আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহানবীর মহাকাশ ভ্রমন

হট নিউজ

নবীজীবনের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মি'রাজের সময় পরম প্রভুর সাথে তাঁর সাক্ষাৎ পর্বে নামাযের পরিমাণসহ তৎকালীন ও অনাগত দিনের মনুষ্য সমাজের জন্যে আল্লাহতায়ালা তাঁর হাবীবকে বিশেষ বিশেষ সামাজিক বিধান প্রদান করেন। মি'রাজ উত্তরকালে মদীনাকেন্দ্রিক একটি পূর্ণাঙ্গ কল্যাণ রাষ্ট্র, তার প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামো ঐ বিধানসমূহের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হয়। সূরা বনী ইসরাঈলে বর্ণিত এ চৌদ্দটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতির গুরুত্ব সর্বকালের সর্বযুগের জন্যে সমভাবে প্রযোজ্য। যাঁর মাধ্যমে নবুওত ধারার পরিসমাপ্তি ঘটবে, তাঁর দ্বারা যেমন গোটা মানব জাতির পূর্ণাঙ্গ বিধান প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত হওয়াই স্বাভাবিক, তেমনি এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব অর্পণকালে দায়িত্বদাতা কর্তৃক মানবজাতির এ মহান নেতাকে তাঁর কাছে ডেকে নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়াটাই যুক্তিযুক্ত। বড় রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান তাঁর রাষ্ট্রীয়গুরুত্বপূর্ণ কোনো নির্দেশ প্রদানকালে সেখানে টেলিফোনে কথা না বলে আঞ্চলিক শাসনকর্তাকে কাছে ডেকে নিয়েই কথা বলেন, তাকে নির্দেশ প্রদান করেন ও আদিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব বুঝিয়ে দেন! শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট নির্দেশনাটির গুরুত্বের প্রেক্ষিতে এর প্রয়োগের দ্বারা জাতির কল্যাণ ও এর প্রতি উপেক্ষা অবজ্ঞার ফলে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে কি কি খারাপ প্রতিক্রিয়া হবে, সে সম্পর্কেও আভাস দিয়ে থাকেন।

তাই উক্ত বিধানটির প্রচারের গুরুত্ব, তার অনুসরণে সুযোগ-সুবিধা ও অমান্যকারীদের কি কি মারাত্মক শাস্তি হতে পারে, সে সম্পর্কেও দায়িত্ব-দাতা সুপ্রীম অথরিটি তাগিদ-তাম্বি করে থাকেন। মহাপ্রভুর সান্নিধ্য লাভের শুভলগ্নে আল্লাহর শেষ নবীকে আল্লাহতায়ালা এজন্যেই তাঁর বিধানের অনুসারী ও অস্বীকারকারীদের পরিণতিসমূহ প্রত্যক্ষভাবে দেখিয়েছিলেন। বেহেশত ও দোজখ আল্লাহর রসূল সরাসরি দেখেছেন। কোন পাপকর্মের শাস্তি, কোন পুণ্যের কি পুরস্কার তাকে তা দেখানো হয়। মি'রাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রসঙ্গে: প্রত্যেক নবী-রসূলের জীবনেই কিছু কিছু মু'জিযা বা অলৌকিক ঘটনা থাকে।

শেষ নবী (সাঃ)-এর জীবনের মু'জিযাসমূহের মধ্যে মি'রাজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মু'জিযা বললেও যথেষ্ট নয়। কাজেই মি'রাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজতে যাওয়া একটি অবান্তর চিন্তা। মি'রাজ নবী-জীবনের এমন একটি ঘটনা, যার সাথে রয়েছে ঈমানের গভীরতম সম্পর্ক। এ সম্পর্কের কারণেই এ ঘটনা শোনা মাত্র কোন কোন সাহাবী কিছুটা ইতস্তত করতে থাকলেও হযরত আবুবকর (রাঃ) নির্দ্বিধায় বলে উঠলেন: আল্লাহর রসূল যদি একথা বলে থাকেন, তাহলে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বস্তুত ঈমানের এই কামালিয়াতের পরিচয় দিতে পেরেছিলেন বলেই তিনি ‘সিদ্দীক-ই-আকবর' রূপে চিরদিন অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেনও।

যুক্তি কোনদিনই ঈমানের ভিত্তি নয়- ঈমানই হচ্ছে যুক্তির ভিত্তি। বরং যুক্তির ক্ষমতা যেখানে শেষ ঈমানের যাত্রা সেখান থেকেই শুরু। তারপরও কোন কোন মহৎ ব্যক্তির এ ব্যাপারে যুক্তির অবতারণা সেটা শুধু ঈমানের স্বাদ অনুভব করার জন্যই। যেমন আল্লাহ কর্তৃক মৃতকে জীবিত করার ব্যাপারে হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর পূর্ণ ঈমান থাকা সত্ত্বেও নিজের স্পৃহা দমন ও মনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের উদ্দেশ্যে তার বাস্তব দৃশ্য দেখার জন্যে তিনি আল্লাহর কাছে আবদার করেছিলেন। আর আল্লাহও তাঁর সেই আবদার পূরণ করেছিলেন।

মি'রাজের ব্যাপারে মনের এরূপ স্বাভাবিক জিজ্ঞাসা ও তার সম্ভাব্যতার বাস্তবরূপ সম্পর্কে মনের সান্ত্বনা লাভের ইচ্ছা জাগতে পারে যে, জীবদেহ কি করে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করতে পারে? আজকের এই বৈজ্ঞানিক যুগে যেখানে মানুষ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্তর অতিক্রম করে একাধিকবার বিভিন্ন গ্রহণ ঘুরে আসে, সেখানে খোদ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্রষ্টার নির্দেশে তাঁরই বিশেষ মহান অতিথি শেষনবীর জন্য তিনি কি সেই ব্যবস্থা করবেন না? হযরত ইবরাহীম (আঃ)-কে সম্রাট নমরূদ কর্তৃক যেই অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, ইবরাহীম (আঃ)-কে সম্রাট নমরূদ কর্তৃক যেই অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, সেই আগুনের দাহন শক্তি হরণ করে ইবরাহীম নবীকে যিনি রক্ষা করেছিলেন, তিনিই মহানবীর জন্যে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির স্তর ভেদ করার ব্যবস্থা করেছিলেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.