জামাত-শিবির দূরে গিয়া মর! প্রথমেই বলে নেই ব্লগের কবিদের প্রতি আমার কোন শ্লেষ নেই। আর এই পোষ্টে নারী অধিকার নিয়েও গলা ফাটাচ্ছি না। এই ব্লগের এডমিন, মডারেটর, পোষ্ট সিলেক্টর প্রায় সব পদেই নারী আছেন। তাই নারী অধিকার নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। আমি কিছু বাস্তব কথা তুলে ধরছি, যা প্রায় সকলেই জানেন, কিন্তু গা সওয়া হয়ে গেছে।
সমারসেট মম বলেছেন, “The crown of Literature is poetry. It is its end and aim. It is the sublimest activity of the human mind. It is the achievement of beauty and delicacy. The writer of Prose step aside when the poet passes”.
শেষ লাইন এর মানে হলো, “একজন কবি যখন যাবেন একজন গল্পকার তার জন্য পথ ছেড়ে একপাশে দাড়াবেন”।
শেষ লাইনটা কিন্তু সেইরাম সাংঘাতিক! যেখানে সমারসেট মম কবিদের এত সম্মান দিয়েছেন, সেখানে কবিদের নিয়ে কিছু বলার জন্য বুকের পাটায় দম থাকতে হয়। তবু বলতে হয়, কারন বাংলাদেশে ইদানিং কাকের চেয়ে কবির সংখ্যা বেশী হয়ে গেছে। আপনি রাস্তায় বেরিয়ে একটা ঢিল ছুড়ে মারেন, সেটা কোন না কোন কবির মাথায় গিয়ে পড়বে। কোথায় যেন পড়েছিলাম, ঢাকায় একটা কবি সম্মেলন হয়েছিল, যেখানে পাচ হাজারেরও বেশী কবি রেজিষ্ট্রেশন করেছিলো।
আমাদের দেশের সবাই নেতা হতে চায়, তাই এদেশে আরেকজন শেরে বাংলা, সোহরাওয়ার্দী জন্মায় নি, তেমনি সবাই কবি হতে চায়, তাই আরেকজন জসিম উদ্দিন, শামসুর রহমান পাচ্ছি না।
ব্লগে কিছু কবি আছে, এরা কি লিখে কিছুই বুঝিনা, সব মাথার উপর দিয়া যায়, মাথায় ঢুকে না। এরা হয়ত কঠিন ভাষায় কবিতা লিখে ভাবে, বড় মাপের কাব্য হয়ে গেছে। আমার মতে যেই কবি তার কবিতার অর্থই সহজবোধ্য করতে পারেনা, সে কবি না। আমার হয়ত কবিতা সম্পর্কে তেমন জ্ঞান নেই, তবুও বলি, রান্না ভালো হয়েছে কি খারাপ, সেটা বোঝার জন্য শেফ হতে হয়না।
এখন আসল কথা বলি, ইদানিং ব্লগে কিছু কবিকে দেখি নারী ব্লগারদের নিয়ে প্রেমের কবিতা লিখেন। কিন্তু এই জন্য উক্ত নারী ব্লগারের পারমিশন তো নেনই না, উল্টা পোষ্টে সেই নারী ব্লগার আসার সাথে সাথে তাকে এটাক করা শুরু হয়। ছাইয়া, মাল্টি, হিটসিকার সহ অনেক ট্যাগ দেয়া হয়। আপনি আপনার টাকায় নেট চালান, ব্লগিং করেন, তাই যা খুশি লেখার অধিকার আপনার আছে, তার মানে এই না যে আপনার কবিতা অন্য কেউকে বিব্রত করবে, এই অধিকার আপনার নাই।
নারী ব্লগাররা যারা আছেন, এমন কেউকে খুজে পাওয়া যাবে না, যাকে কোন ঝামেলায় জড়ানো হয়নি. এটাক করা হয়নি।
এজন্য সামুতে বেশিরভাগ নারী ব্লগার ছদ্মনামে ব্লগিং করেন।
আশ্চর্য হই, যখন দেখিঃ
একজন নারী ব্লগার নিজের নামে নিক নিলেই সাথে সাথে কিছু উটকো পাব্লিক তাকে ছাইয়া ট্যাগ দেয়, কোন প্রমান ছাড়াই। প্রোপিকে ছেলেরা নিজের ছবি দিলে দোষ নাই, নারী ব্লগার নিজের ছবি দিলেই তাকে “হিটসিকার” ট্যাগ খেতে হয়। সারারাত জেগে ব্লগ আর ফেসবুকে থাকলেও ছেলেদের কেউ কিছু বলে না, অথচ নারী ব্লগার/ফেসবুকারকে একটু পর পর খোচাতেই থাকে, “এত রাতে অনলাইনে কেন?”
যেন অনলাইনে থাকতে তাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।
মেয়েরা সাধারনত সফট মাইন্ডের হয়, তারা মারপ্যাচ তেমন বোঝেনা।
তাদের দুনিয়াটা খুবই ছোট, তাই তাদের পোষ্টও তাদের মতই হয়। কিন্তু কোন নারী ব্লগার যখন তার অনুভুতি নিয়ে পোষ্ট লিখে সেটা হয়ে যায় “লুতুপুতু পোষ্ট”, একই পোষ্ট আমরা ছেলেরা দিলে হয় “সিরাম পোষ্ট”। পুরুষ ব্লগার নিয়মিত ব্লগিং করলে হয় “সিরিয়াস ব্লগার”, নারী ব্লগারদের বেলায় “মাল্টি/হিটসিকার”।
সত্যি বলতে কি আমি কিন্তু ব্লগে তেমন হিট কোন নারী ব্লগার দেখি না। যারা আছে তাদের সংখ্যাও পুরুষদের তুলনায় নগন্য, অথচ নারী ব্লগারদের হরহামেশাই হিটসিকার ট্যাগ খেতে হচ্ছে।
আরেক শ্রেনীর মানুষ আছে, যারা আপুনি ডেকে ডেকে বিশ্বস্ততা অর্জন করে, মোবাইল নাম্বার চায়, ব্যাক্তিগত ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করে, দেখা করতে চায়। যদি মেয়েটা রাজি না হয়, আর যাবা কই, শুরু হয় ঐ মেয়েটার উপর এটাক।
এত কিছু সহ্য করার ক্ষমতা অধিকাংশ মেয়েদেরই থাকেনা, তারা নীরবে সরে যায়, দূরে সরে যায়। আর আমরা হারাই সম্ভাবনাময় কিছু সহ ব্লগারদের।
নারী ব্লগারদের বলছি, প্লিজ কারও কথায় কান দেবেন না।
আপনারা হচ্ছেন ব্লগের শোভা। মুকুটের রত্নের মত, কেক এর উপরের চেরীর মত। ব্লগ মানেই সিরিয়াস পোষ্ট দেয়া না। আপনারা আপনাদের মত ব্লগিং করুন। আপনারা এভাবে ব্লগ ছেড়ে যাবেন না।
বিকৃত রুচি সম্পন্ন কারও জন্য আমাদের এত বড় ব্লগ পরিবার থেকে দূরে সরে যাবেন না।
সকল ট্যাগবাজদের বলছি, প্রিন্স হেক্টর কিন্তু মরে নাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।