আমি পেশায় একজন স্পীচ থেরাপিষ্ট কিন্তু ব্লগ পড়া আমার নেশা। আর একটা নেশা আছে সেটা হল মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস প্রতিটা মানুষের কাছে পৌছে দেয়া। আমি সে চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি। আমি কোন ভালো লেখক নই কিন্তু আমি একজন ভালো পাঠক।
বিশেষ শিশুদের বেড়ে উঠা নিয়ে খুব একটা আলোচনা সচরাচর হয় না।
অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় বিষয় নিয়ে আমরা সচেতন হলেও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই এড়িয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাড়তি জনসংখ্যার সাথে সাথে সারা বিশ্বে বিশেষ শিশুদের সংখ্যায়ও বাড়ছে। বাংলাদেশেও আজ অটিস্টিক শিশুর সংখ্যা কম নয়। এই বিশেষ শিশুদের আর ১০ জন শিশুর মত বেড়ে উঠার জন্য হেলথপ্রায়র২১ গত কয়েকদিন ধরে প্রকাশ করছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় টিপস। বিশেষ শিশুদের প্রয়োজন বিশেষ যত্নের।
আর সমাজের সবাই যদি তাদের প্রতি একটু একটু করে যত্ন ও ভালবাসা দেখায় তাহলে তারাও আর ১০ টি শিশুর মত সমাজে বড় হতে পারবে।
আজকে আমাদের নিবন্ধে আমরা উল্লেখ করছি বিশেষ শিশুদের সামাজিকতা শেখানোর ১২ টি উপায়। বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুকে আরও সামাজিক করে গড়ে তুলতে পারেন।
১) চোখের পলক না ফেলে তাকিয়ে থাকার খেলা
আপনার শিশুকে বলুন আজ একটি মজার খেলা খেলবেন। তার সাথে চোখের পলক না ফেলে তাকিয়ে থাকার খেলা খেলুন।
এই খেলার মাধ্যমে তার অন্যের চোখের দিকে তাকানোর অভ্যাস হবে।
২) কপালের দিকে তাকিয়ে থাকার খেলা
আপনার শিশুর সাথে যখন সময় পার করবেন তার সাথে বিভিন্ন গঠনমূলক খেলায় মেতে উঠুন। কোন একটি খেলনা বা স্টিকার নিয়ে আপনার কপালে বসিয়ে দিন। আপনার সন্তানকে বলুন আপনার কপালের দিকে তাকিয়ে থাকতে। এতে তার কোন একটি নির্দিষ্ট জিনিসের দিকে সঠিকভাবে তাকানোর অভ্যাস হবে।
৩) দোলনায় চড়া
যখন আপনার শিশু দোলনায় চড়ে তখন যতটুকু সম্ভব তার চোখের দিকে তাকানোর চেষ্টা করুন। কখনো কখনো খেলার নতুন নতুন নিয়ম করুন, যেমন প্রতি দোলায় আপনার শিশুর পা আপনার পায়ের সাথে লাগবে। এতে তার কোন নির্দিষ্ট কাজের প্রতি মনোযোগিতা বাড়বে।
৪) মজার মজার ভাষা শিখার বই
আমরা প্রতিনিয়ত ভাষায় অনেক বাগধারা উপমা ব্যবহার করি। আপনার শিশুকে পূর্ণ ভাষার ব্যবহার শিখাতে বাগধারার ব্যবহারও শেখাতে হবে।
মজার ভাষার কোন বই নিয়ে আসুন। তাকে পড়ে শোনান। বিভিন্ন আনন্দদায়ক কথায় এই বাগধারা বা উপমাগুলি ব্যবহার করুন। যেমন - তার সাথে কোন কাজ করার সময় তাকে বলুন "এই কাজটি পানির মত সোজা"। পড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন কাজে কর্মের মাধ্যমে তাকে ভাষা শিক্ষায় আরও দক্ষ করে তুলুন।
৫) ইন্টারনেটের ব্যবহার
ইন্টারনেট ঘেঁটে বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার ওয়েবসাইট বের করুন। এই সব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে মজাদার শব্দ কথা শেখান হয়। আপনার শিশুকে সাথে নিয়ে এই ধরণের গেমসগুলি খেলার চেষ্টা করুন।
৬) বুদ্ধি খাটানোর খেলা
বিভিন্ন শব্দ অথবা বাগধারার প্রশ্ন এবং অর্থ আলাদা আলাদা কার্ডে লিখুন। এরপর আপনার শিশুর সাথে বসে এই কার্ডগুলি মেলানোর খেলা খেলুন।
৭) খেলার মাধ্যমে অনুভূতি শেখা
কার্ড মেলানোর খেলায় সবসময় বাগধারা, উপমা বা শব্দ ব্যবহার না করে মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনুভূতির শব্দ লিখুন। এরপর সেই অনুভূতি অভিনয় করে দেখান। তাকে আপনার দেখানো অনুভূতির সাথে কার্ডে লেখা অনুভূতির শব্দ মেলাতে বলুন। মাঝে মাঝে তাকেও অভিনয় করে দেখাতে বলুন। এই ধরণের খেলায় শিশু যখন কোন অপরিচিত মানুষের সাথে পরিচিত হবে তখন সে অন্য মানুষের বিভিন্ন আচার আচরনও দ্রুত বুঝতে পারবে।
৮) অনুকরণ করার খেলা
মাঝে মাঝে শিশুর সাথে খেলতে পারেন একজন একজনকে অনুকরণ করার খেলা। কখনো নিজের নাক চেপে ধরে, মজার মজার হাস্যকর চেহারা বানিয়ে আপনার শিশুকে দেখান। তাকে বলুন আপনাকে পারলে নকল করে দেখাতে। কখনও আপনি তাকে বিভিন্ন হাস্যকর উপায়ে নকল করুন। এতে শিশুর সামাজিকতা অনেকটাই বেড়ে যায়।
সে মানুষের সাথে আরও দ্রুত মিশতে শেখে।
৯) কার্ড মেলানোর খেলা
বিভিন্ন মজাদার প্রশ্ন যেমন - সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন, দেশ বিদেশের নানা প্রশ্ন এবং উত্তর বিভিন্ন কার্ডে লিখে তা মেলানোর খেলা খেলতে পারেন। এটি আপনার শিশুর বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
১০) কোন একটি নির্দিষ্ট টপিকের উপর খেলা
আপনার শিশুকে একটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গের উপর ফোকাস রাখতে একধরণের বিশেষ খেলা খেলতে পারেন। যেমন - ইংরেজি প্রতিটি অক্ষরের সাথে সাথে একটি করে ফলের নাম বলা।
১১) শিশুর সাথে আলোচনা করা
কোন একটি প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করা বিশেষ শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সাথে তাদের মত করে আলোচনা করতে হবে যেন তারা বিরক্ত না হয়, ঘাবড়ে না যায়। তার সাথে উপরোক্ত বর্ণিত পদ্ধতিগুলিতে খেলার সময় আলোচনাও ধরে রাখুন। কোন কার্ড মেলানোর পর বা কার্ড ভুল মেলালে তার সাথে মজাদার শিক্ষণীয় আলোচনা করুন। বিভিন্ন কথা এবং তার জবাবে তাকে ব্যস্ত রাখুন।
এতে তার কথা বলার জড়তা দূর হতে পারে।
১২) গল্প বলার খেলা
বিভিন্ন ছবি সম্বলিত কার্ড, খেলনা সামনে রাখুন। তারপর প্রতিটি জিনিস ব্যবহার করে একটি গল্প বলার চেষ্টা করুন। প্রথমে আপনি গল্প বলার পর আপনার শিশুকে বলতে বলুন। গল্পকে মজার করে তুলতে বিভিন্ন মজার মজার ছবি খেলনা ইত্যাদি সামনে রাখুন।
(Healthprior21.com থেকে সংগৃহীত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।