পৃথিবীর সকল শাষক গোষ্ঠীকে বুঝাতে হবে বঞ্চীতদের দুনিয়া একটাই,তারা একই স্বরে কথা বলে।
গণমাধ্যমকে বলা হয় সমাজের আয়না, অর্থাৎ সমাজের ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠবে এই গণমাধ্যম নামক আয়নাটিতে। গণমানুষের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পারিবারিক চিত্রও প্রকাশিত বা প্রচারিত হতে পারে গণমাধ্যমে।
কিন্তু আমাদের সংবাদ মাধ্যমগুলো মূলত নিজেদেও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রচার প্রপাগান্ডা চালানোর জন্যই ব্যবহৃত হয় বা হয়ে আসছে। অতএব এখানে প্রশ্ন আসতে পারে তবুও আমরা এই প্রচার মাধ্যমগুলোকে কেন গণমাধ্যম বলবো? এই প্রশ্ন হয়তো এর আগেও কারো না কারো মধ্যে কাজ করেছে, তবে করলেও এখন পর্যন্ত প্রশ্নটি প্রশ্নতেই সীমাবদ্ধ আছে।
বর্তমানে গণমাধ্যমকে দুই রকমের নাম করনের মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট চাঁছে ফেলা হয়েছে। যেখানে মূলধারার গণমাধ্যম এবং বিকল্প ধারার গণমাধ্যম। মূলধারার গণমাধ্যম বলা হয় সেগুলোকেই যেগুলো নানা রকমের সংবাদ পরিবেশন করে তবে এর মূল উদ্যেশ্য থাকে বিশেষ ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠির হয়ে কাজ করা। এই প্রচার যন্ত্রগুলো নিজেদের স্বার্থকে মাথায় রেখে সূবিধা মতো আভ্যন্তরিণ নীতিমালা ঠিক করে নেয়। সে কারনে সাংবাদিকরা এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে গেলে নতুন প্রতিষ্ঠানের নিয়ম নীতিমালা মেনে তাদেও সূরেই কথা বলে।
সে বিবেচনায় এই তথাকতিথ মূলধারার সাংবাদিকরা হয়ে ওঠেন এক রকম বাজারের পন্য। যে প্রতিষ্ঠান যত বেশী দামে কিনতে পারে সে প্রতিষ্ঠানের কাছেই ধরা দেয় এই পন্যটি। তবে এর কিছু ব্যাতিক্রমও ঘটে। নিজস্ব আদর্শ চিন্তা চেতনাকেও অনেক আগলে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যান শেষ পর্যন্ত। আনেক টিকে থাকতে না পেরে পেশার কাছ থেকে ছুটি নেন এমন ঘটনাও আছে।
কতিথ এই মূলধারায় এমন বহু ঘটনাই ঘটে যেসব তেমন একটা আলোচনায় আসে না। কারণ সেখানে প্রত্যেকের কাছেই নিজের আখের কি হবে, সেটাই বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
অপর দিকে গণমাধ্যমের যে অংশটিকে বিকল্পধারার গণমাধ্যম বলা হয়, তারা আসলে সে অর্থে সাংবাদিকতার কোন নিয়ম কানুন মেনে চলেনা এবং কোন কারণেই সেটা মেনে চলার প্রয়োজন বোধ করে না। একরকম অনিয়ম তান্ত্রিকতাকে নিয়ম করে গণমানুষের হয়ে কথা বলার চেষ্টা করাটা বা করাই হচ্ছে বিকল্প ধারার গণমাধ্যমের প্রধানতম চরিত্র। যেখানে দেখা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত রাস্তার পাশে মানুষ না খেয়ে না পরে বেঁচে থাকে সেখানে বিকল্পধারার গণমাধ্যম প্রয়োজনবোধ করে না সেখানে গিয়ে জিঙ্গেস করার, আপনি খেয়েছেন? অপরদিকে কতিথ এই মূলধারার গণমাধ্যমের জন্য এই প্রশ্নটা বেশ জরুরী।
তাহলে যাদেরকে আমরা মূলধারার বলছি, আসলেই কি তারা মূলধারার?
সাধারণ মানুষের সূখ-দুখ এবং নানা অভাব অভিযোগ নিয়ে যারা তাদের সংবাদ পরিবেশন করে, অথ্যাৎ লোকে যাকে বিকল্প ধারার গণমাধ্যম বলে গণমাধ্যম যদি সত্যিই সমাজের আয়না হয় তাহলে নিশ্চই কতিথ এই বিকল্পধারার গণমাধ্যমগুলোই আসল ধারার গণমাধ্যম।
তবুও যদি এবিষয়ে কারো কোন বিশেষ আপত্তি সামনে এসে দাড়ায়, তাহলে বলা যেতে পারে আসলে সাংবাদিকতার ধারা ব্যাখ্যায় সামন্য তবে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তণ আসা প্রয়োজন। সেটা হতে পারে মূলধারর গণমাধ্যম (যাদেরকে এখনো লোকে গণমাধ্যম বলে), বিকল্প ধারার গণমাধ্যম (যেটি এখনো বিকল্প ধারার গণমাধ্যম) এবং নতুন একটি আসতে পারে যার নাম হতে পারে বানিজ্যিক ধারার গণমাধ্যম। এই বানিজ্যিক ধারার গণমাধ্যমটির কাজ হবে, বিভিন্ন বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রচার প্রপাগান্ডা চালিয়ে নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করবে, এতে সাধারণ পাঠকের কিছু যায় আসেনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।