আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অক্ষমের মন্তব্য প্রতিবেদন: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনিই বিষয়টি মিমাংসা করিয়া দিন



মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জানি আপনি এই আম লেখকের মন্তব্য প্রতিবেদনটি পড়িবেন না। এই মন্তব্য প্রতিবেদন পড়িবার মনন সময় আপনার নাই। আপনাকে কেহ এই মন্তব্য প্রতিবেদনটির কথা বলিবেনা। তাহাদেরও সময় নাই। তবুও যাহার বলিয়া যাইবার স্বভাব সে স্বভাবদোষেই বলিয়া যাইবে।

ইহাই স্বাভাবিক। এই দেশে আম মানুষের সংখ্যাই বেশী। আমি যেমন স্বভাব দোষে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখিতেছি তেমন আমমানুষদের কেহ কেহ স্বভাবদোষেই এই মন্তব্য প্রতিবেদনখানা পড়িবেন। ইহাই শান্তি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচনকালীন জনসভার কথাগুলো আপনার নিশ্চয়ই মনে রহিয়াছে।

যখনই বিদ্যুত প্রসঙ্গে কথা বলিয়াছেন তখন জনসভার মানুষ করতালিতে আকাশ পাতাল কাঁপাইয়া দিয়াছে। বিদ্যুত লইয়া যে দূনীর্তির কথা বলিয়াছেন মানুষ তাহাতে ধিক্কার জানাইয়াছে। আপনি বলিয়াছিলেন আপনাকে সরকার গঠনের সুযোগদান করিলে আপনি বিদ্যুত সমস্যার আশু সমাধান করিবেন। আমরা তাহা বিশ্বাস করিয়াছিলাম। আশায় ভোট দিয়াছিলাম।

আপনি সরকার গঠন করিয়াছেন। আপনার সরকার গঠনের পর হইতে বিদ্যুত পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে ক্রমাগত ধাবিত হইতেছে। এই পরিস্থিতি উত্তরনে আপনাদের কার্যকর আশু কোন পদক্ষেপ দেখা যায় নাই। বিদ্যুত সমস্যার সমাধানে ঘড়ির কাঁটা লইয়া আপনার বিজ্ঞ উপদেষ্ঠারা শিশুদের মত আচরন করিয়াছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের গৃহপালিত প্রচার যন্ত্র বিটিভি আর সরকার সমর্থক বুদ্ধিজীবিগন গদগদ ভাবে আত্নতৃপ্তির ঢেকুর তুলিয়াছিলেন।

বিদ্যুত সমস্যার সমাধান এত সহজে করা যাইবে ইহা ডিজটাল সরকারের ডিজিটাল উপদেষ্ঠা ছাড়া আরা কাহারা উদ্ভাবন করিবে। আম জনগন ভাবিয়াছে আহা এই সরকারকে কেন দুইটা করিয়া ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় নাই। তাহাতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ যথাযথ হইত। মান্যবর বিদ্যুত ও জ্বালানী উপদেষ্টা আর তাহার ঢোল বাদক মন্ত্রী মহোদয় ও ব্যান্ডপার্টির অন্যান্য সদস্যগন কাগজে কলমে বিদ্যুত পরিস্থিতির মুখস্থ উন্নয়নের কথা বর্ননা করিতে কান্ত হইতেন না। উল্লেখ্য যে, বিদ্যুত ও জ্বালানী উপদেষ্টার বিষয়ে প্রশাসনে মুখরোচক অনেক ঘটনা প্রচলিত রহিয়াছে।

এই জ্বালানী উপদেষ্টা সরাসরি জানাইয়াছিলেন ঘড়ির কাটা লাইয়া বার্ষিক খেলাধূলার বিষয়টি চলিতেই থাকিবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি বিজ্ঞ মানুষ। তাই ঘড়ির কাটা লইয়া শিশুতোষ খেলা বন্ধ করিয়াছেন। কিন্তু বিদ্যুত পরিস্থিতির উন্নয়ন কতখানি হইয়াছে তাহা আপনিই ভালো বলিতে পারিবেন। বিদ্যুত পরিস্থিতি উন্নয়নে নতুন যে আইন করা হইয়াছে তাহাতে কমিশনখোরদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হইয়াছে।

কমিশন নিশ্চিত করিবার প্রতিযোগিতায় বিদ্যুত পরিস্থিতির উন্নয়ন কতখানি হইবে তাহা প্রশ্নযুক্ত। তবে কাহারো কাহারো যে পৌষমাস আসিবে তাহা চোখ বন্ধ করিয়া বলিয়া দেওয়া যায়। ইহার জন্য জৌতিষী হইবার প্রয়োজনা নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ আপনার অন্যতম ওয়াদা ছিলো। আমরা আমমানুষ ১০ টাকা সের চাউল খাইবার জন্য বায়না ধরা উচিত নহে বুঝি।

কিন্তু যখন কোন কারন ছাড়া চাউলের মূল্য বৃদ্ধি পায় আর সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করিয়া যায় তখন আমাদের অভিমান হওয়া কি অস্বাভাবিক! ডিজিটাল সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রীর কি ক্ষোভ প্রকাশ ব্যতীত আর কিছুই করিবার নাই। বিডিআর হত্যাকান্ডের সময় তিনি যেইভাবে জঙ্গী তত্ব প্রমানে ব্যস্ত হইয়াছিলেন তাহার শতভাগের মধ্যে যদি ১০ ভাগ বাজার নিয়ন্ত্রণে মুখর হইতেন তবে আমাদের বাজারভীতি দূর হইত। তিনি সিন্ডিকেট ভাঙিতে যাইয়া নিজেই সিন্ডিকেটের সদস্যপদ লাভ করিয়াছেন কিনা তাহা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে চাউলের দামের সহিত সরকারের জনপ্রিয়তা এবং ভোটের রাজনীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি সিরাজগঞ্জের ঘটনার জন্য বিএনপি নেত্রীকে দায়ী করিয়াছেন।

আপনি কি ঘটিয়াছিলো এবং কেন ঘটিয়াছিলো তাহা আজ জানাইয়া দিয়াছেন। ডিজিটাল সরকারের সংশ্লিষ্ট বিষয়ক মন্ত্রী (যিনি নিয়ম লংঘন করিয়া নিজের দপ্তর সাজাইয়া বিতর্কিত হইয়াছিলেন) কি কি ঘটিয়াছিলো তাহা গতকাল বর্ণনা করিয়া দিয়াছেন। আপনি প্রকৃত ঘটনা মূহর্তেই উন্মোচন করিয়া দিয়াছেন। ঘটনা উন্মোচন করিবার পরেও উক্ত বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা কেন হইল তাহা বোধগম্য নহে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি বাবু হত্যাকান্ড কি কারনে ঘটিয়াছে এবং কাহারা ঘটাইয়াছে তাহাও আজ আপনি বলিয়া দিয়াছেন।

পত্রিকার ছবি ভুল হইতে পারে, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরন ভুল হইতে পারে। কিন্তু আপনি’তো আর ভুল হইতে পারেন না। যাহাই ঘটিয়া থাকুক আপনার বক্তব্যই চিরসত্য। আপনি সকল ভুলের উর্দ্ধে (একসময় বিরোধী দলিয় নেত্রীও সকল ভুলের উর্দ্ধে ছিলেন। সরকারের পক্ষ হইতে এইবার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করিলেই হয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রতিদিন সংবাদপত্রের কাগজে আপনার দলের অংগ সংগঠন সমূহের দ্বন্দ্বের সংবাদ পাঠ করিতে আর ভালো লাগেনা। নিজ দলের অংগ সংগঠনসমূহের মধ্যে ঘটিয়া যাওয়া ঘটনার প্রকৃত স্বরুপ উন্মোচনে আপনার সাফল্যের হার শুন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সরকারের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগের একটি মৌখিক নীতিমালা নির্ধারন করিয়া দিয়াছেন। আপনি তাহার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নাই। সুতরাং ইহা সরকারের নীতি এই বিষয়ে দ্বিমত নাই।

সরকারের সমালোচনা করিলে বদলীর মতন স্বাভাবিক ঘটনা ঘটিতে পারে বলিয়াও তিনি জানাইয়াছেন। (স্বল্প বুদ্ধির মানুষ বলিয়া বুঝিতে পারিতেছিনা স্বাভাবিক ঘটনাটি কেন স্বাভাবিক ভাবে ঘটিবেনা!! স্বাভাবিক ঘটানাটি ঘটাইবার জন্য কেন সমালোচনা নামক একটি ক্রিয়ার প্রয়োজন হইবে!!)। আপনার আরেক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম আর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিকট হইতে জানিয়াছি পাবনায় প্রশাসনের উপর হামলার কোন ঘটনা ঘটে নাই। শুনিয়া খুব আরামবোধ করিয়াছি। আবার লজ্জিতও হইয়াছি।

কারন এই দেশের পত্রিকাগুলি মিথ্যুকের এক শেষ। পাবনার ঘটনা লইয়া তাহারা কতকিছুই না বানাইয়া বানাইয়া লিখিয়াছে। এক একটা সরল ছবিকে জঘন্য মিথ্যাচার দ্বারা আবৃত করিয়াছে। মাননীয় উপদেষ্টা আর প্রতিমন্ত্রী মহোদয় না থাকিলে’তো আমরা সত্যের সন্ধানই পাইতাম না। জাতীয় সংসদে এই সকল পত্রিকার সম্পাদকদের লইয়া কান মলিয়া দেওয়া উচিত।

আশার কথা এই যে পাবনার ঘটনায় বদলীর মত স্বাভাবিক ঘটনা ঘটিয়াছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, টেন্ডার লইয়া, ছাত্রাবাসের দখল লইয়া, জমিজমার দখল লইয়া,বদলী লইয়া, নিয়োগ লইয়া আপনার দলের এবং অংগসংগঠনের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ থাকিবে। ইহাই স্বাভাবিক। কারন এই সকল ক্ষেত্রে ও যথাযথভাবে কর্ম সম্পাদনে আপনার দলের সকলের গভীর দায়িত্ব রহিয়াছে। কেহ কেহ স্বার্থপরের মতন এককভাবে দায়িত্ব পালন করিবে আর বাকীরা চাহিয়া দেখিবে তাহা হইতে পারেনা।

কর্ত্যরে প্রতি ভালোবাসা হইতে আর দায়িত্ববোধ হইতে মাঝে মাঝে বচসা সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝে হলের ছাদ হইতে বিবাদমান গ্র“পের অন্য কোন নেতাকে ফেলিয়া দেওয়া হয়। অহরহ লাশ পড়ে। কেহ কেহ ইহাকে নেতিবাচকভাবে প্রকাশ করিয়া থাকে। অথচ দায়িত্বপালন আর কর্তব্যবোধের মহান চেতনাটি যে পশ্চাতে রহিয়াছে তাহা ভাবিয়া দেখেনা।

এই প্রোপটে আপনার নিকট অম ব্লগারের আবেদন, আপনার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা যেমন স্বাস্থ্য বিভাগে নিয়োগের বিষয় এবং বদলীর বিষয়টিকে মিমাংসা করিয়া দিয়াছেন আপনিও সকল টেন্ডার, নিয়োগ, ঠিকাদারী, হলের দখলসহ অন্যান্য বিষয়গুলিকে মিমাংসা করিয়া দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি নির্ভুল ও বিজ্ঞ মানুষ। আপনার বন্টননীতি অবশ্যই আপনার দল এবং অংগসংগঠনসমূহ মানিয়া লইবে। সংবাদপত্র ও মিডিয়াসমূহকে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন হইতে বিরত রাখিবার জন্য ইহার চাইতে কার্যকর কৌশল আর কি হইতে পারে! প্রতিদিন ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় আর সংবাদপত্রে লাশের ছবি দেখিতে দেখিতে ক্লান্ত হইয়া গিয়াছি। মিথ্যা সংবাদ পাঠ করিয়া মিথ্যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করিতে করিতে জাহান্নামে যাইবার পথ পরিষ্কার করিতেছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের ইহকালকে মিথ্যামুক্ত করুন; আমাদের পরকাল আজাবমুক্ত হইবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.