বাধা পেলেই সৃষ্টি হয় গণজোয়ার।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী মোড়ে নির্মিত হাঙর ভাস্কর্য ‘জ’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যটন শহর হিসেবে কক্সবাজারের সৌন্দর্যবর্ধন, জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও পর্যটকদের আরও বেশি আকৃষ্ট করতে শহরের প্রবেশমুখে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী পরিবেশবান্ধব চারটি প্রজাতির হাঙ্গরের প্রতিকৃতি দিয়ে ভাস্কর্যটি গড়ে তোলা হয়। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক গিয়াস উদ্দিন আহমদ ও ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার গতকাল বিকালে ভাস্কর্যটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন।
সড়কপথে কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখে কলাতলী মোড়ে ভাস্কর্যটি পর্যটকদের প্রথম নজরে পড়বে। কক্সবাজার সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির উদ্যোগে ভাস্কর্যটি নির্মাণে অর্থায়ন করেছে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড। ফাইবার গ্লাস দিয়ে তৈরি ‘জ’ বা ‘চোয়াল’ নামের এই ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। বিকাল সাড়ে ৪টায় ফিতা কেটে ভাস্কর্যটি উন্মুক্ত করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক গিয়াস উদ্দিন, ঢাকা ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছাড়াও ব্যাংকের একাধিক পরিচালক ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে পর্যটন হোটেল শৈবালে ‘মিট দ্য প্রেসে’ ভাস্কর্যের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
মিট দ্য প্রেসে জানানো হয়, পুরো ভাস্কর্যটির প্রাথমিক ধারণা, ডিজাইন, নকশা ও নির্মাণ কাজে নেতৃত্ব দেন ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) পরিবেশ ও পর্যটন বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপক ও জীববিজ্ঞানী রাগিব উদ্দিন আহমদ। ভাস্কর দলের অপর সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের
সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রবিউল আলম, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের (ইউডিএ) সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও রূপান্তরের (ক্রিয়েটিভ ডিজাইন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার) পরিচালক নূরুল ইসলাম প্রীতম। তাদের সহকারী হিসেবে ছিলেন ঢাকার ফ্যান্টাসি কিংডমের ভাস্কর্য সংরক্ষণ বিষয়ক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ও ভাস্কর্য শিল্পী মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, ‘কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির আগ্রহে কলাতলী মোড়ে প্রথম এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে।
ভাস্কর্যটির মূল ডিজাইনার রাগিব উদ্দিন আহমদই বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী পরিবেশবান্ধব ৪ প্রজাতির হাঙরের প্রতিকৃতি দিয়ে ‘জ’ ভাস্কর্যটির ডিজাইন করেছেন। বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী হাঙরের মধ্যে বিপন্নপ্রায় ৪টি প্রজাতি বড় হাঙর, বাঘা হাঙর, হাতুড়ি মাথা হাঙর ও চিতা হাঙর। এ চারটি প্রজাতির প্রতিকৃতিই এ ভাস্কর্যে স্থান পেয়েছে। ’
ভাস্কর্য শিল্পী মোহাম্মদ রবিউল আলম জানান, ভাস্কর্যটির ভিত্তি গড়ে তোলা হয়েছে রড, সিমেন্ট ও কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে। একটি প্রবালের ওপর চারটি হাঙরের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
তিনি জানান, ‘রেজিন ফাইবার গ্লাস দিয়ে ভাস্কর্যটির উপরিভাগ ও চারটি হাঙর তৈরি করা হয়েছে। যা লবণাক্ত আবহাওয়াতেও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। ’ ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ভাস্কর্যটি নির্মাণ শুরু করেন তারা। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
আরেক ভাস্কর্য শিল্পী নূরুল ইসলাম প্রীতম বলেন, ‘ভাস্কর্যটির মূল প্রতিকৃতি হাঙর হলেও তার ভিত্তিতে শামুক-ঝিনুকের প্রতিকৃতিও রাখা হয়েছে।
কয়েকটি প্রবাল প্রতিকৃতির ওপর শামুক, ঝিনুক ও হাঙরের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। ’
তিনি বলেন, সমুদ্র সৈকতের বিচ পার্ক এলাকায় আরও একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। ওই ভাস্কর্যটি হবে সবচেয়ে বড়। এতে বঙ্গোপসাগরে বিচরণকারী সব প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর প্রতিকৃতি স্থান পাবে। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।