আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পেন্সিলের তৈরি কিছু শিল্পকর্ম



এই লেখাটা যারা পড়বেন তাদের মধ্যে পেন্সিল ইউস করেন নাই এমন মানুষ মনে হয় খুজে পাওয়া যাবে না। এই পেন্সিল নিয়েই হয়তো সবার শিক্ষার হাতেখড়ি। এই পেন্সিল দিয়েই যে অনেক সুন্দর সব শিল্পকর্ম করা যায় তা হয়তো অনেকেই জানেন না। এই শিল্পকর্ম গুলো কতোটা সুন্দর হতে পারে তা কি কেউ কল্পনা করতে পারেন? জেনিফার মায়েস্ট্রি নামের এক মিশিগানের আর্টিস্ট সেই পেন্সিল দিয়েই তৈরি করেছেন কিছু শিল্পকর্ম। তবে এই পেন্সিল গুলো কিন্তু সবই সাদাকালো না, এগুলোর অধিকাংশই রঙ্গীন পেন্সিল।

এবং এই শিল্পকর্ম গুলো দেখতে অবশ্যই কিছুটা ভয়ংকর এবং পিলে চমকে উঠার মতোই। একটু গভীর ভাবেই দেখলেই বুঝবেন এই শিল্পকর্ম গুলোর শিল্পের গভীরতা। তিনি যখন প্রথম এগুলো তৈরি করেন তখন তিনি অনেকটা শখের বশেই এগুলো তৈরি করেন। পরবর্তীতে যখন একজনে এসে তার এই শিল্পকর্ম গুলো প্রদশর্নীর জন্য চান, তিনি তখন এটাকে জোকস্‌ ভেবেছিলেন। সেটা ছিল ১৯৯৯ সাল।

সে থেকেই শুরু। এবার চলুন দেখে নেই সেইসব শিল্পকর্ম। Ibentina: ১৩’’X১০’’X১০’’ এই শিল্পকর্মটির নাম মায়েস্ট্রি দিয়েছেন প্রাচীন ইজিপশিয়ান একটি শিল্পকর্মের নামের উপর ভিত্তি করে। এই শিল্প সর্ম্পকের তিনি বলেন, “আমি এই নামের জন্য উপযুক্ত একটি শিল্পকর্ম তৈরি করতে চেষ্টা করছিলাম এবং এটাই সেই উপযুক্ত সেই শিল্পকর্ম”। এই শিল্পকর্মটি ২০০৮ সালে বিক্রি হয়ে যায়।

Pelt: এটা মায়েস্ট্রির প্রথম দিকের শিল্পকর্মের একটি এবং এটি তিনি তার এক বন্ধুর বিয়েতে উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন। এটি সর্ম্পকে তিনি বলেন, “এটি নিপুনতার সাথে নাড়াচাড়া করা যায়, অনেকটা কাপড়ের মতোই”। তিনি এটি ১৯৯৯ সালে এটি তৈরি করেন। Materialize: এটি ২০০৫ সালে পিটার্সবাগে একটি কারুশিল্প প্রদর্শনীর জন্য তিনি তৈরি করেন। এটি অনেকটা ঘূর্নিবর্তে পাক খেতে থাকা উদিয়মান কিছু একটা তৈরির প্রচেষ্টা হিসেবেই তিনি বর্ননা করেন।

তিনি সারা গ্রীষ্মকাল সময় নিয়ে এই শিল্পটি তৈরি করেন। Kraken: ১৪’’X১২’’X১২’’ এই শিল্পকর্মটির জন্য শিল্পীর অনুপ্রেরণা ছিল জেলিফিস, অক্টোপাস এবং সমুদ্র দানব (Sea Monster)। এটি সর্ম্পকে তিনি বলেন, “আমি আনুমানিক ২ মাস সময় নিয়ে এটি তৈরি করেছি। আমার হাত সত্যিকার অর্থেই ব্যথা হয়ে যেত এর জন্য, যদি না আমি কিছুক্ষন এর জন্য বিশ্রাম নিতাম”। এটি পরবর্তীতে মোবিলিয়া গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়।

Aurora: “আমার পায়া(Leg) এবং পাপড়ি সর্ম্পকে কিছুটা ঘোলাটে ধারনা রয়ে গেছে, এগুলো Technically অনেক ট্রিকি এবং আমি এগুলো সর্ম্পকে এখোনো বিভিন্ন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছি। “ ৭X’’১৭’’X১৭’’ এই শিল্পকর্ম সর্ম্পকে এভাবেই বলেন তিনি। “আমি চাচ্ছিলাম মধ্যভাগে ভাসমান কিছু পাপড়ি এর মত থাকবে, যারা অনেকটা সূর্যের আলোর মত চারদিক ছড়িয়ে পড়বে। ” তিনি এটি বানিয়েছিলেন ফুলার ক্রাফর্ট মিউজিয়াম এর বাস্কেট শো এর জন্য। Seethe: এটিও ফুলার ক্রাফর্ট মিউজিয়াম এর বাস্কেট শো এর জন্য আরেকটি শিল্পকর্ম ছিল।

“আমি এর নাম Seethe দিয়েছি কারন এটি আমাকে আগ্নেয়গিরি হতে লাভা বেরিয়ে আসছে এই কথাই মনে করিয়ে দেয়। ” ৯’’X১৪’’X১৩’’ এই শিল্পকর্মটি সর্ম্পকে এই কথাই বলেন তিনি। এই শিল্পকর্মটি সেখানেই বিক্রি হয়ে যায়। Nuzzle: “বিবাহিত যুগলগন আমাকে বলেন যে, এটি তাদের বিবাহ বন্ধনের পূর্বমূর্হতের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে” এই শিল্পকর্মটি সর্ম্পকে এই কথাই বলেন মায়েস্ট্রি। এটি ডিকোরডোভা মিউজিয়াম এবং স্কালপ্‌চার পার্ক এর ২০০৩ সালের বার্ষিক প্রদর্শনীর একটি অন্যতম প্রধান আকর্ষন ছিল।

মায়েস্ট্রি এ সর্ম্পকে উচ্ছসিত হয়ে বলেন যে, “এটি আমার জন্য ছিল এক উত্তেজনাকর মূর্হত্ব যখন আমি দেখলাম আমার এই সৃষ্টি ৮ ফুট উচ্চতার এক ব্যানারে, যা প্রদর্শনীর জন্য অপেক্ষা করছিল” Ursulina: ১৩.৫’’X৬’’X৭’’ এই শিল্পকর্মটির নাম মায়েস্ট্রি তার পরিচিত একটি PUG এর নামে দিয়েছিলেন। ২০০৩ সালে নির্মিত এই কর্মটি সর্ম্পকে তিনি বলেন “আমি জানি এই তার মতো হয়নি, কিন্তু এটি আমাকে তার শক্তির আর সামর্থ্যের কথাই মনে করিয়ে দেয়। ” এটি বর্তমানে অস্টিন এর ডি বারমান গ্যালারিতে রয়েছে। Threnody: ১২’’X১২’’X১২’’ এই শিল্পকর্মটির নাম মৃত্যুর সময়কালের গান অথবা প্রার্থনা এর নামের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, কারন এটি অনেকটা প্রিয়জন হারানোর অনূভুতির কথাই মনে করিয়ে দেয়। এভাবেই নিজের শিল্পকর্মের বর্ননা দিচ্ছিলেন মায়েস্ট্রি।

এটিকে অনেকেই গোরিলা, ব্যাঙ ইত্যাদি বলতে পারে। কিন্তু আমার মাথায় যা আছে, যার উপর ভিত্তি করে এটি আমি বানিয়েছি এবং তা কখনো কেউ বদলাতে পারবে না। Minx: মাঝেমধ্যে আমি কিছু হাস্যকর এবং কিউট কিছু বানাতে চাই। ৮’’X৬’’X৬’’ এই শিল্পকর্মটিই সেই ইচ্ছার প্রতিফলন। ২০০৫ সালে সর্ম্পূন এই কর্মটি বর্তমানে মোবিলিয়া গ্যালারিতে রয়েছে।

“এই শিল্পকর্মটি আমাকে কেবলই হাসায়” বলেন মায়েস্ট্রি। Silkie: ২০০৫ সালে সর্ম্পূন করা এই শিল্পকর্মটির নাম তিনি দিয়েছেন প্রাচীন কথিত গল্পের সীল এর নাম অনুসারে যারা কিনা মানুষে পরিবর্তিত হতে পারত। ১৪’’X৯’’X১৬’’ এই শিল্পকর্মটি আমার জন্য অনেক আনন্দের ব্যাপার, কারন আমি পরিবর্তিত হবার কথিত গল্পের(Mythology) অনেক বড় FAN. Terpsichore: ১৩’’X১০’’X৯’’ এই শিল্পকর্মের নামের জন্য তিনি ডিকশনারী এবং সমার্থক শব্দের বই এর উপর একটু বেশীই সময় দিয়ে ফেলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি এর নাম দিয়েছেন Terpsichore, যা গ্রীক মিথোলোজী এর নয়জন গড(GOD) বা স্পিরিট(Spirit) এর একজনের নাম, যারা কিনা শিল্প এবং শিক্ষার সৃষ্টির উপর আগ্রহ তৈরি করতেন। এ সর্ম্পকে মায়েস্ট্রি বলেন “এটি আমাকে মনে করিয়ে দেয় তিনজন নৃত্যরত বালিকার কথা, যাদের হাতে রয়েছে ফুলের তোড়া”


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.