আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিপ্লব ছড়িয়ে গেল সবখানে -অরুন্ধতী রায়।

‎'উন্মুক্ত না, বিদেশি না, রপ্তানি না’, এবং ‘বহুজাতিক কোম্পানি বা দেশি লুটেরা গোষ্ঠী নয়, গ্যাস-কয়লা-তেল-সমুদ্রসহ সকল সম্পদের মালিক দেশের জনগণ’

অরুন্ধতী রায়, বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত ভারতের লেখিকা ও মানবাধিকারকর্মী। সম্প্রতি দিল্লির ‘আউটলুক’ সাময়িকীতে ‘ওয়াকিং উইথ কমরেডস’ শিরোনামে লিখেন তার সাড়া জাগানো দীর্ঘ নিবন্ধ। নিবন্ধটি সাপ্তাহিক বুধবার-এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ওই ‘আউটলুক’ সাময়িকীতেই প্রকাশিত হয়েছে তার নতুন নিবন্ধ ‘দি ট্রিকলডাউন রেভুলিউশন’। ভারতের রাজনীতি ও ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের’ নামে কর্পোরেট বাণিজ্যের ধ্বজাধারী শাসক সম্প্রদায়ের গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকান্ডের গতিপ্রকৃতি অনুধাবনের সুবিধার্থে অরুন্ধতী রায়ের এ নিবন্ধটিও ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হল।

ভাষান্তর : নেয়ামুল হক (গত সংখ্যার পর) উজ্জ্বল সেই দিনটিতে ম্ল­ানমুখ মানুষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমার কেবলই মনে পড়তে লাগল এদেশের সাধারণ মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের কাহিনী। নর্মদা উপত্যকা, পোলাভারাম আর অরুনাচল প্রদেশে তারা আন্দোলন করেছে বড় বড় বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে। উড়িষ্যা, ছত্তিশগড় এবং ঝাড়খন্ডে লড়াই করেছে খনি খননের বিরুদ্ধে। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছে লালগড়ের আদিবাসীরা। আর যারা দেশজুড়েই শিল্পকারখানা ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের নামে তাদের জমি দখল করে নেওয়ার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়েছে তারাও সাধারণ মানুষই।

কেবল এরকম একটি দুর্ভাগ্যের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বহু বছর (এবং বহু পদ্ধতিতে) ধরে তারা আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। আমার মনে পড়ে ম্যাসির কথা, মনে পড়ে নর্মদা, রুপাই, নীতি, মাংতু, মাধব, সরোজা, রাজু, গুদসা উপেন্দি এবং কমরেড কমলার (সেই তরুণীটি যে কিনা মাওবাদীদের সঙ্গে জঙ্গলে দেখা করার সময়টাতে আমার দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করেছিল) কথা। তাদের সবার কাঁধেই ঝুলে আছে বন্দুক। অতিসম্প্রতি ঘুরে আসা অরণ্যের মহিমা আমি কল্পনা করতে পারছি। অনুভব করতে পারছি বাস্তারে উদযাপিত ভূমকল দিবসে অংশ নেওয়া আদিবাসীদের বাজনার তাল-লয়ও।

আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি যেন বা ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা একটি জাতির দ্রুত সঞ্চরণশীল হৃদকম্পন। পদ্মার কথা মনে পড়ছে আমার, যার সঙ্গে ভারাঙ্গল গিয়েছিলাম। বয়স মাত্র তিরিশের কোটার এ মেয়েটি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে রেলিংয়ের ওপর ভর করে এগুচ্ছিল। অতি কষ্টে টেনে তুলছিল নিজের শরীরটাকে। এপেন্ডিক্স অপারেশনের সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই সে গ্রেফতার হয়।

মার খেতে খেতে তার দেহের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যায় এবং শরীরের কয়েকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও কেটে বাদ দিতে হয়েছে তার। তার হাঁটু দুটি থেঁতলে ভেঙে দিতে দিতে পুলিশ বলছিল, তারা নিশ্চিত হতে চায়, সে যেন আর কোনো দিন জঙ্গলে হেঁটে চলাফেরা করতে না পারে। অতঃপর দীর্ঘ আট বছর কারাভোগের পর সে মুক্তি পায়। এখন সে ‘আমারুলা ভাধু মিতরুলা কমিটি’ চালায়। এটি শহীদদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে গঠিত একটি সমিতি।

মিথ্যা বা সাজানো বন্দুকযুদ্ধে নিহতদের মরদেহের সৎকার করাই এ সমিতির কাজ। পদ্মা তার কর্মব্যস্ত সময় কাটায় অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরাঞ্চলে। এখানকার যেসব দরিদ্র বাবা-মা কিংবা স্বামী-স্ত্রী তাদের নিহত আপনজনদের দেহাবশেষ সৎকার করার ক্ষমতা রাখে না তাদের হয়ে কাজ করে সে। মৃতদেহগুলো সে সাধারণত ট্রাক্টর বা অন্য কোনো যানবাহনে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেয়। যে মানুষগুলো বছরের পর বছর এমনকি দশকের পর দশক ধরে পরিবর্তন আনার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, এমনকি নিদেনপক্ষে নিজেদের উপর সুবিচার প্রতিষ্ঠার কথাগুলোও বলাবলি করে যাচ্ছে তাদের ধৈর্য, প্রজ্ঞা এবং সাহস বিস্ময়কর।

এইসব মানুষ ভারতীয় রাষ্ট্রকাঠামোটিকে উৎখাত করতে চায়, কিংবা বড় বড় বাঁধের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলন, অথবা নির্দিষ্ট একটি ইস্পাত কারখানা, খনি খনন কিংবা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিরুদ্ধে তারা আন্দোলন করছে- যেভাবেই তাদের কর্মকান্ডকে ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, আসল ব্যাপারটি হচ্ছে তারা লড়াই করছে নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করার জন্য। লড়াই করছে মানুষের মতো করে বেঁচে থাকার অধিকার আদায়ের জন্য। তারা লড়াই করছে, কারণ তারা জানে, ‘আধুনিক উন্নয়নের ফল’ নামক মৃত পশুটি মহাসড়কের মাঝখানটায় পড়ে থেকে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ভারতের ৬৪তম স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং লাল কেল্ল­ায় স্থাপিত বুলেটপ্রুফ মঞ্চে দাঁড়িয়ে তার ভাষণটি দিলেন। এটি ছিল জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া আবেগহীন হাড়শীতল করা গতানুগতিক একটি ভাষণ।

তার ভাষণ শুনে কে বলবে, তিনি এমন একটি দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছেন যা বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেশ হয়েও যার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পরিমাণ বিশ্বের সবচেয়ে গরিব ২৬টি আফ্রিকান দেশের জনসংখ্যার সমান? তিনি বলছিলেন, ‘আপনারা সবাই ভারতের সাফল্যে ভূমিকা রেখে চলেছেন। ভারত আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তার পেছনে রয়েছে আমাদের শ্রমিক, কারিগর এবং কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম, আমরা এক নতুন ভারত গড়ে তুলছি যেখানে প্রতিটি নাগরিকেরই সমান অংশীদারিত্ব রয়েছে। এ হবে এক সমৃদ্ধশালী ভারত যেখানে শান্তি ও সৌহার্দমূলক পরিবেশে সব নাগরিকই সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। এ ভারতে সব সমস্যারই সমাধান হবে গণতান্ত্রিক পন্থায়। এখানে প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকারই রক্ষিত হবে।

’ এ ভাষণটিকে সমাধি ক্ষেত্রের পরিহাস হিসেবেই বিবেচনা করতে হয়। এটি তিনি ফিনল্যান্ড কিংবা সুইডেনের জনগণের উদ্দেশ্য দিলেও তেমন কোনো ইতরবিশেষ হতো না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সততার যে সুনাম তা যদি তিনি তার ভাষণেও ছড়িয়ে দিতে পারতেন তবে হয় তো তিনি বলতে পারতেন, ‘ভাই ও বোনেরা, বর্ণময় ঐতিহ্যকে স্মরণ করার এ দিনটিতে আপনারা আমার অভিনন্দন গ্রহণ করুন। আমি জানি, পরিস্থিতি ক্রমে কিছুটা অসহনীয়ই হয়ে পড়ছে। আপনারা হয়তো খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কথাটিই বলতে চাইবেন।

বিষয়টিকে আমরা অন্যভাবেও দেখতে পারি। আপনাদের মধ্যে ৬৫ কোটিরও বেশি মানুষ কৃষক এবং কৃষি শ্রমিকরূপে কৃষির ওপরই নির্ভরশীল। কিন্তু আপনাদের সবার সম্মিলিত উদ্যোগ আমাদের অভ্যন্তরীণ মোট জাতীয় উৎপাদনে মাত্র ১৮ শতাংশের কম পরিমাণ উৎপাদন যোগ করতে পারে। সুতরাং আপনাদের অবস্থানটি কোথায়? আমাদের তথ্য-প্রযুক্তির দিকেই একবার তাকান না। এখাতে আমাদের মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.২ ভাগ মানুষ নিয়োজিত।

অথচ এ খাতটিই যোগান দিচ্ছে আমাদের মোট জাতীয় আয়ের ৫ শতাংশ। আপনারাই বলুন, আপনারা কি এর সমকক্ষতা অর্জন করতে পারছেন? এ কথা ঠিক, আমাদের দেশে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি প্রবৃদ্ধির হারের সঙ্গে তাল মিলাতে পারছে না। তবে, সৌভাগ্যের বিষয়, আমাদের কর্মশক্তির ৬০ শতাংশই স্বকর্মসংস্থানে নিয়োজিত রয়েছেন। আমাদের শ্রমশক্তির ৯০ ভাগই অসংগঠিত খাতসমূহে নিয়োজিত। এ কথাও সত্য, তারা বছরে মাত্র কয়েক মাস কাজ করার সুযোগ পায়।

কিন্তু আমাদের কর্মসংস্কৃতিতে যেহেতু ‘স্বল্প নিয়োজিত’ বলে কোনো খাত নেই সেহেতু এ বিষয়টিকে আমরা একান্তই কিছুটা অস্পষ্টতার মধ্যে রেখে দিয়েছি। তবে তাদেরকে আমাদের হিসেবের খাতায় একেবারে কর্মহীন হিসেবে দেখানোও সঠিক হবে না। এবার অন্য আরেকটি প্রসঙ্গে আসি। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত মতে বিশ্বে আমাদের দেশেই শিশু ও প্রসূতি মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। এ প্রসঙ্গে আমি বলব, জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে খারাপ সংবাদগুলোকে অন্তত কিছু দিনের জন্য হলেও আমরা আমলে নেওয়া থেকে বিরত থাকতে চাই।

সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা পরেও ভাবতে পারব। বিশেষত চুইয়েপড়া বিপ্ল­বের পর স্বাস্থ্যখাতটি যখন পুরোপুরি বেসরকারি পর্যায়ে চলে আসবে। ইতোমধ্যেই আমি আশা করব, আপনারা সবাই চিকিৎসাবীমা কিনে ফেলবেন। আরেকটি কথা, মাথাপিছু খাদ্যশস্য প্রাপ্তির হার বিশ বছর ধরে আসলেই কমতির দিকে। অথচ এ সময়টিই ছিল আমাদের দ্রুততম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাল।

বিশ্বাস করুন, এটি একেবারেই একটি কাকতালীয় ব্যাপার। প্রিয় দেশবাসী, আমরা যে নয়া ভারত নির্মাণ করতে যাচ্ছি সেখানে একশ’ ধনী ব্যক্তির হাতেই কেন্দ্রীভূত রয়েছে আমাদের মোট অভ্যন্তরীণ জাতীয় আয়ের ২৫ শতাংশ সম্পদ। স্বল্পসংখ্যক হাতেই সম্পদ কেন্দ্রীভূত হয়। আর হাতের সংখ্যা যেখানে যত কম দক্ষতাও সেখানে তত বেশি এবং এমনটাই সব সময় ঘটে থাকে। কথায় বলে না, অতি সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।

আমরা চাইব, আমাদের কোটিপতিরা, তাদের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সহযোগীরা শান্তি-সৌহার্দ্যের এমন একটি পরিবেশে আরো বেশি সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠুন যেখানে তারা বসবাস করবেন সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে, যেখানে তাদের মৌলিক অধিকারগুলোও নিরাপদে সংরক্ষিত থাকবে। আমি জানি, এককভাবে শুধু গণতান্ত্রিক প্রথা পদ্ধতিই আমার স্বপ্নকে বাস্তবতা দিতে পারবে না। বস্ত্তত, আমি এখন এ বিশ্বাসেই পৌঁছেছি, প্রকৃত গণতন্ত্র আসে বন্দুকের নলের মধ্য দিয়েই। আর এ কারণেই আমরা আমাদের সামরিক বাহিনী, পুলিশ, কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স, কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী, প্রাদেশিক সামরিক কনস্টেবল বাহিনী, ভারত-তিববত সীমান্ত পুলিশ, পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত রাইফেলসের মতো বাহিনীগুলো তৈরি করেছি। পাশাপাশি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোতে বিপথগামী যেসব বিদ্রোহী রয়েছে তাদের নির্মূল করার জন্য গঠন করেছি স্করপিয়ন্স, গ্রে-হাউন্ড এবং কোবরার মতো বাহিনীগুলো।

নাগাল্যান্ড, মনিপুর ও কাশ্মিরে আমরা আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছি। কাশ্মির, বলার অপেক্ষা রাখে না, এটি ভারতেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে জনগণের মধ্যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা পাঁচ লক্ষাধিক সৈন্য মোতায়েন করেছি। যেসব কাশ্মিরী তরুণ দুই মাস ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সান্ধ্য আইন অমান্য করছে এবং পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়ে মারছে তারা লস্কর-ই তৈয়েবার জঙ্গি সদস্য। তারা আসলে স্বাধীনতা নয়, চায় কর্মসংস্থান।

হৃদয়বিদারক ঘটনা এই, চাকরির দরখাস্তগুলো যাচাই-বাছাই করার আগেই তাদের মধ্যেকার ষাটটি জীবন ঝরে গেছে। আমি ইতোমধ্যেই পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি, ওইসব বিভ্রান্ত তরুণদের যেন কোনোভাবেই হত্যা করা না হয়, প্রয়োজনে গুলি করে আহত করা যেতে পারে। সাত বছরের প্রধানমন্ত্রীকালে মনমোহন সিং কেবল সোনিয়া গান্ধীর একজন কেতাদুরস্ত, আপৎকালীন আজ্ঞাবাহী হিসেবেই নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন। এ মানুষটি প্রথমে অর্থমন্ত্রী এবং পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশ বছরে দেশকে এমন এক নয়া অর্থনৈতিক নীতির শাসন ব্যবস্থা উপহার দিয়েছেন যা ভারতকে বর্তমান অবস্থায় এনে ফেলেছে। সুতরাং, এমন চমৎকার একটি ছদ্মবেশ তাকেই মানায়।

তবে এ থেকে এটি ভাববার কোনো কারণ নেই, তিনি আজ্ঞাবাহী নন। তবে কি, সব নির্দেশই সোনিয়া গান্ধীর কাছ থেকে আসে না। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র তার আত্মজীবনীতে মনমোহন সিংয়ের ক্ষমতায় আরোহণের কাহিনী বর্ণনা করেছেন। ১৯৯১ সালে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মারাত্মকভাবে কমে গেলে নরসিনহা রাও সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে জরুরি ঋণের আবেদন জানান। আইএমএফ দুটি শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিতে রাজি হয়।

প্রথম শর্তটি ছিল কাঠামোগত সমন্বয় ও অর্থনৈতিক সংস্কার। আর দ্বিতীয়টি ছিল আইএমএফের পছন্দসই একজন অর্থমন্ত্রী নিয়োগদান। আর সেই ব্যক্তিটিই ছিলেন, মিত্র বলছেন, মনমোহন সিং। বছরের পর বছর ধরে তিনি তার মন্ত্রিপরিষদ ও আমলাতন্ত্রকে এমন সব মানুষের সঙ্গে জুড়ে রেখেছেন যারা পরিণতি কী হবে সেই বিবেচনা বাদ দিয়ে পানি, বিদ্যুৎ, খনিজ সম্পদ, কৃষি, জমি, টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব কিছু বেনিয়া পুঁজির হাতে তুলে দিতে ধর্মে বিশ্বাসীদের মতোই অঙ্গীকারাবদ্ধ। (চলবে সাপ্তাহিক বুধবার অবল্মবনে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.