জয় বাংলা ..... লিখা শুরু করার আগে একটা বিষয় উল্লেখ করে নেই, হেফাজতের অবরোধ শুরুর আগে একটি খবর আমার কানে এসেছিল, তা হল বাংলাদেশে গাঁজা সেবনকারীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে। একশ্রেনির ব্যাবসায়ীরা টনে টনে গাঁজা আমদানি করেও আসক্তদের চাহিদা মেটাতে রিতিমত হিমশিম খাচ্ছে। খবরে জানা যায়, ধর্মব্যাবসায়ী এবং তাদের সমর্থকরা নিয়মিত গাঁজা সেবন করে ভিবিন্ন ধরনের আকাম কুকাম করে যাচ্ছে এবং জমসমর্থন আদায়ের লক্ষে নিয়মিত গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমি সেসময় উপরোক্ত খবরকে তামাশা বলে উড়িয়ে দিলেও, সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক নেতাদের ভাষন থেকে শুরু করে ধর্মব্যাবসায়ী সমর্থকদের কাজকর্ম এবং কথাবার্তায় যেন গাঁজা সেবকের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রমাণ পাচ্ছি বারবার।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি
গত ৫ এপ্রিল হেফাজত সমর্থকরা নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচুত্য করার লক্ষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হল, ঢাকায় তাদের সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই জঙ্গীদের মত মতিঝিল থেকে পল্টন জুড়ে ভাংচুর চালাল, জনগনের সম্পদে অগিনসংযোগ করল, ককটেল বিস্ফোরন ঘটিয়ে আতংক সৃষ্ঠি করল, ইহুদি নাসারাদের মত কুরআন পুড়াল, ক্ষমতায় দখলের লোভে জামাত-শিবিরকে সাথে নিয়ে বিনা উস্কানিতে পুলিশের ওপর হামলা চালাল, পিটিয়ে পুলিশকে আহত করল, জনগনের জানমাল রক্ষার খাতিরে পুলিশ তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্ঠা করার সময় দু এক জন হেফাজতে জামাত সমর্থক আহত এবং নিহত হল।
সারাদিন তান্ডবলীলা চালানোর পর একসময় সরকারী বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিল। জঙ্গীদের উৎখাত করতে সরকার একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে আঈনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনিকে দিয়ে অপারশেন শাপলা পরিচালনা করল। আঈন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনির অভিযানের মাত্র ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই শহীদ হতে আসা মাইন্ডওয়াশড হেফাজতের জংগিরা অবস্থান ছেড়ে পালাল এবং আত্নসমর্পন করল। অভিযান পরিচালনার সময় কিছু নিরীহ হেফাজত সমর্থক মারা গেল, ভিবিন্ন গনমাধ্যমের হিসাব মতে লাশের সংখ্যা -
ইন্ডিপিন্ডেন্ট- ১৫
সিএনএন-১৪
ডেইলি স্টার-১৫
বিবিসি-১৫
আল জাজিরা-৩৬
রয়টার্স-৭ ;
সকল প্রাণহানি দুংখজনক। কিছু জ্ঞানপাপী, গৃহপালিত বুদ্ধিজীবি এবং ধর্মব্যাবসায়ীদের মিথ্যা উস্কানী অথবা কিছু মাদ্রাসা শিক্ষকের রক্তচক্ষুর কারনে, বাধ্য হয়ে দেশবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত হওয়া এসব নিরীহ হেফাজত সমর্থকদের লাশ হয়ে ঘরে ফিরতে দেখে আমারও কষ্ঠ লেগেছে।
অপারেশন শাপলা শেষ হতে না হতেই শুরু হল লাশের সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচার, ফেইসবুকে ছাগুরকেল্লা পেজ থেকে এই অভিযানকে গনহত্যা আখ্যায়িত করে ২৫০০ মানুষ নিহত হওয়ার গাঁজাখোরী খবর প্রকাশ করল, আর এই খবরের রেশ ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জামাত-শিবির সমর্থক, বিশেষ এক দলের গৃহপালিত বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে কিছু ব্লগার (!) এই অপারশেনকে গণহত্যা আখ্যায়িত করে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য প্রসব করল।
এর আগেও এই তথাকথিত গণহত্যার (গাঁজাখুরদের মতে) বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি এসেছে প্রমাণ এসছে, যারা এই ঘঠনাকে হত্যাকান্ড আখ্যায়িত করে প্রমাণ স্বরুপ ভিবিন্ন ছবি প্রকাশ করেছে তা সম্পুর্ণ মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে অনেকবার। তার পরও যারা লাশের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে এই ঘটনাকে গনহত্যা আখ্যায়িত করছে, তাদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু প্রশ্ন ;-
ধরে নিলাম মতিঝিলে সহশ্রাধিক মানুষ মারা গেছে-
এতগুলা লাশ গেল কোথায় ?
এতগুলা লাশকে কোথায় সমাহিত করা হল ?
আমারদেশ, নয়াদিগন্ত অথবা বিদেশী কোন পত্রিকা সহশ্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার খবর অথবা ছবি প্রকাশ করলনা কেন?
আপনি সহস্রাধিক মানুষ নিহত হওয়ার খবর জানাচ্ছেন, কিন্ত তাদের কোথায় সমাহিত করা হল / কিভাবে এত লোককে সমাহিত করল, তার কোন খবর / ছবি কেন প্রকাশ করছেন না কেন?
নিহতদের আত্নিয় স্বজন কই, ওরা কেন একবারও ঢাকায় এসে তাদের আত্নিয় স্বজনদের খোঁজ করলনা?
আমার দেশ, নয়াদিগন্ত ইত্যাদি পত্রিকায় সহশ্রাধিক নিহতের স্বজনদের আহাজারির কোন খবর প্রকাশ করল না অথবা তাদের পরিচয় প্রকাশ করলনা কেন ?
ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে নিহতদের স্বজনের ঠিকানাসহ ছবি প্রকাশ করেন, তাদের ঢাকায় এসে, সরকারের কাছে তাদের স্বজনদের খোঁজ চাইতে বলেন ?
হেফাজত নেতারা সহশ্রাধিক সমর্থক নিহত হওয়ার ঘঠনা নিয়ে কোন বিবৃতি প্রদান করলনা কেন?
২৫০০ লাশকে কি এত দ্রুত সরানো সম্ভব ?
এত মানুষ নিহত হল কিন্তু মতিঝিলে কোন ধরনের আলামত (রক্ত, ইত্যাদি ইত্যাদি) পাওয়া গেল না ব্যাপার কি ?
জুতা রয়ে গেল কিন্তু কোন ধরনের আলামত থাকল না, ব্যাপার কি ?
আমি জানি সহশ্রাধিক হেফাজত সমর্থক নিহত হওয়ার দাবী গাঁজাখোরী ছাড়া আর কিছুই নয়। কোন গাঁজাখোরই উপরোক্ত প্রশ্নগুলার উত্তর দিতে পারবে না। যদি সত্যি সত্যি ২৫০০ মানুষ মারা যেত, তাহলে এতদিনে দেশ জুড়ে তুলপাড় শুরু হয়ে যেত।
দেশ এবং বিদেশের ভিবিন্ন সংবাদ মাধ্যম বিভিন্ন রকম সংবাদ প্রকাশ করত, মোট কথায় এতদিনে তথ্য-প্রমাণ সহ এই ঘটনা জনসম্মুখে প্রকাশ হয়ে যেত।
অনেকে হয়ত "যাহা রটে তাহা কিছু না কিছু তো বটে" টাইপের চিন্তাভাবনা নিয়ে আমার কথাকে উড়িয়ে দিতে পারেন, তাদেরকে বলি হুমম মতিঝিলে অনেক হেফাজত সমর্থক নিহত হয়েছে, তবে নিহতের সংখ্যা চল্লিশের বেশী নয়। গনহত্যা / ২৫০০ লোক মারাগেছে যারা বলছে, তারা গঞ্জিকাশক্ত। তাদের কারনেই দেশে গাঁজার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাদের কারনেই দেশে টনে টনে গাঁজা বিক্রি হচ্ছে। দয়া করে গাঁজাখোরদের ছড়ানো গুজবে কান না দিয়ে বিবেক এবং বুদ্ধি দিয়ে ব্যাপারটা বিবেচনা করুন।
আমার উপরোক্ত পুস্ট পড়ার পর, আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে যারা মতিঝিলে সহস্রাধিক লোক মারা গেছে বলবে অথবা এই ঘটনাকে গনহত্যা আখ্যায়িত করে পিছলামি করবে, তাদেরকে কিছু বলব না শুধু বলব
দয়া করে মাদকাশক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি হউন।
মাদক ত্যাগ করুন, সুস্থ থাকুন।
ভয়ংকর রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের হোতা, হলুদ সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান এবং তার সহচরদের মুখোশ উন্মোচন ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।