তর্কের খাতির তর্ক নয় আর....
সরকারের দলীয় আদর্শের সঙ্গে মিল রেখে মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার সচিবদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে সচিবদের পক্ষ থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বাড়ানোর বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরা হলেও এ বিষয়ে কোনো আশ্বাস দেননি প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া রমজানে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাজারে মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে সজাগ থাকতে সচিবদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুচক্রিমহল কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে যাতে বাজার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
রোববার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে সচিবদের সাথে এ বৈঠক শুরু হয় দুপুর ১২টায়। বৈঠক শেষ হয় বিকেল সোয়া তিনটায়।
সোয়া তিন ঘন্টা স্থায়ী এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের কাজের সঙ্গে আমাদের দলীয় আদর্শের মিল থাকতে হবে। তিনি সচিবদের উদ্দেশ্যে বলেন, দল কীভাবে চলে আপনারা তা জানেন না। আমাদের দলের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা রয়েছে, বিভিন্ন কমিটি রয়েছে, বিভিন্ন কমিটির নেতা-কর্মীরা রয়েছেন, তাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে।
তারা সভা-সেমিনার করেন। বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের দশ বছর মেয়াদি আর্থিক পরিকল্পনা রয়েছে। সেটার ভিত্তিতে সরকার চলছে কি না তা মূল্যায়ন করতে হবে। আর সেজন্য দলীয় আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে সকলকে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আব্দুল আজিজের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বৈঠক শুরু হয়। এর পর সচিবরা তাদের মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। পরে তিনি তার দীর্ঘ বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তার উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বক্তব্য রাখেন এবং শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আব্দুল আজিজ সমাপনী বক্তব্য দিয়ে বৈঠক শেষ করেন।
বৈঠকে সবচেয়ে সময় ধরে আলোচনা হয় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বৃদ্ধি। সচিবরা তাদের বক্তব্যে এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। স্বাগত বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, তাদের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বয়স বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিক-নির্দেশনা চান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম তার বক্তব্যে এ প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিয়ে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়ানো যেতে পারে এবং পর্যায়ক্রমে তা ৬০ বছরে উন্নীত করা যেতে পারে।
এতে বেকার তরুণদের কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে জনপ্রশাসনে কর্মকর্তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং জবাবদিহীতা বৃদ্ধির জন্য সিভিল সার্ভিস এ্যাক্ট বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন। ১৩৩টি অনুচ্ছেদের এ সিভিল সার্ভিস এ্যাক্ট বাস্তবায়িত হলে কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনপ্রশাসনে জবাবদিহিতা বাড়বে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক মান উন্নয়নের জন্য পারফরমেন্স বেইসড সিস্টেম ব্যাপক হারে চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটি কর্মকর্তাদের মান উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।
সরকারি চাকরির বয়স বাড়ানো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বয়স বাড়ানোর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটো দিকই রয়েছে। বয়স বাড়ানো হলে আমরা সিনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারব অন্যদিকে, এর ফলে বেকার তরুণদের কর্মসংস্থানের পথ রুদ্ধ হবে। এর ফলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির বয়স বৃদ্ধির পথ বন্ধ হয়ে গেল।
সূত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।