প্রাচ্যের অঙ্ফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একটি ভাস্কর্য অপরাজেয় বাংলা। ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের এই ভাস্কর্যটিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণের দৃশ্য নান্দনিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। অপরাজেয় বাংলা ভাস্কর্যটিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি প্রতীকী রূপ বলা চলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এই ভাস্কর্যটি সাম্প্রতিককালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরও একটি সিগনেচার বা প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়ে উঠছে। বন্দুক কাঁধে দাঁড়িয়ে থাকা তিন নারী-পুরুষের ভাস্কর্য যেটি সর্বস্তরের মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তারই অনুপম স্মৃতিকাতর ভাস্কর্য 'অপরাজেয় বাংলা'।
১৯৭২-৭৩ সালে ডাকসুর উদ্যোগে অপরাজেয় বাংলার কাজে হাত দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালে ভাস্কর্যটি তৈরির কাজ শুরু হয় এবং এর শেষ হয় ১৯৭৯ সালে। ৬ ফুট বেদির ওপর নির্মিত এর উচ্চতা ১২ ফুট, প্রস্থ ৮ ফুট ও ব্যাস ৬ ফুট। ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় এ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করা হয়। ভাস্কর্যটির তিনটি মূর্তির একটির ডান হাতে দৃঢ়প্রত্যয়ে রাইফেলের বেল্ট ধরা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি।
এর মডেল ছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্র মুক্তযোদ্ধা বদরুল আলম বেনু। থ্রি নট থ্রি রাইফেল হাতে সাবলীল ভঙিতে দাঁড়ানো অপর মূর্তির মডেল ছিলেন সৈয়দ হামিদ মকসুদ ফজলে। আর নারী মূর্তির মডেল ছিলেন হাসিনা আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণভ্রমর এই ভাস্কর্যটির গুরুত্ব ও অতুলনীয় মর্যাদা সাধারণ জনগোষ্ঠীর কাছে সবসময়ই রয়েছে। ভাস্কর্যটির বেদিতে দাঁড়ানো তিন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিচ্ছবি স্পষ্টতই সব অন্যায় ও বৈষম্য দূর করে দেশে সাম্য প্রতিষ্ঠার প্রাণের গান গাইছে।
এ ভাস্কর্যে সব শ্রেণীর যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হয়েছে। ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ এই ভাস্কর্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মরণে নিবেদিত এবং শুধু তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে চিত্রায়িত করেননি সামগ্রিক সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।