লেখাটা বেশ আগে লেখবো বলে ভেবেছিলাম কিন্তু যেই ভাবা সেই কাজ আর হয় নি। চিন্তা করে দেখলাম ব্লগে ১টা লেখা মিনিট,ঘন্টা আর দিনের হিসাবে "বাকী" পরে গেছে। তাই দেনা শোধ করতে কী বোর্ডের উপর আঙুল চালিয়ে দিলাম।
শিরোনামে মনে হতে পারে লেখাটা শিরোনামের বিশ্লেষন থাকবে কিন্তু লেখাটা সুধই কৌতুহল সর্বোস্ব। বয়স বাড়ার সাথে সাথে কৌতুহল কমে যায় শুধু প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ে।
তাই শিশু বয়সেই মানুষ সবচেয় বেশি শেখে। আমিও শিশুর কাছ থেকে কৌতুহল শেখার চেষ্টা করছি।
মিডিয়া সম্পর্কে যা বুঝি তা প্রায় অবুঝের পর্যায়ে পরে। তারপরো এই কৌতুহলি পোষ্ট। ফলে খুব আশংকা এই যে শেষ পর্যন্ত না হাঙরের কৌতুহলের মতো বিধ্বংশী হয়ে যায়(নিজের জন্য)।
জানেন তো হাঙর কিন্তু হিংস্রতা জাহির করতে দাঁত বসায় না,তার দাতের ব্যবহার শুধুই কৌতুহল নিবারনের জন্য।
যাই হৌক ধ্যানীর মতো চিন্তা না করলেও মধ্যবিত্ত পিতার মতো কপালে ভাঁজ ফেলে চিন্তা করেছি ,কবে থেকে ইরানী চলচ্চিত্র "ইসলামী চলচ্চিত্র" হলো?অংকের হিসাবে বছর ২ আগে হবে যখন দিগন্ত আর ইসলামী টিভি নাজিল হলো। তার আগেই আবশ্য ইরানী চলচ্চিত্র "ভদ্র" চলচ্চিত্র হিসাবে আমাদের বিবেকে জায়গা করে নিয়েছিলো।
বিটিভি যুগে আমরা শুক্র & শনিবার চলচ্চিত্র দিবসে মাঝেমধ্যে ইরানী চলচ্চিত্র উপহার পেতাম। তখন এই চলচ্চিত্রের একটি "রুচিশীল" দর্শক শ্রেনী তৈরি হয়।
বিশেষ করে শিক্ষিত রক্ষনশীল শ্রেনী এই চলচ্চিত্রের মুগ্ধ দর্শক হয়ে থাকতো । আমার মতে তখন পর্যন্ত ইরানী চলচ্চিত্র "ইসলামী চলচ্চিত্র" হিসাবে প্রতিষ্ঠা পায়নি।
পট পাল্টে যায় দিগন্ত আর ইসলামী টিভি আসার পর । ইরানী চলচ্চিত্রের প্রেক্ষিত পরিবর্তন করে দেয়া হয় সুক্ষভাবে। যখন অপরাপর চ্যনেলগুলো ঈদ উপলক্ষে বাংলা সহ বিভিন্ন ভাষাভাষি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করেছে ঠিক তখনই এই ২টি চ্যনেল সমান্তরাল ভাবে ১নাগাড়ে ইরানী চলচ্চিত্র দেখিয়ে গেছে।
অবস্হা দৃস্টে মনে হচ্ছে আগামী বকরা ঈদেও এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।
বিষয়টি বুঝতে আমাদের আবশ্যিকভাবে এই ২টি চ্যনেলের রাজনৈতিক চেতনাকে মাথায় রাখতে হবে। কেউ যদি মনে করেন মানসম্মত চলচ্চিত্রের বিকাশের জন্য তাদের প্রচেষ্টা তবে বলতে হয় ইরানী চলচ্চিত্রের বাহিরে কি মানসম্মত চলচ্চিত্র নেই?তাহলে কি উদ্দেশ্য এই জোয়ার চলছে?তাই বলা যায় নি:সন্দেহে এই উপস্হাপনা আদর্শিক। ইসলামী আদর্শ কেন্দ্রিক যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র না হলে মুসলিম পরিচালক,মুসলিম অভিনেতা ও হিজাবধারী নারীর উপস্হিতি নির্ভর চলচ্চিত্র দেখিয়ে চ্যনেলে ২টি তদের "ইসলামী" গাম্ভীর্য বজায় রেখে চলছে। যার সাথে আমদের বিদ্যমান সমাজ ও রাজনৈতিক কাঠামোর যোগাযোগ একটি অনুসন্ধানের বিষয়।
একই সাথে চলচ্চিত্র গুলো কতটুকু "ইসলামী' সেটাও আলোচোনার বিষয় হতে পারে।
বিষয়টিকে আমরা "চলচ্চিত্রের ইসলামীকরন" বলতে পারি।
ভালো করে খেয়াল করলে যে কেউ বুঝতে পারবে চলচ্চিত্রগুলোর বিষয়বস্তু দিয়ে এগুলো যতটা না ইসলামী হয়েছে তার চেয়ে বেশী ইসলামী হয়েছে হিজাব মাথায় নারীকে আমদের চলচ্চিত্রের নারীর সমান্তরাল উপস্হাপনে।
ইসলামের মানদন্ডে বিষয়টিকে ইসলামী হতে হলে কি কি উপাদান থাকতে হবে তা আলোচোনা করবেন আলেম শ্রেনী কিন্তু এই কথা নিশ্চত যে এটি ইসলামে "মহিলা হিজাব সর্বস্ব" ধারা নামক ১টি ধারা তৈরি করছে। যেখানে হিজাব নারীর মুসলমানিত্ব প্রকাশ করছে কিন্তু পুরুষের মুসলমানিত্বের কি হবে?এটি কি তীব্রভাবে পুরুষবাদী নয়?
মজার বিষয় হচ্ছে এই ২টি চ্যানেল ব্যতিরিকে অন্য চ্যানেল গুলো ইরানী চলচ্চিত্র প্রচার করে না যদিও চ্যনেল আই ,আরটিভি বিভিন্ন সময় হলিউড সহ বিভিন্ন বিখ্যত চলচ্চিত্র গুলো ডাবিং শ প্রচার করেছে।
ফলে প্রগতিবাদী ভাবধারা ও ইসলামী ভাবধারার চ্যনেলগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের মধ্যদিয়ে ইরানী চলচ্চিত্র আরো "ইসলামিক" হয়ে উঠে।
এই বিষয়টিকেও আমরা "চলচ্চিত্রের ইসলামীকরন" বলতে পারি।
মোদ্দাকথা হলো এই এজেন্ডাভিত্তক সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে কোন উপস্হাপনকেই সাদাচোখে দেখার সুযোগ নেই। ১টি স্বাধীন রাষ্ট্রে দীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বিদ্যমান স্হানিক রাজনৈতিক,সামাজিক,অর্থনৈতিক বাস্তবতাকে এড়িয়ে এ ধরনের উপস্হাপন এবং তার প্রভাব নিয়ে ভাবা কি সমাজের সদস্য হিসাবে আমাদের দায়বদ্ধতার মধ্যে পরে না?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।