আর কেন সম্মেহন-এ পাপ, থাক- ‘বেদনা আমারি থাক’
অত্যাচার আর নির্যাতনে প্রাণ ওষ্ঠাগত ইয়েমেনের নারীদের। তাদের রক্ষার জন্য আইন থাকলেও নেই এর যথাযথ প্রয়োগ। আর তাই প্রতিনিয়ত নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের করাল স্রোতে ভেসে যাচ্ছে দেশটির নারীরা। ঐতিহ্যবাহী মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকেরই বয়স ১৫ বছরের নিচে এবং শিশুর সংখ্যা প্রায় এক কোটি। আর্থিক অভাব-অনটনের কারণে দেশটির অনেক ছেলেশিশুই স্কুলে যেতে পারে না, আর মেয়েদের কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
বেঁচে থাকার জন্য বাবা-মায়ের সঙ্গে তাদেরও কাজ করতে হয়। হাজার বছরের পুরনো ইতিহাসসমৃদ্ধ রাজধানী সানায় ইট-পাথরে তৈরি ৯০০ বছরের পুরনো অনেক ভবন রয়েছে। চারতলা থেকে শুরু করে ১০তলা এ ভবনগুলোয় বাস করে এমন অনেক শিশুই শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত শুধু আর্থিক অনটনের কারণে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও সরকার এখন পানি আর তেল নিয়েই ভাবছে। ফলে নারী ও শিশুদের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে তাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই।
কিন্তু ১৯৯৪ সালের ইয়েমেনের শাসনতন্ত্রে বলা আছে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের কথা। ২০০০ সালে নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, দেশটির ৫০ ভাগ নারীই পারিবারিক নির্যাতনের শিকার এবং বিয়ের পর যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ২০ ভাগ নারী। নারীদের জন্য ইয়েমেনে ১৯৯৬ সালে ন্যাশনাল উইমেন্স কমিটি গঠিত হয় এবং ২০০১ সালে ড. ওয়াহিবা ফারাহকে দেশটির মানবাধিকার মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়। ২০০৩ সালে ন্যাশনাল উইমেন্স কমিটিকে মন্ত্রণালয়ে রূপান্তরিত করা হয়। নির্যাতন তো কমছেই না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, সমাজের প্রতিটি স্তরে নির্যাতিত নারীরা জন্ম থেকেই হীনমন্যতায় ভোগে। তাই এখনো দেশটির জনশক্তি কোনো কাজে আসছে না। দেশটিতে নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়ে কারো কাছে বিচার চাইতে পারে না অথবা বিচার চাইলেও তা কখনই নারীর অনুকূলে হয় না। কারণ দেশটিতে আইন ও বিচারের সুবিধা কেবল সমাজের উচ্চ শ্রেণীর লোকেরা পেয়ে থাকে। মেয়েরা কখনো তাদের ইচ্ছামতো বিয়ে করতে পারে না; বরং তাদের জোর করে, এমনকি আট বছর বয়সেও বিয়ে দেয়া হয়।
এসব মেয়ে ঘর থেকে স্বামীর অনুমতি ছাড়া বেরুতে পারে না।
২০০৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়, এ ধরনের বাল্যবিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ। অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার ফলে সন্তান প্রস্রবের সময় নারী মৃত্যুর হার বেশি। অন্যদিকে বাল্যকালে বিয়ে হওয়ায় শিক্ষা জীবনের দ্রুত ইতি ঘটে এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের করাল স্রোতে ভেসে যায় এই নারীরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।