আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এবার হিজাব নিয়ে মুখ খুললেন বিশিষ্ট আলেমে কট্টর সেক্যুলারিস্ট শাহরিয়ার কবির

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন]
বিশিষ্ট আলেমে কট্টর সেক্যুলারিস্ট শাহরিয়ার কবিরের মতে হিজাব কোন ইসলামী পোশাক নয়, এটা সৌদী আরব ইসলামী পোশাকের নামে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে পেট্রো ডলারের মাধ্যমে। মুহতারাম খুবই আফসোস করে বললেন, পঞ্চাশের দশকেই বঙ্গীয় নারীরা স্লিভলেস পোশাক পরতো আর এখন তারা হিজাবের প্রতি ঝুকে পরছে। উনি সরাসরি বললেই পারতেন যে, উনি স্লিভলেস পোশাকেই মেয়েদের দেখতে ইচ্ছুক, তাহলে হয়তোবা কর্তৃপক্ষ উনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতো।

মুহতারাম কবিরের সেই অমীয় বাণী, শুনিয়া বন্য হইবেন, তা আমি জানি পঞ্চাশ ষাটোর্ধ্ব বয়োবৃদ্ধরা যখন জ্ঞান বিতরণের নামে এই ধরণের কথা জনসম্মুখে বলে, তখন আমাদের সাবধান হওয়া ছাড়া কোন গতি নেই। আমি অনেককেই দেখছি, যারা সম্পূর্ণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে ইসলামী পোশাক পরছে। মুহতারাম কবির সাহেবের কথা শুনে মনে হয়েছে, উনার ইসলামী পোশাক সম্পর্কে বিন্দুমাত্রও ধারণা নেই। উনার মতো বিশিষ্ট আলেমে কট্টর সেক্যুলারিস্টের অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে ম্যঙ্গো পিপলদের (আমজনতা) অবস্থা তো আরো শোচনীয়। এবার সরাসরি চলে যাই পবিত্র কুরআনে।

কুরআনে আছে, মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে।

মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। ২৪ নং সূরা আন নূর, আয়াত ৩০ থেকে ৩১ উপরের আয়াত থেকে সহজেই বোঝা যাচ্ছে, শরীরের যে অংশ বিপরীত লিঙ্গের আকৃষ্টের কারণ তা আবৃত রাখতে হবে। আরো স্পষ্ট করে বলা আছে যে, বিশ্বাসী নারীরা যে মাথায় ওড়না দেয় তা অব্যাহত রাখবে এবং সেই ওড়না যেন দীর্ঘ হয় যাতে করে তা দিয়ে তাদের বক্ষদেশকেও ঢেকে রাখা যায়। এছাড়াও পবিত্র কুরআনের ৩৩ নং সূরা আল আহযাবের ৫৯ নং আয়াতে নবী পত্নী ও কন্যাদের যে উপদেশ দেয়া হয়েছে সেই একই উপদেশ দেয়া হয়ছে মুমিনদের স্ত্রীদেরকেও, হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে।

ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। আমি জানি না, উল্লেখিত কুরআনের বাণীগুলো, কখনো মুহতারাম কবির সাহেবের দৃষ্টিগোচর হয়েছে কি না! এই বাণীগুলো আরবের জনগণ সাদরে গ্রহণ করেছিল সেখানে তেলসম্পদ আবিষ্কৃত হবারও প্রায় তেরশ বছর পূর্বে। তারা ঘটিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোত্তম, সর্বোৎকৃষ্ট, সর্ববৃহৎ, দীর্ঘস্থায়ী এক মহা বিপ্লব। আমি মুহতারাম কবির সাহেবকে প্রশ্ন করি, বলতে পারেন, কোন পেট্রোডলার তাদের অনুপ্রাণিত করেছিল? আমি খুব ভালো করেই জানি এর উত্তর আপনার জানা, কিন্ত্ত আপনি উত্তর দিবেন না।

কারণ সত্য লুকানো আপনাদের অন্যতম একটি বাজে স্বভাব। আমি খুব অবাক হয়ে ভাবি, এদেশের অসংখ্য নারী যেমন ইসলামী পোশাক পরছে ঠিক তেমনি অসংখ্য নারী পাশ্চাত্য বা ভারতীয় পোশাক ও সংস্কৃতিকে হুবহু অনুসরণ করছে, অনেকে আবার পাশ্চাত্য বা ভারতীয় পোশাক ও সংস্কৃতির সাথে দেশীয় পোশাক ও সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটিয়েছে। কৈ তখনতো এরা কোন উচ্চবাচ্য করে না! প্রিয় পাঠক একটু ভাবুনতো। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে ভাবুন। আপনি যদি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে চিন্তা করেন, তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন এটা ইসলাম বিদ্বেষ ছাড়া আর কিছুই না।

মুহতারাম কবির সাহেবতো কখনো ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ করার ব্যাপারে কিছু বলেন না। অথচ ভারতীয় চ্যানেলে সম্প্রচারিত বস্তাপচা অবাস্তব কাহিণী নির্ভর সিরিয়ালগুলো ধীরে ধীরে আমাদের সমাজকে, পারিবারিক বন্ধনকে নষ্ট করে দিচ্ছে। কবির সাহেবরা এ ব্যাপারে নিশ্চুপ। কি পরিমাণ ভয়ঙ্কর ইসলাম বিদ্বেষ এরা এদের অন্তরে লালন করে! কি জঘণ্য! কবির সাহেবের মত লোকেরাই কিন্তু গলার রগ ফাটিয়ে চিৎকার করে বলে, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। তাহলে কেউ যখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে ধার্মিক হবার সিদ্ধান্ত নেয় তখন আবার কেন এরা আপত্তি তোলে? হিজাব পরিহিত নারীতে এদের আপত্তি, মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা বেড়ে গেলে এদের আপত্তি, যুবক পুরুষেরা দাড়ি রাখলে তাতেও এদের আপত্তি! এ তো বিশুদ্ধ ইসলাম বিদ্বেষ ছাড়া অন্য কিছু নয়।

ইদানীং এইসব কট্টর সেক্যুলারিস্টরা কি এক অজ্ঞাত কারণে হিজাবের পিছনেই বেশী করে লেগেছে। তাদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, এখন দেশের একমাত্র মূল সমস্যা হিজাব। এরা যখনই ইসলাম নিয়ে এ ধরণের বেফাস কথা বলে, ঠিক তখনই নৌকার তলায় একটি একটি করে ছিদ্র তৈরী হয় আর নৌকা ডুবতে শুরু করে। আফসোস নৌকার মালিক যদি তা উপলব্ধি করতে পারতো আর এইসব বিভ্রান্ত, পথভ্রষ্ট, জ্ঞানপাপীদের নৌকায় উঠতে না দিতো!
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.