আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ছাতা বিলাস

আমার আছে জল
খুব ছোট বেলা থেকেই ছাতার জন্য তীব্র আকর্ষণ বোধ করতাম। যেখানে আমার মত শিশুরা পুতুল খেলনার জন্য বড়দের কাছে বায়না ধরত সেখানে আমি মামাদের কাছে বিদেশে চিঠি লিখতামঃ মামা, ঢাকায় খুব বৃষ্টি হচ্ছে আসার সময় আমার জন্য ছাতা নিয়ে আসবে। এসব বোকামীর কথা মনে হলে আজও লজ্জা পাই। বৃষ্টির সাথে ছাতার একটা সম্পর্ক ছিল তাই হয়ত ছাতা আমার এত প্রিয় ছিল। ছাতার প্রতি আকুল আকর্ষনের অন্যতম কারন ছিল, প্রায় প্রতিদিনই একটা করে ছাতা হাড়াতাম।

এমন কোন দিনের কথা মনে পড়েনা যেদিন স্কুলে ছাতা নিয়ে গিয়ে সেটা ফেরত এনেছি। মায়ের কাছে সেজন্য ধোলাই ও কম খাইনি। একবার স্কুল খেকে যথারিতী ছাতা ছাড়া বাসায় ফিরেছি আর মা আমাকে আবার স্কুলে ফেরত পাঠালেন স্কুল খেকে ছাতা খুঁজে আনার জন্য। স্কুলে গিয়ে তন্য তন্য করে খুজে যখন কেথাও পেলাম না তখন একদিকে হাড়ানো ছাতার ক্ষোভ অন্য দিকে মায়ের ধোলাই এর আতঙ্ক । কতদিন যে কাাঁদতে কাঁদতে বাসায় ফিরেছি।

আবার ও মার বকুনি এবং নতুন একটি ছাতা। প্রায়ই আমার ছাতা গুলো ঘুরে ফিরে একই রকম হত। নতুন ছাতা পেয়ে মাকে বোকার মত প্রশ্ন করতাম ”আম্মু আমার না এইরকম একটা ছাতা ছিল?” মার নিরুত্তাপ উত্তর ” কেন দোকানে একই ডিজাইনের ছাতা নেই?” এভাবে ঘুরে ফিরে একই ডিজাইনের ছাতা হাতে এসে পড়ত আর আমি খুব অবাক হতাম। বোকা ছিলাম বলে বুঝিনি। আসল ব্যাপার হলঃ মা স্কুলের এক আয় কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন স্কুল ছটির পর আমার ছাতা সংগ্রহ করে রাখার সেই সাথে কিছু টিপস।

মা সপ্তাহ অন্তর ছাতাগুলো সংগ্রহ করে আনত। আর কইয়ের তেলে কই ভাজত। মাকে আজও সেই কথা বল্লে বলে ওটা নাকি এক ধরনের শাস্তি ছিল। আমার ভুলো মনকে সার্প করার একটা প্রকৃয়া। তখন খুব মনে হত মায়েরা এত নিষ্ঠুর কেন? কিন্তু আজ বুঝি তখনকার বাবা মায়েরা যেভাবে ছেলে মেয়েদের শাসন করতেন সেটা তাদের জন্য খুব দরকার ছিল।

কলেজে ওঠার পরও ছাতা হাড়ানোর কর্মকান্ড চলছিল। মা একদিন বিরক্ত কয়ে রেইন কোট কিনে দিলেন। কিন্তু তাতে ব্যাগ ভিজে যেত তাই আবারও ছাতা। তবে ছাতা হাড়ানোর মাঝেও একটা অনন্দ ছিল তা এখন টের পাই। এখন আর ছাতা ব্যবহার করা হয়না তবে এখনও যখনি কাউকে সুন্দর ছাতা নিয়ে যেতে দেখি তখন মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকি আর মনে মনে বলি ” আহারে ছাতা..”
 



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।