সবার আগে দেশপ্রেম
পর পর অষ্টম পর্ব পর্যন্ত প্রকাশের পরঃ
স্বরস্বতি যখন কফি নিয়ে এলো তখন আমি শুয়ে কানে এয়ারফোন লাগিয়ে গান শুন্তে শুন্তে ঘুমানোর চেষ্টা কর্ছিলাম। স্বরস্বতি কি যেন বলে আমাকে ডেকে তুলল। ভাষাটা বুঝতে না পার্লেও আমাকে ডাকাটা আমার ভীষন ভালো লেগেছে। আমার কানের দিকে ইশারা করে দেখিয়ে কি যেন বল্ল। হয়তো এটাই বলছে যে আমি কি শুনছি।
আমি বল্লাম, বাংলা সং। আমি ইশারা করে জিজ্ঞেস কর্লাম, শুনবে?
ও আমার কাছ থেকে নিয়ে শুন্তে চাইলো। আমি তার কানে এয়ার ফোন টা দিলাম। সে শুন্লো, মা গো ভাবনা কেন, আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে .....
শুনে কি বুঝলো কে জানে বল্ল, আচ্ছা লাগ্তাহে। আমার কফি খাওয়া শেষ হলে মেয়েটি কাপ নিয়ে চলে যেতে যেতে জিজ্ঞেস কর্লো, রাতে এখানে খাবো কিনা।
আমি বল্লাম, খবো। ও চলে গেলো আমি বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা কর্লাম।
ঘুম ভেঙ্গেছে সন্ধার আগে আগে। আমি রুম থেকে বের হয়ে স্বরস্বতিকে খুজে বেড়ালাম কিছুক্ষণ। ওর দেখা পেলাম না।
পাশের এক ডাবল রুমে দুজন স্বামী স্ত্রী ভাড়া নিয়েছেন। তারা বের হয়ে বারান্দায় হাটা হাটি কর্ছেন। আমি দোতলা বিল্ডিং টার ছাদে চলে গেলাম। ছাদে স্বরস্বতি তাঁর ৩বছর বয়সের বোনটাকে নিয়ে খেলা কর্ছে। আমি কাছে গিয়ে বল্লাম, হায় হাউ আর ইউ?
স্বরস্বতি কোন কথা বল্ল না।
কথা বল্ল পিচ্চি মেয়েটা । কত কথা তার কোন হিসেব নেই। আমিতো কিছুই বুঝিনা। মাঝে মাঝে স্বরস্বতি কি কি বলে আমাকে বোঝানোর চেষ্ট কর্লো তাতেও কাজ হয়না। ওদের অনেক কথাই আমার বোঝা হয়না।
হঠাৎ পিচ্চি মেয়েটা তার হাতের তালুতে চুমু খেয়ে আমার দিকে বাড়িয়ে ধর্লো। আমি স্বরস্বতিকে জিজ্ঞেস কর্লাম, হোয়াট ইজ দিস?
সেও একই রকম ভঙ্গিমা করে আমার দিকে হাতটা বাড়িয়ে দিয়ে বল্ল, ফ্লাইং কিস। ইট ইজ ফ্লাইং কিস।
আমি বল্লাম, তুমিও দিলা?
হটাৎ করে ও বুঝে উঠতে পারেনি যখন বুঝলো তখন বল্ল, ওহ নো নো নো। মেয়েটা খুব লজ্জা পেয়ে তার পিচ্চি বোনটাকে কোলে নিয়ে চলে গেল।
আমি ছাদে একা একা কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ালাম।
সন্ধ্যার পর বাহিরে বের হলাম। পুরো পোখারা বাজারটা ঘুরে বেড়ালাম। বেশির ভাগ দোকানগুলো মেয়েরা চালাচ্ছে। সাধারণত শো রুম গুলোতে ছেলেদের দেখা মেলে।
টুকটাক বাজার কর্লাম। রাতে হোটেলে ফিরে এলাম তখন ৯টা বাজে। এসেই খাবার টেবিলে চলে এলাম দেখলাম দুপুরের সেই দোভাষীর কাজ করা লোকটা খেতে বসেছে। আমাকে জিজ্ঞেস কর্লো, অনেক ঘুরেছেন বোধ হয়।
আমি বল্লাম, হ্যাঁ পুরো পোখারা দেখা হয়ে গেছে।
সে বল্ল, এতো সোজা নয়। পোখারা এই এতো টুকুন ছোট শহর নয় যে, কয়েক ঘন্টায়ই আপনি সব দেখে ফেল্বেন। তখন সে কোথায় কোথায় কি আছে কোথায় দেখার কি আছে সব বলে দিল।
আমি বল্লাম, আমার নেপালী টাকা ফুরিয়ে গেছে, ইন্ডিয়ান রুপিও নেই, ডলার ভাঙ্গানো দরকার কোথায় ভাঙ্গানো যাবে?
আমাকে বল্লেন, ব্যাংক ছাড়া ভাঙ্গাতে পার্বেন না। সে ব্যাংকের লোকেশন ও বলে দিল।
বল্লাম, এভারেস্ট দেখতে যাব। ওখানকার সূর্যদয় দেখবো।
তখন স্বরস্বতির মা এলো, স্বরস্বতি এলো আমাকে ভাত এনে দিল। স্বরস্বতির মা আমার দোভাষী লোকটাকে জি্জ্ঞেস কর্লো, কি বলছে ও?
সে নেপালী ভাষায় তাদেরকে বল্ল, আমি এভারেস্ট দেখতে যেতে চাই।
------ চলবে ------
ভ্রমনকালঃ ২০০৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।