আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোবট গবেষণায় চুয়েট



চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে রোবট নিয়ে গবেষণার অন্যতম তীর্থস্থান বলা হয়ে থাকে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে রোবটিক গবেষণাকে এগিয়ে নিতে নিরলস কাজ করে চলেছে একদল স্বপ্নবাজ তরম্নণ। এরই মধ্যে অনেক সাফল্য এসে ধরা দিয়েছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই উদ্ভাবন করেছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। উদ্ভাবিত রোবট চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবট ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক গবেষণাকারী ছাত্র সংগঠন 'অ্যাসরো' তৈরি করছে উদ্ধারকারী সিরিজ রোবট।

রোবটটির কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে গবেষকরা বলেন, এ রোবটটি গৃহে আগুন লাগলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উদ্ধার কাজ শুরম্ন করবে এবং সতর্ক সঙ্কেত দিবে। আগুন হতে উদ্ধার করার জন্য রোবটে একটি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক মডিউল ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে আলোচিত সিএনসি (CNC) মেশিন বা কম্পিউটারাইজড নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল হচ্ছে একটি মেশিনকে কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা। একজন মানুষের ক্লানত্মি আসতে পারে এবং ভুল করতে পারে কিন্তু কম্পিউটার বিনা ক্লানত্মিতে কাজ করতে পারে। সফটওয়্যার দিয়ে কম্পিউটার নির্দেশের মাধ্যমে কোন যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করাই সিএনসির কাজ।

সিএনসিকে পেটেন্ট হিসেবে তৈরি করা যন্ত্র কমপেস্নঙ্ ফিগার (Complex Figure) কে ড্র (Deaw) করতে পারে এবং কাট (Cut) করতে পারে। এছাড়াও জটিল বস্তু কাটার জন্য সিএনসি রাউটার সম্প্রতি উদ্ভাবন করেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিয়ান। রোবট গবেষণায় অগ্রগতি বাংলাদেশে মূলত ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে মেনিপুলেটর বা রোবটিক আর্ম হিসেবে ক্রেন ও এই ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে, সেজন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট নিয়ে গবেষণার সুযোগই বেশি। এখনও পর্যনত্ম সরকারী পর্যায়ে রোবট নিয়ে গবেষণার ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

তবে বেসরকারীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রোবট গবেষণা চলছে। ইতোমধ্যে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু রোবটিক আর্ম তৈরিও করেছে। রোবটিক আর্ম মূলত দুই ধরনের। একটি মাইক্রোকন্ট্রোলারভিত্তিক ও অপরটি কম্পিউটারভিত্তিক। কম্পিউটারাইজড রোবট বেশি ব্যবহৃত হয় ইন্ডাস্ট্রিতে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবটের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন রোবট নিয়েও চুয়েটে গবেষণা চলছে। এছাড়াও সিঙ্ ডিগ্রী অব ফ্রিডম (Six digree of freedom) রোবট শিক্ষার্থীরা তাদের প্রজেক্ট হিসেবে প্রস্তুত করেছে। রোবট গবেষণার প্রয়োজনীয়তা রোবট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ও দৈনন্দিন জীবনে এর প্রভাবের কথা উলেস্নখ করে চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পক্ষে অটোমেশন তখনই পরিপূর্ণ হবে যখন রোবটের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেমন: পোর্ট, হাইওয়েতে রোবট ব্যবহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা দ্রম্নত বাসত্মবায়ন সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, ইন্ডাস্ট্রি ম্যানেজমেন্টে রোবট ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

রোবট ব্যবহারে মালপত্র লোডিং-আনলোডিংসহ সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির ডিজাইন থেকে শুরম্ন করে যে কোন ধরনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্টের ডিজাইন সহজে করা যায়। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ও সূক্ষ্ম কাজ থাকে যা সাধারণ মানুষের পক্ষে করা খুবই কঠিন। রোবট অত্যনত্ম বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যে, ক্লানত্মিহীন ও নিরবচ্ছিন্নভাবে সূক্ষ্ম ও স্পর্শকাতর কাজ করতে পারে। ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত রোবট অন্য অনেক টেকনোলজির মতো রোবটের ক্ষতিকর প্রভাব কি হতে পারে সে বিষয়ে ইঙ্গিত করে ড. তাজুল ইসলাম বলেন, রোবটের কিছু নীতি আছে যেগুলো 'রোবট ল' (Robot Law) নামে পরিচিত। যেখানে বলা আছে, রোবট কখনও মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে না এবং এটা মানুষের সব নির্দেশনা মেনে চলবে।

অর্থাৎ মানুষ যদি নিজে রোবটকে ক্ষতিকর কোন কাজে নিয়োগ না করে তবে রোবট নিজে থেকে মানুষের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু করতে পারবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।