আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোবট! রোবট!! রোবট!!! পতঙ্গ রোবট…

গত কিছুদিন আগে জিরো টু ইনফিনিটিতে একটা আর্টিকেল পড়লাম। আর্টিকেলটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। তাই আজ আমি আপনাদের সাথে সেটা শেয়ার করলাম।
প্রকৃতির মাঝে কত রকমের সৃষ্টিই না আছে, তাদের খুব সামান্য একটা অংশই মানুষ পোষ মানাতে পারে। পোষ মানালেও আবার তাদের দিয়ে মনমত কাজ করিয়ে নেয়া যায় না।

কেমনই না হতো যদি পিপড়াদের মত ছোট প্রাণীদের পোষ মানানো যেত! হয়তো বাস্তবে এই প্রাণীদের এমনটা করা যাবে না কিন্তু তাই বলে বিজ্ঞানীরা বসে নেই। তারা সেই পোকা-পতঙ্গের মতো করে রোবট বানিয়ে যাচ্ছে। মানুষ যেখানে যেতে পারে না, ছোট বা সংকুচিত স্থান হবার কারণে যাওয়া সম্ভবও নয় সেখানে এদের দিয়ে কাজ করানো যাবে মনমত। এমনই কয়েকটি পতঙ্গ রোবট নিয়া আজকের আয়োজন।
1. রোবট মৌমাছি

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এই রোবট-মৌমাছি তৈরি করেন।

এটি নিজে নিজেই উড়তে পারে। এর পাখার নিচে থাকে তার কন্ট্রোল প্যানেল, যার দ্বারা তাকে নিয়ন্ত্রণ ও নির্দেশনা দেয়া হয়। এর পাখা প্রতি সেকেন্ডে ১২০ বার ওঠানামা করাতে পারে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহজে উড়ে যাবার জন্য, আগুন লেগে তৈরি দুর্ঘটনায়, এমনকি ফুলের পরাগায়নে এদের কাজে লাগানো যাবে। এগুলো কেমন ছোট তা একটি উদাহরণে বুঝা যাবে, এদের এক হাজারটা যদি একত্রে নেয়া হয় তবে তাদের ওজন হবে আধা-কেজির মত!
2. রোবট পিপড়া

১৯৯০ সালেই পিপড়া রোবট বানানোর পরিকল্পনা শুরু হয়।

পিপড়া রোবট বানানোর চিন্তা-ভাবনা করেন ম্যাসাচুসেট ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির একজন ছাত্র জেমস ম্যাকলারকিন। এদের ভিতরে ছোট কম্পিউটার ছিল, ছিল আলোক সংকেত চিহ্নিত করার সেন্সর। মোটর ছিল দুটি, একটি একটির সাহায্যে চলাচল করত আরেকটি ব্যবহার করত দাঁত (ম্যান্ডিবল) নাড়াচাড়া করার কাজে। লম্বায় মাত্র ১ ইঞ্চি। লুকিয়ে রাখা, হারিয়ে যাওয়া কোনো বস্তু খুঁজে পেতে, সরু সুরঙ্গের ভেতর থেকে কোনো তথ্য বা ভিডিও করে আনতে কাজে লাগে।

তাছাড়া এর আধুনিক সংস্করণও তৈরি করা হচ্ছে। তাতে সুবিধা বাড়ছে আরও অনেক, দাম পড়ছে কম।
3. ড্রাগন ফ্লাই

জর্জিয়া টেকের এক গবেষক দল ড্রাগন-ফ্লাই নামক এই রোবটটি তৈরি করেন যার চার কোণায় চারটি পাখা। চার পাখার হলেও আকারে তেমন বড় না, যে কারো হাতের তালুতেই সহজে জায়গা করে নিতে পারবে এই পতঙ্গ-রোবট। বিমান বা হেলিকপ্টারের মতো করে উড়তে পারে এটি।

যেখানে মানুষ যেতে পারে না বা গেলে কৌশলগত কারণে কিছু সমস্যা হয় এরকম যেকোনো নিষিদ্ধ বা গোপন জায়গা থেকে খুব সহজেই তথ্য পৌঁছে দিতে পারে। করতে পারে ভিডিও। এমনভাবে উড়ে যে কেউ দেখলে সত্যিকারের পোকা বলে মনে করবে।
4. রোবট তেলাপোকা

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ২০০৯ সালে এই রোবট তেলাপোকাকে তৈরি করেন। তারা ক্ষুদ্র রোবট বানানোর ক্ষেত্রে ছয় পায়ের রোবট কেমন হবে, কেমন কাজ করবে এমন ধারণা থেকে এই ছয় পা ওয়ালা তেলাপোকা রোবট তৈরি করেন।

এই রোবট বানাতে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে কার্ডবোর্ড আর এর দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার। ১০ সেন্টিমিটার হলেও এর চলাচলের গতিতে কোনো বাঁধা দেয় না। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিন মিটার যেতে পারে। এটিই এমন দ্রুত গতির রোবট যা ১ সেকেন্ডে তার দেহের দৈর্ঘ্যের ২৬ গুন দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।
5. হেক্টর

এটিও ছয় পা ওয়ালা এক রোবট।

তবে একে তেলাপোকা থেকেও একটু টেকসই করে গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু এক দিক থেকে সুবিধা বেশি পেলে অন্য দিক দিয়ে কমে যায়। এরও হলো তাই, এটি তেলাপোকার মত এত উন্নত না। তবে এটি বৈজ্ঞানিক নানা গবেষণার কাজে লাগানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। যে কাজগুলো দেখতে ছোটখাট কিন্তু মানুষ সেগুলো করতে পারে না সেই কাজগুলো করবে এই হেক্টর।


6. চতুর্মুখি কপ্টার

এটি হাঁটতে, দৌড়াতে ও উড়তে পারে বলেই এর এই নাম 'চতুর্মুখি কপ্টার'. কার্বন ফাইবারের ফ্রেমে তৈরি এই রোবটে আছে ৬টি ঘূর্ণায়মান অংশ, যেগুলো তার ভারসাম্য রক্ষা করে ও চলতে সাহায্য করে। এর উদ্ভাবক মেড ল্যাব ইন্ডাস্ট্রিজের একজন সদস্য। তারা নিছক মজা করার জন্য এই অদ্ভুত রোবট তৈরি করেছিল। এই রোবটটি যেভাবে চলাচল করে যে, দেখলে যে কেউই বলবে এটা ভবিষ্যতের একটা মডেল হতে পারে।
7. রোবট উইপোকা

আসবাবপত্র কাঠ কুরকুর করে খেয়ে ফেলা পোকাকে বেছে নেয়া হয়েছে রোবট বানানোর মডেল হিসেবে।

হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই কৃত্রিম উইপোকা তৈরি করেন। তাদের দলে প্রধান ছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞানী রাধিকা নাগপাল, সাথে ছিল তার সহকর্মীরা। এই রোবট উইপোকারা ক্ষুদ্র স্থাপনা তৈরি করতে পারে। কয়েকটি ইট সাজিয়ে সাজিয়ে এরা সিঁড়ি বানাতে পারে। পথে উঁচু কোনো বাঁধা পড়লে নিজে নিজেই ইট বিছিয়ে উঁচু হয়ে পার হয়ে যেতে পারে বাঁধা।

ভবিষ্যতে নির্মাণ কাজে, নির্মাণ কাজের সাহায্যে তাদের ব্যাবহার করা যেতে পারে।
8. ছোট তেলাপোকা

এরা দেখতে তেলাপোকার মতই, তবে আকৃতিতে একটু ছোট। আগে উল্লেখ করা তেলাপোকারা তাদের কাজে অনেক সচল, কিন্তু এরা না। তবে এদের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এরা কয়েকটি মিলে খুব সুন্দর ভাবে একসাথে মিলতে পারে। এতে করে মনে হয় যেন তারা একেবারেই আসল কোনো তেলাপোকা।

এদেরকে সেই আগের তেলাপোকার সাথে ব্যবহার করা যেতে পারে, সহজে মানুষের চোখকে ফাঁকি দেয়া যাবে।
9. রোবট প্রজাপতি

জাপানি গবেষকদের দ্বারা তৈরি হয়েছে এই রোবট প্রজাপতি। প্রকৃতির প্রজাপতি যেমন অনিন্দ্য সুন্দর হয় হয়তো তেমন সুন্দর এটা না কিন্তু তবেও এটা খুব কাজের। আঁকার আকৃতিতে আসল প্রজাপতির মতই। একে চালাতে বাইরে থেকে নজরদারি লাগে না।

সামনে কোনো বাঁধা থাকলে এটি নিজে নিজেই তা অতিক্রম করে যেতে পারে।
10. গোয়েন্দা প্রজাপতি রোবট
ইজরাইলের বিজ্ঞানীরা এমন এক প্রজাপতি রোবট তৈরি করেছেন যেটা পুরোদস্তর গোয়েন্দার কাজ করতে পারবে। এর ওজন মাত্র ২০ গ্রাম। দালান ভবনের ভিতরে থাকা কোনো কিছুর তথ্য উদ্ঘাটন ও সংগ্রহের জন্য একে উপযুক্ত করে বানানো হয়েছে। এই ক্ষুদ্র জিনিসের মাঝেও এর সাথে খুবই ক্ষুদ্রাকৃতির ক্যামেরা ও মেমোরি কার্ডও দিয়ে দেয়া হয়েছে।

এই রোবটটির সাথে একটি হেলমেটের সম্পর্ক আছে। যখন কেউ এই হেলমেটি মাথায় পড়বে তখন এই রোবটটি যা দেখে/ক্যামেরায় ওঠে) অনেক অনেক মাইল দূরে থেকে হেলমেট পরিহিত লোকও তাই দেখতে পাবে।
ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।  

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।