সজলের বাংলা ব্লগ।
৫/১০/২০১১
-----------------------------------------------------
ঘড়িতে তখন প্রায় ৪ টা বাজে। আমার তখনো কোন ভাল ট্রেকিং করার ব্যাকপ্যাক ছিলনা। যেটা নিয়ে ট্রেকিং , সাইকেলিং করতাম সেটা অন্য একজন ধার হিসেবে নিয়ে গেছে। কাপড়ের একটা স্কুলব্যাগে স্লিপিং ব্যাগ , কিছু শুকনো খাবার , কাপড় , চার্জ লাইট নিয়ে নিলাম।
এক হাতে টেন্ট আর অন্য হাতে লাইফ জেকেট। জাফর ভাইয়ের এপার্টমেন্টে বসে আছি,আর বার বার ঘড়ি দেখতেছি। কারণ আমার হিসাব মতে আমরা অনেক দেরি করে ফেলতেছি। এখান থেকে আমাদের কক্সবাজারের বাস ধরতে হবে। উনার মধ্যে তাড়াহুড়া দেখলামনা।
যেন কাল কোন ট্রিপই নেই। উনি ঘুমাচ্ছিলেন। আমি যাওয়ার পর আস্তে আস্তে রিডি হতে লাগলেন। আমার যখন বের হলাম অন্ধকার হয়ে আসছে প্রায়। উনি একটা দোকানে ঢুকলেন তিন চার পেকেট সিগারেট,একটা টয়লেট টিশু আরো কত কি কিনতে লাগলেন।
আমি বাইরে অপেক্ষা করতে লাগলাম। উনি যখন বের হলেন আমি ভাবলাম যাক এখন মনে হয় যাত্রা শুরু। কিন্তু উনি তো উনি। টুপ করে শপিং এর পেছনের সেলুনের ভেতরে ঢুকে গেল। শেভ করবেন।
আমি তখন চরম বিরক্ত। শেষ মেষ একটা রিক্মা নিয়ে আমরা বহদ্দারহাট বাস স্টেন্ড থেকে এস আলম বাসের টিকিট কেটে রওনা দিলাম। গন্তব্য কক্সবাজার । পরেরদিন “ট্রাভেলারর্স আব বাংলাদেশ” নামে একটা গ্রুপের সাথে সোনাদিয়া দ্বীপে গিয়ে তাবুতে থাকার প্লান। এই গ্রুপের সাথে আমার প্রথম ট্রিপ হবে এটা।
আমরা লোহাগাড়ায় নাম্তা সারলাম। এরপর কোনসময় কক্সবাজার পোছালাম টেরই পেলামনা। আমাদের রাতে কক্সবাজার থাকার প্লান। যেহেতু “ট্রাভেলারর্স আব বাংলাদেশ” টিম ঢাকা থেকে অলরেডি রওনা দিয়েছে এবং ভোরে এখানেই নামবে। আমি আর জাফর ভাই হেটে হেটে হোটেল খুজতে লাগলাম।
হোটেল রেন্ট নিয়ে একটু টেনসেনে ছিলাম। একতো রাত তার উপর টুরিস্ট সজিন শুরু হচ্ছে। রাস্তার পাশে ‘নোয়াখালী হোটেল” নামে একটা সাইনবোর্ড দেখে থমকে দাড়ালাম। রুম রেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করতেই বলল ২৫০ টাকা লাগবে। আমরা তো ওবাক।
এত্ত কম!! জাফর ভাই ফাজলেমো করে জিগ্যাসা করলো আর কম হবে কিনা ? লোকটা ২০০ করে দিল রেন্ট। .. একটা নরমাল হোটেলে রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে কক্সবাজারে আমার সবচেয়ে কম দামে ভাড়া নেওয়া রুমে গেলাম ঘুমাতে। আমাকে কানের উপর বালিশ চাপা দিয়ে ঘুমাতে হলো কারণ জাফর বেগ সাহবে তার বান্ধবীর সাথে আনেক রাত পর্যন্ত ফোনে কথা বলেই চললো।
[ নোট:- চট্রগ্রাম থেকে প্রতি ১০-১৫ মিনিট পরপরই বাস পাওয়া যায় কক্সবাজার পর্যন্ত। ভাড়া ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা।
নতুন ব্রিজ বা বহদ্দারহাট থেকে বাস পাবেন। এস আলম , শ্যামলী , শ্যামলী মা সহ নানান বাস। কক্সবাজারে হোটেলের অভাব নেই। ভাড়া কমের হোটেল চাইলে কলাতলি রোড বা বিচ সংলগ্ন হোটেল না দেখে একটু ভেতরে দেখতে পারেন। ]
৬/১০/২০১১
------------------------------------------------------
সকালে ভোরে উঠে আমরা গেলাম “ফিশারী ঘাটে”।
সকাল বেলা সব মাছের ট্রলার সারা রাত মাছ ধরে ফেরত আসতে শুরু করছে। মাছে মাছে পুরা ঘাট ভরপুর। অদ্ভুত অদ্ভুত অনেক মাছ দেখলাম। মানতে লজ্জা নেই ওখানে দেখা ১০০ প্রকারের মাছের মধ্যে ৯০ প্রকারের মাছই আমি চিনিনা বা নাম জানিনা। কিছু মাছের ছবি দিলাম নিচে।
ছবি:- নাম না জানা কিছু মাছ।
ছবি:- স্থানীয় ভাষায় মনে হয় "গুইল্লা" মাছ।
ছবি:- ছোট কিন্তু সুন্দর সুন্দর মাছ।
ছবি:- স্টিং রে।
আমাদের এখানে আসার উদ্দেশ্য ছিল মাছ দেখা আর আগামী দুই দিনের জন্য মাছ কেনা।
সোনাদীয়া দ্বীপেতো ঘুরলেই হবেনা খেতেতো হবে। জাফর ভাই ফোনে রাব্বি ভাই থেকে জিগ্যাসা করে একটা বড় কোরাল মাছ ,আর বেশ কিছু বড় চিংড়ী বরফ সমেত প্যাকেটকরলো। এ কাজে আমি দুরেই ছিলাম। মাছের গন্ধ আমার নাকে সয়না।
এরপর আমরা জামাল হোটেলে বাস ভর্তি ভ্রমণ গ্রুপের অপেক্ষা করতে লাগলাম।
৮:৩০ এর দিকে রাব্বি ভাইদের গ্রুপ এলো। সবাই নাস্তা সারলো। কেউ কেউ বাজার করলো। এরপর রিক্সা করে আমরা ঘাটে গেলাম। জাফর ভাইর আগে থেকে ঠিক করা ট্রলারে করে আমাদের সমুদ্র যাত্রা শুরু হলো।
উদ্দেশ্য মহেশখালীর পাশ ঘেসে সোনাদীয়া দ্বীপে যাওয়া
ছবি:- ট্রলারে সব তোলা হলো। ট্রাভেলারর্স গুলানকেও ।
প্রথমে ট্রলার যাত্রাটা মজারই লাগতেছিল। সবার সাথে পরিচিত হচ্ছিলাম। জাফর ভাই এক ভাইরে কইলো এ হলো ‘সজল’ উনি সাথে সাথে হাত মেলাতে মেলাতে বলল আমি “কাউয়া” ।
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম “কি?” উনি বলল “আমাকে সবাই কাউয়া নামেই চেনে। ( পরে জানতে পারলাম উনার ফেসবুক আইডি “জিনিয়াস ক্রো বা চাতুর কাউয়া” আমি আর কথা বাড়ালামনা,বোটের একপাশে গিয়ে উচু একটা স্থানে বসলাম। জাফর ভাই বলল তুমি কোথাই বসছ জানো ? ওটা মাঝিরা টয়লেট হিসাবে ব্যাবহার করে। আমি নিচে তাকিয়ে দেখি ফাকা একটা গর্ত দিয়ে সমুদ্রের পানি দেখা যাচ্ছে। বুঝলাম কথা সত্য।
তাড়া তাড়ি নেমে বসলাম। প্রচন্ড রোদে একটু পরেই ভাজি হতে লাগলাম। গরমে তরতর করে ঘাম পরতেছিল। আর বোট যখন মোহনা হয়ে সমুদ্রে পড়লো বোট একবার উপরে উঠে দুপ করে আবার সমুদ্রে পড়ে। সে এক মহা অবস্থা।
অন্য কোন সাধারণ পাবলিক হলে হইতো ভয় পায়তো কিন্তু এখানে সবাই এডভেন্চার পাগল লোক জন। বোট উপরে উঠলে সবাই একসাথে “ওওওও” করে চিৎকার করে উঠে আবার নামার সময় একরকম চিৎকার করে। মজা হচ্ছিল খুব।
ছবি:- সমুদ্রে ট্রলারের নাচানাচি চলছে।
জাফর ভাই আর আমি নাস্তা করিনি সকালে তাড়াহুড়ায়।
রাব্বি ভাই পেকেট করে নিয়ে ছিল সেটা। খেয়ে নিলাম।
ছবি:- বেগ সাহেব নাস্তা করছেন।
এরপর ছবি তোলায় মন দিলাম। গভীর সমুদ্র দিয়ে বেশ কিছুক্ষন বোট চলল।
কিন্তু পানির তুলনায় আকাশটায় বেশি নীল ছিল।
ছবি:- সমুদ্রের তুলনায় আকাশ বেশি নীল।
একসময় আমরা সোনাদীয়া দ্বীপের একটা বালুর চর/সৈকত দেখলাম। আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর চর/ বিচ ওটা। মাঝি বলল এটাই নাকি পুর্ব পাড়া।
(পরে জাফর ভাই বলল আমাদের মাঝি ভুল পথে ঢুকাই আমরা এইদিকে চলে এসেছিলাম। দলের আর কেউ জানতোনা। জাফর ভাই মাঝির সাথে কথা বলে এর সমাধান করেছিল। )
ছবি:- বালির সৈকত বা বিচ।
ছবি:- ফটোগ্রাফি চলছে।
আমরা পশ্চিম পাড়া যাবো তাই এটাকে পাশ কাটিয়ে মহেশখালি – সোনাদীয়া কেনেলে ঢুকলাম। জায়গাটা দেখতে একটা বিশাল খালের মত। খুবই সুন্দর। মনে হচ্ছে যেন অন্য কোন ভুবনে চলে এসেছি। একসময় আমরা ঘটি ভাংগা চলে আসলাম।
সোনাদীয়া আর মহেসখালীর মধ্যে রাস্তার যোগাযোগ ব্যাবস্থা চালু করার জন্য একটা ব্রিজ হচ্ছে আমরা ব্রিজের তলা দিয়ে সুরুত করে অন্য পাসে চলে এলাম।
ছবি :- এই সেই ব্রিজ।
ছবি:- সবাই ছাতা হাতে খাল পাড় করতেছে। যা রোদ। কিন্তু প্রকৃতি অপরুপ।
ছবি:- দি ব্লাক পার্ল ঢুকতেছে সোনাদীয়া খাল দিয়ে। ক্রু সমেত।
খালটা আসোলেই খুব সুন্দর। চারদিক নিরব । শুধু আমাদের কথা বার্তা আর ডিএসএলআর ক্যামেরা গুলার কঠর কঠর শব্দ।
বোটের ইনজিন বন্ধ ছিল তখন। আমরা যখন একেবারে দ্বীপের নামার স্থানে পোছে গেসিলাম তখনি বোট একটা ডুবো চরে আটকে গেল। মাঝি বলল এখন ভাটার সময় বোট আর যাবেনা। জোয়ার আসলেই এ বোট আর এগুবে। আমরা সবাই খালে নেমে গেলাম।
পানি কোমর পানি থেকেও কম। বোট আনেক ঠেলে ঠুলে দেখলাম এগুইনা। তাই প্লান ঠিক হলো ব্যাগ গুলা ছোট ডিংগি নৌকা করে দ্বীপ পর্যন্ত নেওয়া হবে। আর সবাই খালটা সাবধানে পার হবে হেটে হেটে। আমি বললাম মেয়েরা চাইলে নৌকা করে পার হতে পারে।
মেহেরুন আপা আমারে দিল এক ধমক। বলল মেয়েরা খালের মধ্যে দিয়ে হেটে হেটে গেলে সমস্যা কি? আমি আর কিছু বললামনা , উনিই ঠিক ছিল। ছেলেরা পারলে মেয়েরা নয় কেন ? আমিও আসলো ও ভাবে মিন করে কথাটি বলিনি।
এদিকে রাব্বি ভাই দেখি দুইটা লাইফ জেকেটের একটা স্বাভাবিক ভাবে পরে অন্য টা পায়ের নিছে দিয়ে দিয়ে পরে মাথার উপর ছাতা ধরে ভাসতেছে। উনাকে দেখতে পুরা বাচ্চা বাচ্চা লাগতেছিল যেন অনকে বছর পর নানু বাড়িতে এসে পুকুর দেখছে।
ছবি:- শুভ্র ভাই পানিতে নামার আগে।
আমি আমার ব্যাগ সমেত কোমর পানির মধ্যে দিয়ে দ্বীপের দিকে এগুলাম। একটা দল আগেই রওনা হয়ে গেছে। আমি জাফর ভাই থেকে বিদায় নিয়ে এগুলাম। উনি নাকি দ্বীপে নামবেন না।
আজই চট্রগ্রাম ফিরবেন।
ছবি:- অপরুপ একটা গ্রাম। সোনাদিয়া নেমেই প্রথমে আপনার চোখে পড়বে এই ঘর বাড়ী গুলা।
আমরা দ্বীপে নামতেই বাচ্চা কাচ্চারা ঝাকে ঝাকে ঘিরে ধরলো। অবাক চোখ চেয়ে রইলো।
প্রথমে ব্যাগ গুলা দ্বীপের একটা প্রায় পরিত্যক্ত একটা স্কুল ঘরে রাখা হলো। তার পর দিলাম ছুট বালুর সৈকতের দিকে। চলতে থাকলো পানিতে দপা দপি। এই সৈকতের ঢেউ গুলা যেমনে বড় বড় তমনি দ্রুত একটার পর একটা আসতেই থাকে। কক্সবাজারের সৈকত থেকে সম্পুর্ণ আলাদা।
অন্য কোন টুরিস্ট নেই। নেই কোন মানুষও শুধু আমরা। শুভ্র ভাইকে দেখলাম লাইফ জেকেট পড়েই গোসোল করতেছে। আর কাউয়া একটু দুরেই বালুর বিচে বসে আছে। অনেক্ষন নোনা পানিতে গোসোল করার পর আমরা আবার ওই ছোট্ট গ্রামটাই ফেরত আসলাম।
টিউবওয়েলের নিচে গোসোল করে জামা কাপড় পরিবর্তন করে নিলাম। দুর থেকে দেখলাম জাফর ভাই ফেরত আসতেছে। উনার বোট ডুবো চরে আটকে গেছে , তাই ফেরত এসেছেন। আমি এদিক সেদিক ঘুরে দ্বীপটা দেখতে লাগলাম।
ছবি:- পুরা দ্বীপে মহিষে ভরতি।
আর ঠিক পেছনেই দেখা যাচ্ছে একটা রংধনু।
ছবি:- খালের উপর একটা বোট দেখে চালানোর চেস্টা আমার।
হটাত একটা রংধনু পুর্ণ ভাবে দেখা দিল আকাশে। সবাই আমরা বসে বসে প্রকৃতির এই হটাত সৃষ্টি দেখতে লাগলাম।
ছবি:- রংধনু ।
সোনাদিয়া দ্বীপের উপর দিয়ে।
ছবি:- এক চিলতে ঝাউবন।
সন্ধ্যা হতেই সবার মাথাই আসলো যে আমরা সকালের নাস্তার পর এখন পর্যন্ত কোন খাবার খাইনি। তাই দ্রুত দেখা হলো কি ব্যাবস্থা হচ্ছে। যেহেতু এই দ্বীপে কোন খাবার হোটেল বা থাকার হোটেল নেই তাই স্থানীয় একজন আমাদের আনা বাজার সদাই দিয়ে আমাদের রান্না করে দিল।
ভাত , ঝোল আর কোরাল মাছ। দ্বীপে কোন কারেন্টের লাইন নেই। তাই ঘুটঘুটে অন্ধকারে আমরা কেউ হেড ল্যাম্প বা কেউ চার্জ লাইটের আলোই খেয়ে নিলাম। খাবার থেকে সবার খাওয়ার স্টাইল মজার ছিল। যেমন আমি স্কুল ঘরের বারান্দায় বসে খাচ্ছিলাম।
কে যেন উঠানে বসে খাচ্ছিল। প্রথমে সে তার হেডল্যাম্প এর আলোয় এক নাল খাবার মুখে দিয়ে সেটা চিবোতে চিবোতে পাশের জনের থালার দিকে তাকিয়ে থাকতো যাতে সে তার হেডল্যাম্প এর আলোয় খেতে পারে। এভাবেই হলো আমাদের ওই দিনের মত খাওয়া দাওয়া। এরপর আমরা কিছুক্ষন উঠানে বসে আড্ডা আর পরিচয় দেওয়া নেওয়া হলো। আনেকটা স্কুলে ক্লাসরুমে যেমন নতুন স্টুডেন্টরা করে।
ছবি:- দ্বীপের ছোট্ট একটা ঝাউবন। এর উপর দিয়ে সুর্য মামা ঘরে যাচ্ছে।
এখন ঘুমাতে যাওয়ার পালা। ক্যাম্প এর জন্য তাবু ফেলানোর পালা। রাতে ঘুম ভালো হলোনা প্রচন্ড গরমে।
স্লিপিং ব্যাগটা শুধু শুধুই আনলাম। রাতে জাফর ভাই সমেত পাশের একটা জায়গায় গেলাম হেডল্যাম্পের আলোয়। সেখানে ঢাকা থেকে আসা কিছু বড় আপু আর ভাইয়ারা তাবুতে ছিল। তারাও সেটিনই দ্বীপে এসেছে। তারা ঠিক কোথাই ক্যাম্প করছে জানতামনা।
লাইটের সিগনাল দিয়ে দিয়ে খুজে বের করলাম। খুকু আপা , ফেরদোস ভাইয়া , মুন্না ভাইয়া এরা ছিল। খুকু (খুকু মন মাধুকরী ফেবু আইডি উনার ) আপাকে আগে চিনতাম ফেসবুকের কারণে।
ছবি:- একটুস খানি ক্যাম্প ফায়ার।
৭/১০/২০১১
--------------------------------------------------------
সকালে রোদের গরমে ঘুম ভেঙ্গে গেল।
মোবাইলটা নিয়ে বের হলাম। খুব ভোর তখন। সবাই ঘুম। কিছু ছবি তুললাম।
ছবি:- গুড মরনিং।
ছবি:- আমাদের ক্যাম্প সাইট।
ছবি:- লাল / গোলাপি তাবুটা আমার আর জাফর ভাইয়ের।
ছবি:- ভোরের আলোয় সৈকত।
ছবি:- সৈকতের পাশেই বালুর ঢিবি।
ছবি:- পুরা ক্যাম্প সাইট।
ওইযে মেহেরুন আপা তাবুর বাইরে ঘুমাইতেছে।
ছবি:- গরুরা বের হয়ে গেল তাদের কাজে।
পুরা দ্বীপের এ অংশ ঘুরে খুকু আপার মুরগী মাংস আর সাদা ভাত আমি , কাউয়া আর এক ভাই মিলে কারা কারি করে খেয়ে নিলাম। এপর ট্রাভেলার্স আব বাংলাদেশ গ্রুপ থেকে বিদায় নিয়ে খুকু আপাদের টিমের সাথে সার্ভিস বোটে করে সোজা রওনা দিলাম মহেষখালীর ঘটি ভাংগা ঘাটে। টিওবি টিম আরো একরাত থাকবে দ্বীপে।
ঘটি ভাংগা থেকে মহেষ খালির আদিনাথ মন্দীর দেখে কক্সসবাজার হয়ে যার যার বাসায়।
ছবি:- আদিনাথ মন্দিরের উপরে।
এর মধ্যে খুকু আপার টিম আমাদের আবার ফ্রিতে একটা সেইরকম দুপুরের খাবার খাওয়ালো।
[ নোট:- সোনাদিয়া ৩ ভাবে যাওয়া যায়। ১/ কক্সবাজারের কাস্তুরি ঘাট বা ৬ নং ঘাট থেকে মাছ ধরার ট্রলার ভাড়া নিয়ে সোজা সোনাদিয়া দ্বীপ।
২ থেকে ২.৫ ঘন্টা লাগবে ২/ স্পিড বোটে ২০ মিনিটও লাগবেনা কক্সসবাজার থেকে। ৩/ কক্সবাজার থেকে ট্রলার বা স্পিড বোটে করে সোজা মহেষখালি চলে আসুন এরপর অটো / বেবি ট্যাক্সি করে “ঘটি ভাঙ্গা” ঘাটে চলে আসুন। এরপর ব্রিজ দিয়ে পার হয়ে ট্রেকিং বা হাটতে পারেন। অনেক পথ। আর নই একটা সার্ভিস ট্রলারে করে সোনাদিয়া চলে যান।
২০-৩০ মিনিট ও লাগবেনা।
মনে রাখবেন দ্বীপে কোন থাকার হোটেল নেই। খাবার ও ভাল কোন স্থান নেই। সব নিজেকেই ব্যাবস্থা করতে হবে।
ময়লা বা প্লাস্টিকের কিছু দ্বীপে ফেলে আসবেননা।
এ দ্বীপে এখন মৈসুমে সামুদ্রিক কচ্ছপেরা ডিম দেয়। ওই সময় টা যেনে নিন। আর ওই সময়ে দ্বীপে না যাওয়াই ভাল। বেচারাদের বিরক্ত করা হবে।
"ইউথ ফর চেন্জ' এবং "এডভেন্চার ক্লাব আব চিটাগাং " একটা স্কুল খুলেছে কিছু দিন আগে।
দ্বীপে মনে হয় ওটাই একমাত্র স্কুল। ভাল লাগলে ঘুরে দেখতে পারেন। কিছু সাহায্য ও করতে পারেন এ দুই সংগঠনকে, যেন তারা আরো কাজ করে যেতে পারে এ দ্বীপের বাচ্চাদের জন্য। ]
কোন প্রশ্ন থাকলে আমার ফেসবুকে নক করুন। আর আমার এর আগের পোস্ট সেন্টমার্টিন এ ক্যাম্পিং এ ব্লগটা না পড়ে থাকলে পড়ে দেখতে পারেন।
পড়তে এখানে Click এখানে Click করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।