আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হত্যা মামলার আসামী এখন প্রকাশ্যে



যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এখন প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিদিনই তিনি দলীয় সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকছেন। ইব্রাহিম হত্যা মামলায় শাওন এক নম্বর আসামি হয়েও তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে কীভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন—তা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি শাওনকে গ্রেফতার তো করেইনি, এমনকি তাকে ওই মামলায় এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদও করেনি। মামলার এজাহারভুক্ত একজন আসামি হয়েও শাওনকে আইনের আওতায় না নেয়ায় ইব্রাহিমের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর মুক্তাঙ্গনে দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শাওন। এর আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলীয় কার্যালয়ে যুবলীগের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তিনি। এছাড়াও দলীয় বিভিন্ন সমাবেশে সামনের সারিতে তাকে দেখা যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ঢাকা দিতে শাওন বর্তমানে দলীয় কর্মকাণ্ড নিয়েই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, শুধু শাওনই নন, তার সহযোগীরা এতদিন যারা আত্মগোপনে ছিল, তারাও প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসছে।

শাওনের আশপাশে এখন তাদেরকেও দেখা যাচ্ছে। এমনকি ইব্রাহিম হত্যা মামলায় যারা গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছে, তাদেরকেও বের করে আনার জন্য তত্পরতা শুরু করেছেন এমপি শাওন। ঢাকা সিটি করপোরেশনে টেন্ডারবাজ হিসেবে পরিচিত শাওনের সহযোগী যুবলীগ ক্যাডারদের অপতত্পরতা আবার শুরু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। গত ১৩ আগস্ট সংসদ ভবন এলাকায় এমপি শাওনের পিস্তলের গুলিতেই খুন হন যুবলীগ নেতা ইব্রাহিম। এ হত্যাকাণ্ডে শাওনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে—ইব্রাহিমের পরিবার থেকে এমন অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনায় থানায় পৃথকভাবে তিনটি মামলা হয়। ইব্রাহিমের ভাই মাসুম আহমেদ বাদী হয়ে আদালতে শাওনকে এক নম্বর আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলাটি তদন্ত করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি ইব্রাহিমের গাড়িচালক কামাল হোসেন কালা ও ব্যক্তিগত সহকারী সোহেলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কালা আদালতে হত্যাকাণ্ডে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।

একইসঙ্গে কীভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, লাশ গুম করার জন্য কোথায় নেয়া হয়েছিল এবং কার ইঙ্গিতে এসব করা হয়েছে—সবকিছুই স্বীকার করে কালা। এ পর্যায়ে শাওন কিছুদিন আত্মগোপনে যান। পরে ডিবি তাকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নেয়। অভিযোগ রয়েছে, ডিবি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে অতিথির মতো আপ্যায়ন করে। বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে পরে মামলা সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়।

শাওনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও যুবলীগ ক্যাডার মাজহারুল ইসলাম মিটু, দেহরক্ষী দেলোয়ার হোসেন ও যুবলীগ কর্মী গোলাম মোস্তফা শিমুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডি কর্মকর্তারা। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের পর থেকেই কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছে সিআইডি। গোপনীয়তা এতটাই যে, তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কেও সংস্থাটি কোনোকিছু বলতে নারাজ। এদিকে এই স্পর্শকাতর মামলায় এ পর্যন্ত ৩২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সাক্ষী হিসেবে এদের প্রত্যেকের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী সূত্রগুলো বলেছে, ইব্রাহিম হত্যা মামলার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদানকারী এমপি শাওনের গাড়িচালক কালাকে পুনরায় পুলিশ রিমান্ডে আনার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে সিআইডি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি জানতে চাইবে সে আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছে, তার সত্যতা কতটুকু। তবে এখন পর্যন্ত কালাকেও সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদ করেনি আমার দেশ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.