এডিট করলাম
১.
আমার সমাজ হোমাওয়ার্কের খাতায় কে যেন একটা ছবি একে রেখেছে। ছবিটা এমন বিদঘুটে,যা আমার ছোট বোন নিশু ছাড়া আর কেউ আঁকতে পারে না। অবশ্য নিশু ছাড়া পৃথিবীতে আর কেউই আমার খাতায় আকাআকি করে না। একমাত্র সেই সবসময় আমার হোমওয়ার্কের খাতাগুলায় ছবি আঁকে। এবং আঁকে বিদঘুটে সব ছবি।
যেমন আজকের ছবিটা। নিশু সম্ভবত একটা গ্রামের মহিলা আঁকার চেষ্টা করেছিল(ক্যালেন্ডারের ছবিটা দেখে),যা দেখাচ্ছে বনমানুষ ভেংচি দিলে যেমন লাগে তার মতোন বা হনুমানরা বমি করার আগে মুখ বিকৃত করলে যেমন লাগে,তারচেয়ে একটু ভাল।
ছবিটা যেমনই হোক,তার সাথে পাল ও আর্যদের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। অথচ ছবিটা এমনই পৃষ্ঠায় আঁকা যা ছিড়লে কালকের জন্য করে রাখা হোমওয়ার্ক ছিড়ে যাবে। আর নতুন করে হোমওয়ার্ক করাও সম্ভব না কারণ আমার একমাত্র কলমের বলটা এইমাত্র পড়ে গেছে।
এতরাতে কলম কিনে আনাও যাবে না,তাই আমি এ ব্যাপারে কিছুটা চিন্তিত।
২.
ব্যাপারটা অনেকটা এরকম। ২য় ঘন্টায় সমাজ ক্লাসে হোমওয়ার্ক জমা দিলাম। সমাজ ম্যাডাম বিদঘুটে ছবিটা দেখে বলল-'এই পেত্নি কে আঁকছে??'তারপর কে যেন বলল-'ম্যাডাম,আপনেরে আঁকছে। 'তারপর শুরু হল আমার দুঃখের দিন।
৩.
দুঃখের দিনের পরে আসল দুঃখের রাত। যেমন আসে রোদ এবং খরা। দুঃখের রাতে আমাদের বাসায় আমাদের জীবনকে বরবাদ করতে আমাদের মহাজ্ঞানী নানি আসল। সেই সাথে আমার জীবন থেকে আলোগুলা নিভে গিয়ে অন্ধকারের বাল্বগুলা জ্বলতে লাগল। আমি কিড়মিড় করে দাঁত কামড়াতে লাগলাম আর নিশু কামড়াতে লাগল স্ট্যাডলার পেন্সিল।
কেননা নানি তখন আমাকে ইংরেজি রচনা ও সুরা মুখস্ত ধরা শুরু করেছে আর নিশু আমার হোয়াইট প্রিন্টের কোন খাতা(হোম ওয়ার্কের গুলাই হোয়াইট প্রিন্টের,বাকিগুলা নিউজ প্রিন্টের) খুঁজে পাচ্ছিল না। কারন সেগুলো আমি আলমারির উপর রেখে দিয়েছিলাম।
এইগুলাই ছিল আমার জীবনের দুই দিনের পূর্ণ ঘটনা। সবাই বলে ডায়রি লেখা খুব ভাল। ছোটচাচার পুরান ডায়রিতে শেষ দুটা পাতা খালি থাকায় ডায়রি লিখে রাখলাম।
ভাগ্য ভাল,আমিই পেয়েছিলাম!নিশু পেলে হয়ত এতক্ষণে বিদঘুটে কোন ছবি এঁকে ফেলত!
_____________________________________________
গল্পটা তিন বছর আগে লিখেছিলাম। এটা আমার লেখা প্রথম গল্প যা কিনা আমার নিজের পছন্দ হয়েছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।