আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপরাজেয় তরুন প্রজন্ম, প্রজন্ম চত্তরে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন মতাদর্শের ব্লগার, অন লাইন এক্টেভিটিস ও সমাজের সর্বস্তরের জনগন

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। প্রিয়, অপরাজেয় তরুন প্রজন্ম, প্রজন্ম চত্তরে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন মতাদর্শের ব্লগার, অন লাইন এক্টেভিটিস ও সমাজের সর্বস্তরের জনগন সংগ্রামি অভিন্দন গ্রহন করুন । ঢাকার প্রজন্ম চত্তরে (শাহবাগ মোড়ে ) সমবেত হয়েছে লাখ লাখ সর্বস্তরের মানুষ । যুদ্ধাপরাধী মনাবতা বিরোধীদের বিচারের দাবী এখন শুধু প্রজন্ম চত্তরে সীমাবদ্ধ নেই । ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে ও প্রবাসী বাঙ্গালীদের মধ্যেও ।

এমনকি এখন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও । বর্তমান আন্দোলনকে সফলতার শিখরে পৌছানোর জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ কর্ম পন্থা ও দাবী গুলি হবে নিন্মরুপঃ “এই মুহুর্তের দাবী একটাই, যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। ” দাবীঃ ১, সকল যুদ্বাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের প্রতিটি জেলায় সরকারী ভাবে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের লিষ্ট তৈরী করতে হবে। এবং সরকারী প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে রাজাকারদের সামাজিক ভাবে বয়কট ও তাদের প্রতিষ্ঠান সমূহ জাতীয় করন করতে হবে।

যদি কোন ব্যক্তি বা মহল তাদের সাথে কোন প্রকার সামজিক সম্পর্ক ও লেন-দেন করে তবে উক্ত ব্যক্তি বা মহলকেও একই পরিনতি ভোগ করতে হবে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে জামাতসহ যে সকল দল হানাদারদের সহযোগীতা করেছে সে সকল রাজনৈতিক দল গুলোকেও ৭১ এ হানাদারদের সহযোগীতার অপরাধে জাতীয় সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষনা করতে হবে। দাবীঃ ২, যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের সর্বচ্চ শাস্তি নিশ্চত করনের জন্য ৭১ এ শহীদ ও নির্যাতিত পরিবার গুলোকে বিচার কার্জের সাথে সম্পৃক্ত করে তাদের পূর্ব পুরুষদের রক্তের ঋন শোধ করার সুযোগ দিতে হবে। দাবীঃ ৩, জার্মানির ফ্যাসিস্ট পার্টিকে যেমন যুদ্ধাপরাধের দায়ে নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছিল তেমনি পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর সহযোগী জামাত , ছাত্র সংঘ (যা ইসলামি ছাত্র শিবিরে রুপান্তরিত) , মুসলিম লীগ , পি পি পি (অবলুপ্ত), নেজামে ইসলাম প্রভৃতি কে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে আপরাধ সংগঠিত করার দল হিসাবে প্রতিষঠানিক ভাবে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক এবং তাদের বিচারের জন্য আইন প্রণয়ন করা হোক দাবীঃ ৪, দেশের খ্যাতিমান আইন বিদগনকে বিচার কাজে সহযোগিতা করার জন্য আহবান করতে হবে। যাতে করে দেশের সাধারন জনগনের কাছে পরিস্কার হয়ে যায় কারা যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারের বিচারের বিপক্ষে।

প্রিয় বন্ধুরা, “১৯৭১ সালের আমাদের মহান মক্তিযুদ্ব বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন “ দাবীঃ ৫, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ছিলঃ (ক) একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভুখন্ড, জাতীয় পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত। (খ) কমিটমেন্ট ছিল সকল শ্রেনী পেশার জনগনের অধিকার ও কর্তৃত্ব, অর্থনৈতিক মুক্তি, শোষনহীন সমাজ ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়ীক চেতনা ও সুস্থ-সন্ত্রাসমুক্ত দেশ। প্রথমটি অর্জিত হলেও দ্বিতীয়টি অসমাপ্তই রয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার বান্ধব বিভিন্ন মহল প্রচার-প্রচারনা চালাচ্ছে দেশ ও বিদেশে এই বলে যে, স্বাধীনতা প্রজন্ম চত্বরে ঢল নামা লক্ষ জনতার জড়ো হওয়াটা সরকারের একটি মহলের কাজ। অতএব অভিলম্বে দ্বিতীয় কমিটমেন্টটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারকে তারুন্যের এই গন জাগরনকে সন্মান প্রদর্শন করতে হবে।

দাবীঃ ৬, অভিলম্বে দেশের প্রতিটি গ্রাম পর্যায়ে ৭১ এর শহীদের তালিকা তৈরী করে গ্রাম ভিত্তিক শহীদের নামের তালিকা সহ একটি ফলক তৈরী করতে হবে। যাতে করে দেশের সকল মানুষ তাদের জন্য কোন বিশেষ দিনে শ্রদ্ধা না দেখিয়ে বরং প্রতিনিয়ত শ্রদ্ধা দেখানোর সুযোগ পায়। এবং সেই সাথে গ্রাম ভিত্তিক রাজাকারদের তালিকা প্রনয়ন করতে হবে যাতে করে বাংলার মানুষ ৭১ এ তাদের কৃত কর্মের জন্য সামাজিক ভাবে বয়কট ও ঘৃনা প্রকাশ করতে পারে। এবং এই লিষ্ট তৈরীতে স্থানীয় সাধারন মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। দাবীঃ ৭, দাবি তুলুন, আইন করে নিশ্চিত করতে হবে , মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৪৯ ধারা মোতাবেক 'রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার' "( Article-49, Prerogative of mercy)" আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কতৃক সাজা প্রাপ্তদের জন্য প্রয়োগ করতে পারবেন না দাবীঃ ৮, বর্তমান আন্দোলনকে ধরে রাখা ও বিস্তৃতির জন্য এবং দলীয়করন যেন না হয় সে জন্য সারা দেশে বিগ্রেড গঠন প্রধান সাংগঠনিক কাজ, সে লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র গ্রাম, পাড়া, মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শ্রমিকপ্রতিষ্ঠান, কর্মচারীপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ীপ্রতিষ্ঠান সহ সকল স্তরে এবং পর্যায়ে অতি দ্রুত ব্রিগেড গঠন কাজ হাতে নিতে হবে।

ব্রিগেড গঠনের কাজটি সারা দেশে এবং সকল কর্মক্ষেত্র ব্যাপী হবে। এই জন্য কাজটি প্রাত্যাহিক, ধারাবাহিক ও নিয়মিত কাজ হিসাবে এক একটি গ্রামে, এক একটি ইউনিয়নে, এক একটি শিল্প এলাকায়, এক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একাধিক ব্রিগেড গঠন করতে হবে এবং সমন্বয় করার জন্য সমন্বয় কমিটিও থাকতে হবে এই ভাবে সারা দেশে কয়েক হাজার এমনকি কয়েক লক্ষ ব্রিগেড সদস্য থাকতে হবে এরাই হবে আন্দোলন টিকিয়ে রাখার প্রধান শক্তি। এই ভাবেই এই আন্দোলনের পক্ষের চেইন অব কমান্ড গড়ে তুলতে হবে। জয়বাংলা। এখন থেকে ভবিষ্যৎ কর্মপদ্বতিঃ- ১) আমাদের ব্রিগেড গঠনের উপরে প্রতিদিন গুরুত্ব দিয়ে পোস্ট /ব্লগপোস্ট অব্যাহত রাখতে হবে ।

এ কাজের মূল দায়িত্ব ব্লগারদের পালন করতে হবে। ২) ব্রিগেড গঠনের সময় যুবসমাজ ছাড়াও পেশাজীবীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার উপরে গুরত্ব দিতে হবে। এই ব্রিগেড গঠনকালে সমাজের অন্যান্য কর্মজীবী মানুষেরা যেন বাদ না পড়ে , অন্যকথায় কর্মজীবীদের মধ্যে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো কৃষিমজুর ,কৃষক , শ্রমিক, কর্মচারি এরা সবাই যেন মনে করতে পারে যে , এই আন্দোলন কেবল যুব সমাজের নয় বরং সমগ্র জন গোষ্ঠীর, সেই উপলদ্ধি আনতে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে । এই ব্রিগেড গঠনে পেশাজীবীর অন্তর্ভুক্তির বিষয়কে স্বস্থানীয় ভিত্তিক এলাকার পেশাজীবীদের অর্ন্তভুক্ত করতে হবে । শহর ও গ্রাম এলাকার এই কর্ম এবং পেশার মানুষদের ভিন্নতা ও প্রকারভেদ থাকার কারনে যে যে এলাকায় যে যে কর্ম পেশার মানুষ আছে তার উপরে গুরুত্ব দিতে হবে ।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান এলাকার ব্রিগেড গঠন দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে ভিন্ন প্রকারের হবে। যেমন ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় কৃষকের অবস্থান নেই শ্রমিক-কর্মচারীর আধিক্যই বেশী এদের সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন পেশাজীবীরা, সুতরাং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকা সহ জেলা শহরে ব্রিগেড গঠনের সময় শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আবার শ্রমিক এলাকায় শ্রমিকদের, কর্মজীবীদের আধিক্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন রেল, বন্দর এলাকা, নগর ভবন, শিক্ষাভবন, ওয়াসা সহ এইসব প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবীদের অন্তর্ভুক্তির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্রিগেড গঠন এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ হিসাবে কাজ করবে। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই ব্রিগেড গঠনের কাজ করতে হবে।

এই আন্দোলনকে জনগণের কল্যানে নিয়ে যাবার জন্য শিল্প এলেকায় ব্রিগেড গঠন অতি অবশ্যই একটি করনীয়। পৃথক পৃথক শিল্প কারখানার শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়ে ব্রিগেড গঠন করতে হবে আবার বিভিন্ন কারখানা নিয়ে শিল্পাঞ্চল রয়েছে প্রত্যেকটি শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার প্রতিনিধিদের নিয়ে শিল্পাঞ্চল ব্রিগেড গঠন করতে হবে। শিল্পাঞ্চল সমূহের মধ্যে যেমন আদমজী নগর, নারায়ঙ্গঞ্জ, ফতুল্লা, তেজগাঁ, টঙ্গি, গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার, সীতাকুণ্ড, নাসিরাবাদ-বায়েজিদ বোস্তামী, কালুরঘাট, আনোয়ারা, পতেঙ্গা, দৌলতপুর, খালিশপুর, মংলা, ছাতক, বগুড়া। রেলওয়ে ভিত্তিক গুরত্বপুর্ন স্থান হলো- রেলওয়ে জংশন (পাহাড়তলী, লাকসাম, আখাউড়া, পাহাড়পুর, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, লালমনিরহাট, ঈশ্বরদী-পাকশী ইত্যাদি)। অন্যান্য কর্মস্থল যেমন দেশের বড় বড় শহরে বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, প্রাইভেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বড় বড় শিল্পাঞ্চলে এই ব্রিগেড গড়ে উঠবে।

৩) ব্রিগেডের গঠন কাঠামো হলো ৩ জন বা ৫ জন বা ৭ জন নিয়ে এক একটি ব্রিগেড হবে একই প্রতিষ্ঠানে একাধিক ব্রিগেড গড়ে তুলতে হবে এবং সমন্বয় করার জন্য সেসব একাধিক ব্রিগেড নিয়ে একটি সমন্বয় ব্রিগেড থাকতে হবে। জয়বাংলা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.