কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন।
সামু কতৃক পাওয়া ইনফরমেশন থেকে জানলাম আমি ব্লগ লিখতেসি ১১ মাস ৩ সপ্তাহ হইসে। ব্যাপারটা অবশ্য সত্যি না।
আমি ব্লগ নিয়মিত লিখতেসি ৫ মাসও হয় নায়। এপ্রিল এর ৫ তারিখ দেওয়া আমার প্রথম পোস্ট হৈমন্তি ২০১০ এর আগে ৭ মাস আমি জীবনে ব্লগেও আসতাম না। একাউন্ট খোলার জন্য খোলা। আমি খালি একটা মাত্র কমেন্ট জীবনে দিসিলাম ব্লগ এ সেটাও ফেসবুক থেকে আলিম আলী রাজি আমাকে বলসিল দিতে। এখানে ৪৯ নম্বর কমেন্টটাই ছিল আমার ঐ ৭ মাসে একমাত্র সামু নিদর্শন।
ব্লগ না লেখার প্রধান কারন ছিল আমি বাংলা লিখতে পারতাম না। দুইবছর আগের কথা। রমজান মাস। রোজা রাইখা রোজা হাল্কা করার জন্য (পানাহার করে না) এক বন্ধুকে নিয়ে মার্কেট এ গেলাম। মেয়ে দেখার জন্য সব থেকে ভাল জায়গা বসুন্ধরা সিটি আর রাইফেল স্কোয়ার।
ইফতারির ঠিক আগে আগে অভ্র মেহদির সাথে দেখা। অভ্র মেহেদি এক বন্ধুর বন্ধু। সবাই আমার মত মেয়ে দেখতে মার্কেটে যায় না। কেউ কেউ কাজেও যায়। অভ্র মেহদি গিয়েছিল ক্যামেরা কিনতে বা দেখতে।
জানিয়ে রাখি (যারা জানেনা আর কি) অভ্র মেহদি এর ছবি তোলার হাতও দেখার মত। যাই হোক তখনই আমি প্রথম শুনলাম অভ্র নামক সফটওয়ার এর কথা। কারন বিজয় দিয়ে বাংলা লেখা মানে অনেকটা ক্যালকুলেটর ছাড়া অ্যাভোগেড্রো সংখ্যার অঙ্ক করা। যাই হোক মেহদির প্রতি কৃতজ্ঞতা অভ্র নামক সফটওয়ার ছিল নাইলে জীবনে ব্লগ লিখতে পারতাম না। আমার ব্যাচমেট এর একটা ছেলের এমন আবিষ্কার এ কিছুটা গর্ব অনুভব করছি।
আমার জীবনের সব থেকে স্বল্পমুল্য ইফতারী ঐদিন করেছিলাম। ৪ জন মিলে ৬ টা জিলাপী আর একটা পটেটো কেরকার্স চিপ্স। মেহদির বিনয় স্বভাবটা দারুন।
এবার আশা যাক ব্লগ লিখতে কিভাবে আসলাম। ব্লগে লেখার আগে আমি আসলে ফেসবুক এ লিখতাম।
নোট আকারে। কিন্তু সেটা ইংলিশ হরফে। এভাবে লিখতে লিখতে আমার সাধের ফেসবুক একাউন্টটাই একদিন গায়েব হয়ে গেল। পাকিস্তানিদের সাথে মারামারি করতাম তারা সবাই মিলে রিপোর্ট দিত। জাফর ইকবাল এর বিপক্ষে একটা গ্রুপ ছিল সেখানে জাফর ইকবাল এর পক্ষে কথা বলার পর আমার ফেক একাউন্ট খুলল তারা।
এরকম রিপোর্ট খাইতে খাইতে একদিন দেখি আমার ফেসবুক একাউন্ট গায়েব। আমার সব লেখা হারায় গেল। বন্ধু-বান্ধবও নাই হয়ে গেল। তারপর আবার একাউন্ট খুললাম। তখন একজন আমাকে বলল সচলায়তন এ লিখতে।
কিন্তু সমস্যা হল সেখানে প্রথম পাতায় এক্সেস পেতে অনেক সময় লাগে সামুতে নাকি ১ মাস এই দিয়ে দেয়। তখন আমার মনে পড়ল সামুতে আমার একটা একাউন্ট থাকার কথা। লগইন করে দেখি আসে আর কোন কারনে আমি অটোমেটিক নিরাপদ ব্লগার। তবে আমি এখানে কাউকেই চিনিনা। শুরু হল পথ চলা।
শুধু মাত্র একটা বিশ্বাস কে সাথে নিয়ে যে যদি আমি ভাল কিছু লিখি মানুষ পড়বে, যদি লেখার মত কিছু লিখি মানুষ পছন্দ করবে। ব্যাস শুরু হল হৈমন্তির (আমার প্রথম লেখা) হাত ধরে পথ চলা। একদিন বাসায় বসে কোন কাজ পাচ্ছিনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হৈমন্তি সামনে পেলাম। মনে হল এটাকে সাইজ করি ( বেশি বেয়াদবি হয়ে গেছে মনে হয়)।
প্যারোডি বানাই। মানুষজন পড়ল। কমেন্ট করল (কাঠঠোক্রা ছিল প্রথম কমেন্টদাতা)। এপ্রিল ৫ থেকে ২৩ অগাস্ট, ১৩৮ দিনে পোস্ট করলাম ৫৯ টা। গড়ে দুইদিন এ একটা লেখা।
লেখার গাড়িতে কোন থামাথামি নাই।
খলিল সিরিজ
ফ্যান্টাসি এর প্রতি আমার আজন্ম দূর্বলতা, আর সুপার পাওয়ারদের প্রতি। আমি সব সময় চিন্তা করতাম আমি একটা ক্যারেক্টারকে সুপার পাওয়ার দিব। কি যে দিব তা কখনও মাথায় আনতে পারিনাই। স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান, সুপারম্যান।
তারপর চিন্তা করলাম ঠিক আছে। সুপার পাওয়ার না। আমি সাধারন একটা চরিত্রই বানাব। কিন্তু তার আশেপাশের ঘটনা গুলার কোন ব্যাখ্যা থাকবেনা। খলিল হচ্ছে সেই সাধারন চরিত্র।
পৃথিবীর সব থেকে সাধারন মানুষ। কিন্তু তার আশেপাশের ঘটনাগুলা সব অসাধারন। আমরা সব সময় চাই আমাদের আশেপাশে ফ্যান্টাসি টাইপ ঘটনাগুলা ঘটুক। খলিল সেই চরিত্র। তার আজন্ম ইচ্ছা তার একজন গার্লফ্রেন্ড।
সেটার জন্য আইন্সটাইন, সেক্সপিয়ার, রবীন্দ্রনাথ, ম্যারাডোনা, আলাদিন, স্পাইডারম্যান সবাই তাকে সাহায্য করবে। খলিল সিরিজটা অনেকেই পছন্দ করেছে এটা আমার খুব ভাল লেগেছে। তবে ১২ টা লেখার পরে এখন ভাল বিপদ হইসে। কারন সবকিছুতেই সব সময় উন্নতি করা লাগে। নতুন আইডিয়া নিয়া বড়ই চিন্তিত।
ফেসবুকে খলিল সিরিজের ফ্যান পেজ আছে, ভাল লাগলে লাইক দিয়েন।
রম্যরচনা
অনেকেই আমাকে কমেন্ট করে যায়। “ আপনার রসবোধ বেশ ভাল”। সত্যি কিনা জানিনা কিন্তু শুনতে খারাপ লাগেনা। হিউমার আমার খুব পছন্দের একটা জিনিস।
মানুষ তার পছন্দের কাজটাই করবে। আমার প্রিয় টিভি সিরিয়াল হল “ফ্রেন্ডস” আর “বিগ ব্যাং থিউরি”। আমার প্রিয় হিন্দি সিনেমা “আন্দাজ আপনা আপনা”। “শ্রেক” আর “কুংফু পান্ডা” টাইপ মুভির আমি ভক্ত। আমি মানুষটাই এমন।
জগতে কিছু সিরিয়াস মানুষ থাকবে যারা তাদের সারা জীবনে সিরিয়াস এটিচিউড থেকে বের হতে পারবেনা। আমি হইলাম তাদের উলটা। তাই বলে মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধে আমার কমতি নেই। আমি কৃতজ্ঞতায় ভরপুর একটা ছেলে। মানুষের ভালবাসা পেতে সবসময় ভাল লাগে।
এটার জন্য অনেককিছু করতেই আমি রাজি আছি। শায়মা আপা তার একটা লেখায় আমাকে “অসাধারন রম্য প্রতিভা" বলেছেন। জানজাবিদ আমাকে সেভ করেছেন তার লিঙ্ক এ “রম্য সম্রাট জিকসেস”। হয়ত বা এগুলোর যোগ্য আমি নয়। কিন্তু তাদের স্নেহ তো পেয়েছি।
অবশ্যই আমি ভাগ্যবান।
সামু ব্লগ
অনেকেই আমাকে বলে সামুর আগের অবস্থা নেই। এখন ঘোরতর ক্লান্তিকাল। আজেবাজে লোক এ ভরে গেছে। আসলে একটা ব্যাপার কি, এইসব হবেই।
সবাই নাফিস ইফতেখার হবেনা। সবাই সমুদ্রকন্যা আপার মত সমুদ্রের অতলদেশ থেকে আবেগ এনে লিখবেনা। সবাই শায়মা আপার মত মাটির প্রদীপ এর দীপ শিখা আলোকিত করার জন্য আলো জালাবেনা। সবাই হামা ভাই হবেনা, যে একি সাথে বাস্তব কল্পনার অবিশ্বাস্য মিশ্রন ঘটাবে। সবাই কালপুরুষ এর মত ট্যালেন্টেড রাইটার হবেনা।
সবাই নিমার মত আকাশের কথা শুনাবেনা আরো অনেক ভাল ভাল রাইটার আছেন এখন নিউক্লিয়ার ফিজিক্স নিয়ে এতই প্রেশার এ আছি যে সব কিছু মনে আসতেসেনা।
রাজসোহান, বাবুনি সুপ্তি আর গুরুজি
তোমাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ব্লগে যখন কাউকে চিনতামনা তোমরা নিজের থেকে এসে আমাকে চিনাইসো। ব্লগে আমার সব থেকে হিট লেখা রাজসোহা"না"। এটা মোটেও সেরকম ভাল লেখা না।
এটা অনেকটা শাহরুখ খান এর সিনেমার মত। সিনেমা যাই হোক নায়কের কারনে হিট। রাজসোহান হইতেসে সামু ব্লগের শাহরুখ খান।
আরো অনেকেই আছে যাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এখন নাম মনে আসতেসেনা মানে এটা না যে তাদের কথা আমি ভুলে গেছি।
অগ্নিলা, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
বড় বিলাই আপাকে অনেক ধন্যবাদ। একেবারে গোড়া থেকে সবসময় যাই লিখি তাই পড়েন উনি।
সবাইকে ধন্যবাদ।
আমি শুধু রম্য লিখি কথাটা ঠিক না।
আমার খুব সিরিয়াস কিছু লেখাও আছে। ছবি ব্লগ আছে। কেউ কেউ কোন কারন ছাড়া আমাকে মাইনাস দিয়ে যায়। এটা নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না। মাইনাস দিতে টাকা লাগেনা, মাইনাস খাইলেও টাকা যায় না।
আর রাস্তায় হাটতে গেলে যেমন কাঁদা লাগে, ব্লগের রাস্তায় হাটতে গেলেও মাইনাস খাওয়া লাগবেই।
লেখাটা যুতসই হইল না আসলে। আমার ২৮ তারিখ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স পরীক্ষা, কখন ১ বছরের পোস্ট দিব তাই ভাবতে ভাবতে লিখেই ফেললাম। নিউক্লিয়ার ফিজিক্স এর মত এইরকম বেতাল জিনিষ জীবনে আগে পড়িনাই। একটা ছোট উদাহরন দেই যাতে সবাই বুঝে।
ফিজিক্স এর ইকোয়েশনগুলার একটার সাথে আরেকটা মিল থাকবে। এইখানে একটা ডেরিভিশনের প্রথম লাইন যদি হয় “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম”। পরের লাইন হয়, “ ঐ দেখা যায় তালগাছ”। এই পর্যন্ত পড়ার পর সামনে আগাইলে ৩ নম্বর লাইন হবে “ মাইয়াটারে পাইলাম না” । তাইলে কি যে করমু।
ব্লগ যারা পড়েন তাদের পছন্দের ভিত্তিতে আমার সেরা ৫ টা লেখার লিঙ্ক দিলাম। এখানে হৈমন্তি নাই কারন তখন কেউ চিনতনা। কিন্তু আমার নিজের লেখা গল্পের মধ্যে সব থেকে বেশি পছন্দ হৈমন্তি ২০১০ আর খলিল সিরিজ -৩
Zics and Physics are not made for each other (VIVA part)
FAN IS MORTAL !!!
বেকায়দা (রম্য)
বিরল প্রতিভার অবসান। (রম্য আত্মকথন)
ডানা ক্ষয়ে যাওয়া প্রজাপতির গল্প।
সামুতে জনপ্রিয়তা নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না।
তবে মানুষের মন জয় করার চেস্টার চারিত্রিক দূর্বলতা আমার আছে।
আমার কোন আচরনে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন। এই জিনিষটা আমি একদম সহ্য করতে পারিনা যে কেউ আমার কারনে কষ্ট পাক। কিন্তু অনেক সময়ই ভুল হয়ে যায়।
সবাইকে ধন্যবাদ।
যে মাইনাস দিবে তাকেও ধন্যবাদ। আর হা নিউক্লিয়ার ফিজিক্স পরীক্ষার জন্য দোয়াপ্রার্থী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।