আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঐশীদের আড্ডায়ঃ ২

হালার এতো ক্ষিদা লাগে ক্যা, ক্ষিদার জ্বালায় মনে কয় পাথর চাবাইয়া খাই...
"জেনারেশন গ্যাপ" কথাটি আমরা প্রায়শই বলে থাকি৷ কিন্তু একটি প্রজন্ম থেকে অন্য একটি প্রজন্মের যে রূপান্তর, রুপান্তরিত সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা খুব একটা ভাবিনা৷ উপরন্ত আমাদের চিন্তা চেতনা পরবর্তী প্রজন্মের উপর চাপিয়ে দেই৷ আমাদের চিন্তা চেতনা ওদের উপর চাপিয়ে দিতে গিয়ে আমাদের ভালো লাগা, মন্দ লাগাও ওদেরকে কার্বন কপি করতে বলি৷ তাতে হয় কি ওরা নিজেরা নিজেদের মত করে স্বপ্ন দেখতে ভুলে যায়, ওরা আমাদের চাহিদার গিনিপিক হয়ে বেড়ে উঠে৷ আমি ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবি এবং পরবর্তী জেনারেশনের চিন্তা চেতনা, স্বপ্নগুলো জানতে সবসময়ই ওদের সাথে আন্তরিক হওয়ার চেষ্টা করি৷ ওদের মনের কথাগুলো নিজের সাথে মিলিয়ে দেখতে চাই৷ ওদের অবস্থানে থেকে আমার ছেলেবেলা কিশোরবেলার সাথে মিলিয়ে দেখি৷ বুঝতে চাই আমার চিন্তা চেতনায় কতটুকু পরিবর্তন ঘটেছে৷ পরিবর্তন ঘটে থাকলে এই পরিবর্তন কতটুকু যুক্তিযুক্ত এবং গ্রহণযোগ্য৷ এই যে এই মেয়েটি আমার সামনে অতি সাবলীল ভঙ্গিতে নিজেকে বর্ণনা করছে, এজন্য ওর মধ্যে আদর্শের উদাহরণের অভাব আছে বলেই আমার মনেহয়৷ আমি ওর দিকে তাকিয়ে বারবার চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছি আর সেটা সে বুঝতে পেরে, তার গ্ল্যামার্সের চিকেন ফিলেট বারবার আমাকে দেখানোর চেষ্টা করছে৷ এই সকল ক্ষেত্রে একজন অপ্রাপ্ত্য বয়স্কা মেয়ে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ দ্বারা ব্যবহৃত ও প্রতারিত হয়ে বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা হারায়, আমি এই মেয়েটির মাঝেও তাই দেখতে পাচ্ছি৷ ওর মাঝে আমি অসংখ্য হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে দেখতে পাচ্ছি৷ যদিও ওরা জীবনের রঙিন সোপানে ভাসতে ভাসতে ইউরোপ আমেরিকা অথবা অস্ট্রেলিয়াতে পৌছে কিন্তু সেখানেও ওরা সুন্দর জীবনে সেটেল্ড হতে পারেনা৷ স্থান পরিবর্তন করলেও রগরগে গ্ল্যামারস আর রঙিন নেশার মরণ ছোবল থেকে নিজেকে আর বের করে আনতে পারেনা৷ ওরা জানেনা বেলাল্লাপনা আর নেশাগ্রস্থদের পৃথিবীর কোন সমাজেই স্থান হয়না৷ তাই ধীরে ধীরে ওরা দুগন্ধ সামাজিক কীটে পরিনত হয়ে অন্ধকার জীবনে ঠাই করে নেই৷ অনেকক্ষণ মেয়েটির দিকে তাকাতেই পারছিলামনা৷ ওর দিকে তাকাতেই মিটিমিটি হেসে বলল, কি ভাবছেন? আমি বললাম, ভাবছি তোমার ডিজে পার্টিগুলো কোথায় কোথায় হয়৷ আর সেখানে আমি কতটা মানানসই হব সেটাও ভাবছি৷ সে আবার বলল, এইজ ডাজনট আ ম্যাটার; আর আমাদের ডিজে পার্টির নিদৃষ্ট কোন ঠিকানা নেই৷ এখনতো যে কোন হোটেলেই ডিজে পার্টি হয়, এটা ওপেন সিক্রেট৷ আমি ভ্রু কুচকে বললাম, তুমি হোটেলে যাও? ঠোটের কোনে রহস্যময়ী হাসি ঢেকে কিছু একটা বলতে যাবে এমন সময় বড় মেয়েটি বলে উঠলো, তুই বেশি বকিস৷ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল, না ভাইয়া এই বিচ্ছুটা একটু বেশি কথা বলে৷ করিম ভাই স্বভাবগত কোন কথায় বলছেন না৷ হঠাতই যেন বলে উঠলেন, এবার আসল কথা বলা যাক৷ অনেকক্ষণ কথোপকথনে হয়ত ওদের আসল বিজিনেসে বেঘাত ঘটছে, তাই আমি উঠতে চাইলাম৷ দাড়িয়ে বললাম, আপনারা কথা বলেন আমি একটু বইমেলায় যাব৷ একুশের বইমেলা চলছে, প্রচন্ড ভিড়ের কারণে বইমেলায় এখনো যাওয়া হয়নি৷ বইমেলার কথা উঠতেই মেয়েটি লাফ দিয়ে উঠে বলল, আই লাভ বইমেলা৷ আমি বললাম, এত ভিড়ের মধ্যে তুমি বইমেলায় যাও? আমার মুখ থেকে কথাটা কেড়ে নিয়ে বড় মেয়েটি বলল, মাই গস! ভিড়ের মোধ্যেইতো বইমেলার মজা৷ আমি বললাম, কিছু ইডিয়টসের জন্য এতো ভিড়ের মধ্যে মেয়েদেরতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়৷ দুজনেই বলে উঠলো মোটেই না, উই লাভ দৌজ ইডিয়টস৷ আমি বললাম, কেমন? বড় মেয়েটি বলল, ইফ দৌজ ইডিয়টস নেভার টাচ আছ্, হুয়াট দ্যা পয়েন্ট গোয়িং দেয়ার৷ এবার সত্যি সত্যি নিজেকে সংযত করতে পারলাম না৷ জিজ্ঞেস করলাম, তোমার বাবারা কি করেন? ওদের বাবাদের পরিচয় পেয়ে ওদের সমস্যাগুলো কোথায় তা আমার বুঝতে অসুবিধা হলোনা৷ বর্তমান জেনারেশনের ছেলেমেয়েদের চরিত্রগত অথবা আদর্শগত স্খলনের কারণগুলো যাইহোক, পিতামাতার অসততা যে তারমধ্যে অন্যতম তা নিশ্চিত করেই বলা যায়৷ -চলবে
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।