প্রতিদিন যা পড়ি পত্রিকার পাতায়, ভাললাগা-মণ্দলাগা সবই শেয়ার করি সবার সাথে।
পিকেএসএফের বিশ বছরপূর্তিতে অর্থমন্ত্রী
সমকাল
ক্ষুদ্রঋণের চোরাবালিতে উন্নয়ন আটকে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণকে মহাজনী ঋণের দুর্নাম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ক্ষুদ্রঋণের ৪ কোটি গ্রহীতা সত্ত্বেও দেশের পৌনে দুই কোটি মানুষ এখনও অতিদরিদ্র_ তাহলে ঋণের অবদান কোথায়? এসব বিষয় খতিয়ে দেখা উচিত বলে তিনি মত দেন। ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গতকাল তিনি এসব কথা বলেন।
দু'দশক পূর্তি উপলক্ষে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) '২০ বছরপূর্তি ও উন্নয়ন মেলা' শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। বক্তৃতা করেন পিএকএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. কাজী মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান। সংস্থার সভাপতি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী
খলীকুজ্জমান
আহমদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
এদিকে ৪ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকেলে 'গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকা পানিভিত্তিক আঞ্চলিক সহযোগিতা' শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ভারত, নেপাল এবং ভুটানের বিশেষজ্ঞরা বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে ২০ হাজার ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থা বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। এ ঋণের ৪ কোটি গ্রহীতা সত্ত্বেও দরিদ্রের হার পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আমাদের। এখনও দারিদ্র্য সীমার নিচে ৬ কোটি মানুষ।
এর মধ্যে পৌনে দুই কোটি অতিদরিদ্র। তাহলে ক্ষুদ্রঋণের অবদান কোথায়। ঋণ নিয়েও কেন উন্নয়ন হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখা দরকার। এসব সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার ক্ষুদ্রঋণের মনিটরিং সংস্থা করেছে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটারি অথরিটি (এমআরএ) নির্ধারণ করে দেবে সুদের হার কত হবে।
তবে ক্ষুদ্রঋণের কিছু অবদানের কথাও স্বীকার করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ঋণদানকারী সংস্থার সুদের হার ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের বেশি নয়। এসব সংস্থা দারিদ্র্য বিমোচন করতে না পারলেও গ্রহীতার ভোগ ক্ষমতা বাড়ছে। দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য তিনি মানবসম্পদ উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকারি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কার্যকর সমন্বয়ের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণকে মানবিকীকরণ এবং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রাখছে পিকেএসএফ।
তবে এ বিষয়ক কর্মসূচির মধ্যে অধিক কর্মসংস্থানমূলক এবং গ্রহীতা আগ্রহের কথা বিবেচনা করে প্রকল্প গ্রহণের জন্য তিনি পিকেএসএফ কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। এ ধরনের প্রকল্প সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পেঁৗছে দিতে বিটিভি এবং বেতার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এম সাইদুজ্জামান বলেন, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ১২ বিলিয়ন ডলারের ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল দাতাগোষ্ঠী। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের পরামর্শে এ অঙ্ককে ৪ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে সাইদুজ্জামান বলেন, আন্তজার্তিক বাজারে খাদ্যশস্যের বাড়তি দাম এবং জ্বালানি তেলের দাম ৩ থেকে হঠাৎ ১১ ডলার বেড়ে যাওয়ায় দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছিল।
সভাপতির বক্তৃতায় ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মানুষকে মানব মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করাই জাতীয় লক্ষ্য হওয়া উচিত। ক্ষুদ্রঋণ এখন পরিবর্তনের সময় পার করছে। ক্ষুদ্রঋণের মাতৃভূমির মর্যাদা সত্ত্বেও এখন বিশ্বব্যাপী এর দুর্নাম রয়েছে। এর থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রস্তাব এমআরএ বিবেচনা করছে।
এসব বিষয়ে এমআরএর সিদ্ধান্ত এলে অনেক অগ্রগতি হবে। পিকেএসএফও এর মৌলনীতিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জীবনব্যাপী অবদানের জন্য পিকেএসএফের পক্ষ থেকে সংস্থার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অর্থমন্ত্রী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।