গোলাম কিবরিয়া পিনুর কবিতা
উপমহাদেশ
প্রতিবেশী দগ্ধ হয় - কুশল জিজ্ঞাসা করতে পারি না কেন?
শুভচেতনার মধ্যে আমরা কি আছি?
কল্যাণকামনা করি রাষ্ট্র কিংবা রাষ্ট্রপ্রধানের
কিন্তু মানুষের হিতৈষণা চাই না!
আমরা ধর্মভেদে ভাগ হই
আমরা বর্ণভেদে ভাগ হই
আমরা জাতিভেদে ভাগ হই
আমরা গোত্রভেদে ভাগ হই
কুলপ্রধানরা ভুলে কোন উপকূলে নিয়ে যায়?
আবেগ উসকে দিয়ে ফ্যাসাদ-বিরোধ বাড়িয়ে বাড়িয়ে
গোলযোগপূর্ণ এলাকায়
অপাপবিদ্ধ শিশুর রক্তে কাদের মাদকতা বাড়ায়।
সাহেবসুবো-আমিরওমরাহ-অভিজাতলোকেরা
কখনো রক্ত দেয় না,
রক্ত দেয় গা ঘষাঘষি করে যারা বাঁচে
সহাবস্থানের ভেতর বিরহবেদনার মধ্যে যারা বাঁচে।
বিভেদকামী শক্তির ভেদজ্ঞান নিয়ে প্রভেদ শেখার পর
পর হয়ে অহিনকুল সম্পর্ক নিয়ে
একই গাছের ছায়ায় বড় হয়ে ওঠা বন্ধুকেও হত্যা করে
ক্রোধ ও হিংসার মধ্যে বীরত্ব খুঁজতে গিয়ে
একে অপরের বিপন্নতা বেড়ে যায়।
শাসক ও কায়েমি স্বার্থের তথাকথিত রাজনীতিকেরা
মসনদের লোভে, রাজবাড়ির লোভে
মানুষের গভীর মানবিকতা হিমাঙ্কের নিচে নামিয়ে এনে
যুদ্ধের মৌসুম টেনে আনে।
উত্তপ্ত সীমান্ত মানুষের মধ্যে আরো সীমান্তের জন্ম দেয়
কেউ দরজার কড়া নাড়লে - বেল টিপলে
দরজা খুলতে পারে না।
মর্মস্পর্শী বেদনায় বেদনায় আজ
বানরের লেজটা লজ্জায় খসে যায়, আর মানুষের লেজটা গজায়
সেই লেজ আগুন ছড়ায়,
সক্রিয় শত্রুতা ছারখার করে দেয় ভিটেমাটি-ঘরবাড়ি।
বিপদবিহ্বল হয়ে বারবার বিপর্যস্ত হয়ে
আরো হিমেল বাতাস-শৈত্যের মধ্যে পড়ে গিয়ে
কার কতটুকু হয় লাভ?
যুদ্ধ কতটুকু সর্বগ্রাসী হতে পারে তা পিঁপড়েও জানে।
যুদ্ধবাজরা বাজপড়া আশঙ্কায় অন্যদের ঠেলে দিয়ে
জঙ্গলের রাজত্বে মখমল পেয়ে নাচে
আর অন্যদিকে প্রতিমুহূর্তে শান্তির মুখে ফোস্কা পড়তে থাকে।
মানবকুল নদীকূল নিয়ে বেঁচে থাকার বদলে
বেঁচে থাকে কোন মর্মজ্ঞানে?
যুদ্ধশাসিত দগ্ধ ভাগ্য বারবার প্রতারিত করে
গানবোট টেনে নিয়ে যায় কোনখানে?
কতোকাল জীবন হারাবে সাধারণ মানুষেরা সংঘর্ষে
এখানে-উপমহাদেশে-ভারতবর্ষে!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।