আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আপনের চেয়ে পর ভালো!



কলম সৈনিক নূরুল ইসলাম (৮২) সংবাদপত্রে চাকরি জীবনে কত অসহায় মানুষের জীবন কাহিনী লিখেছেন। তার সহযোগিতা ও লেখনির মাধ্যমে কত মানুষ ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তিনি কোনদিন ভাবেননি বৃদ্ধ বয়সে আপনজনের বোঝা হবেন। কোনদিন ভাবতেও পারেননি জীবনের অন্তিম সময়ে এতটা ছন্নছাড়া হবেন । চাকরি জীবনে কত লোক তার কাছে আসতো, আপনজনরা কতই সম্মান করতো।

বাড়িতে একটু দেরি করে ফিরলে তাকে কৈফিয়ত দিতে হতো। আরও কত আদর যতœ, তা তিনি বলে শেষ করতে পারছেন না। তাই জীবনটা আজ সাংবাদিক নূরুল ইসলামের কাছে মনে হচ্ছে কঠিন, বাস্তবতার ইট সুরকির ইমারত। জীবনের শেষ বেলায় নূরুল ইসলামের শেষ ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রমে হবে, এটা তার নিয়তির লিখন বলে অঝোরে চোখের পানি ছেড়ে কাঁদতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলে উঠেন, আপনজন থেকে পর ভাল, পরের চেয়ে বৃদ্ধাশ্রম শ্রেয়।

গাজীপুর মনিপুর বিশিয়া বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে ১০৪ জন বৃদ্ধের সঙ্গে সাংবাদিক নূরুল ইসলাম একজন। তিনি সংবাদপত্র জগতে সুনামের সঙ্গে চাকরি করেছেন। তার ভাষায় সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ বলে বুদ্ধিজীবী, সরকার, সুশীল সমাজসহ সকল পেশার মানুষ টাইটেল দিয়ে থাকেন। সেই দর্পণের নিষ্ঠা ও আদর্শের সৈনিকরা বৃদ্ধ হলে সমাজ দুঃস্থ বলে অবহেলা করে থাকে। ঐ সমাজের তারা অবহেলিত।

অন্তিম সময়ে আপনজন দ্বারা নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি অচেনা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে নাড়িছেঁড়া ধন ছেড়ে বের হয়ে পড়েন। পরে ঠাঁই পেলেন হƒদয়বান ব্যক্তি আব্দুল জাহিদ মুকুল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বৃদ্ধাশ্রমে। এখানে এসে দেখেন উল্টো ব্যবস্থা। আপনজন অন্তিম সময় সেবা যতœ ও সম্মান না করলেও বৃদ্ধাশ্রমে সবই পাচ্ছেন নূরুল ইসলাম। আপনজনের নিপীড়ন ও নির্যাতনের কথা তিনি ভুলে গেছেন।

নূরুল ইসলাম বলেন, তার একমাত্র পুত্রের আশায় ঈদের দিন বৃদ্ধাশ্রমের বারান্দায় সারাদিন পায়চারি করেছেন। কেউ তার খোঁজ নিতে আসেনি। ঈদের দিন তার কাটে চোখের জলে। ঈদের দিন চিরদিনের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রমের মনোরম ও ছায়াঘেরা পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত কবরস্থানের পাশে গিয়ে কিছু সময় কাটান। এখানে চিরদিনের মত সকলকে ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকতে হবে।

কেউ তার সঙ্গে যাবে না। এই কথা ভেবে তিনি পুনরায় থাকার কক্ষে ফিরে আসেন।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.