আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌতুকের জন্য! জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকার চিহ্ন শরীরে ১৩ বছর বয়সী এই মেয়েটির।

সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,
দুই হাতের যে অংশটুকু অনাবৃত, সেখানে শুধুই গোল গোল পোড়া দাগ। জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকার চিহ্ন শরীরে নিয়ে গতকাল মোহনপুর থানায় এসেছিল ১৩ বছর বয়সী হোসনে আরা। তার বাবা মোহনপুরের সিন্দুরী গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর আবদুল মজিদ জানালেন, বখাটেদের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে এই বয়সেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যৌতুকের দাবিতে স্বামী মামুনের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবার বাড়ি পালিয়ে আসতে হয়েছে হোসনে আরাকে। আবদুল মজিদ সাংবাদিকদের জানান, স্কুলে লেখাপড়ার খরচ চালাতে না পেরে এক শিক্ষকের সহায়তায় মেয়েকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি।

সেখানে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ছিল হোসনে আরা। কিন্তু একদল বখাটের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তিন মাস আগে তড়িঘড়ি করে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন বাটুপাড়া গ্রামের মৃত নাজিম উদ্দিনের ছেলে মামুনের সঙ্গে। মামুন কৃষিকাজ করে। তাদের পারিবারিক অবস্থা ভালোই। বিয়ের সময় ছেলেপক্ষ যৌতুক দাবি না করায় স্বস্তির নিঃশ্বাসই ফেলেছিলেন মজিদ।

কিন্তু মাস দেড়েক না যেতেই মামুন ৩০ হাজার টাকা এবং নাক, কান ও গলার সোনার গয়নার জন্য বায়না ধরে। উপায়ান্তর না দেখে মজিদ একাধিকবার মামুনের পরিবারের কাছে নিজের অপারগতার কথা জানান। কিন্তু তাতেও মন গলেনি মামুনের। হোসনে আরা অভিযোগ করে, বাবার বাড়ি থেকে টাকা আর গয়না এনে দেওয়ার দাবিতে মামুন মাসখানেক আগে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতে শুরু করে। দিন দিন বাড়তে থাকে নির্যাতনের মাত্রা।

শেষ পর্যন্ত জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে হোসেন আরার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের সৃষ্টি করে মামুন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামীর বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে এই কিশোরী। থানায় হোসনে আরা বলে, মামুন ঠাণ্ডা মাথায় তার ওপর নির্যাতন করেছে। লাঠি দিয়ে সমানে পিটিয়েছে সকাল-বিকাল। শেষদিকে সিগারেট দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার পাশাপাশি গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টাও করেছে সে।

এ অবস্থা দেখে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলেও কারো কথা শোনেনি সে। স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ে হোসনে আরা। মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব জানান, তাঁরা অভিযোগের তদন্ত করতে লোক পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে মামলা দায়ের হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। http://www.kalerkantho.com/
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।