ‘সম্পদ’কে পাশে ঠেলে ‘সম্পত্তি’র পেছনে ছোটাছুটি করে নিজেরা হয়রান হচ্ছে , তখন তার কেমন লাগবে ! পরিবার কেন্দ্রিক এই রাজনীতি আমাদের কি দিয়েছ ? কি দিচ্ছে ? আর ভবিষ্যতেইবা কি দিবে ? পরিবার কেন্দ্রিক এই পরিবারতন্ত্র নিপাত যাক জনগনের জন্য গণতন্ত্র মুক্তি পাক ।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.