‘মোনালিসা’ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আর অনুসন্ধিৎসার যেন শেষ নেই। সেই ১৫০০ শতক থেকে যে যার মত করে চিত্রকর্মটির ব্যবচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছেন।
কেউ বলেছেন, তার হাসিটা কষ্টের, কেউবা বলেছেন আনন্দের। কিন্তু, ৫০০ বছরেও মেলেনি প্রশ্নের সঠিক উত্তর। সেই কৌতূহলোদ্দীপক মায়াবী হাসির রহস্য উদঘাটণে এবার তাই এককেবারে মডেলকেই খুঁজতে আটঘাট বেঁধে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা।
কে সেই নারী যাকে দেখে ভিঞ্চির তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছিল এই অপার্থিব সৌন্দর্য- প্রশ্নটির উত্তর খোঁজাই এখন তাদের প্রথম লক্ষ্য। এজন্য ইতোমধ্যে তারা ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে একটি সমাধিক্ষেত্র খুঁড়ে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন। সমাধিক্ষেত্রটি এক সিল্ক ব্যবসায়ীর স্ত্রী লিসা ঘেরারদিনির।
১৫৪২ সালে লিসা ঘিরারদিনি মারা যান। অনুমান করা হচ্ছে এই ঘেরাদিনিই ছিলেন লিওনার্দোর আঁকা ছবির মডেল।
ডিএনএ মিললে খোঁজা হবে তার জীবনচরিত।
বিবিসি অনলাইন জানায়, গত বছর ওই এলাকা থেকে তিনটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ওই কঙ্কালগুলোর সঙ্গে সর্বশেষ তোলা কঙ্কালের ডিএনএ মেলালে মোনালিসাকে শনাক্ত করা যাবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্ব চিত্রকলায় লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা 'মোনালিসা'র মতো এত আলোচিত আর কোন চিত্রকর্মই হয়নি। যত আলোচনা সবই প্রতিকৃতিতে লিওনার্দোর সৃষ্টি ‘দ্য জিয়োকোনডা স্মাইল’নিয়ে।
১৫০৩ থেকে ১৫০৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে একটি পাইন কাঠের টুকরোর ওপর মোনালিসা ছবিটি আঁকেন এ বাহাতি চিত্রকর। চিত্রকর্মের বাস্তব মানুষটির পরিচয় নিয়ে নানা অনুমান ও ধারণা প্রচলিত আছে। কেউ মনে করেন ভিঞ্চির নিজের স্ত্রীর অনুকরণেই এই অমর সৃষ্টি। কেউ কেউ আবার এর মধ্যে লিওনার্দোর মাকেও খুঁজে পান। কেউ কেউ ছবিটিতে খুঁজে পান ভিঞ্চির তরুণ সহকারী ‘সালাই’ অর্থাৎ ‘খুদে শয়তান’, গিয়ান ক্যাপ্রোত্তিকে।
তবে অধিকাংশ শিল্প-গবেষক রহস্যময় হাসির এই নারীকে ফ্লোরেন্টাইনের বণিক ফ্রান্সিসকো দ্য গিওকন্ডোর স্ত্রী লিসা গেরাদিনি বলে সনাক্ত করেছেন।
১৫১৯ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভিঞ্চি তার সবচেয়ে প্রিয় এ চিত্রকর্মটি নিজের সঙ্গেই রেখেছিলেন। এটিই পরবর্তীতে সর্বকালের সবশ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম বলে বিবেচিত হয়। ভিঞ্চির মৃত্যুর পর চিত্রকর্মটি ফ্রান্সের প্রথম রাজা ফ্রান্সিসের দখলে ছিল দীর্ঘদিন। ফ্রান্সিস ১৫১৫-১৫৪৭ সাল পর্যন্ত ফ্রান্স শাসন করেন।
তারপর আঠার শতকের পর থেকে স্থায়ীভাবে প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য চিত্রকর্মটি রাখা হয়। বর্তমানে মোনালিসার চিত্রকর্মটি ল্যুভরেই সংরক্ষিত আছে। মাঝখানে ১৯১১ সালে ছবিটি চুরি হয়ে যায়। কিন্তু, আশ্চর্যজনকভাবে তিনবছর পর ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।