আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অ্যান্টিবায়োটিক জগতের নতুন আবিষ্কার পর্ব--৩

:) :D

অ্যান্টিবায়োটিক জগতের নতুন আবিষ্কার পর্ব--১ অ্যান্টিবায়োটিক জগতের নতুন আবিষ্কার পর্ব--২ অ্যান্টিবায়োটিক জগতের নতুন আবিষ্কার পর্ব--৩ প্রফেসর মোলানের মধুর ওপর গবেষনা প্রতিষ্ঠানটি নিউজিল্যান্ডের 'হানি ইন্ডাস্ট্রি ট্রাস্ট'-এর সহায়তায় গড়ে উঠেছে। এই ল্যাবরেটরির গবেষনার ফলাফল এত ফলপ্রসু যে, তার বিশ্ববিদ্যালয় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য পরিচর্যার জন্য ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানি কম্বিটার সাথে ২০০৭ সালে মাল্টিমিলিয়ন ডলারের এক চুক্তি সই করেছে। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত মধু সংক্রামক রোগের প্রতিকারের প্রচলিত সনাতন রীতি অনুযায়ী ব্যবহার হয়ে আসছিল। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি আলেকজান্ডার ফ্লেমিং কর্তৃক পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে মধুর জনপ্রিয়তা ও গুরুত্ব অনেকটা হ্রাস পায়। অনেক প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্ট হয়ে যাওয়ার কারনে মধু এখন আবার গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে।

কুরআন পাকের আয়াতে যেমন বলা হয়েছে, সব মধু সমান নয়, মধুর মধ্যেও প্রকারভেদ রয়েছে। মধু বিভিন্ন বর্ন ও গাঢ়ত্বের হতে পারে। বিজ্ঞান আজ তাই বলছে। মানুকা মধুর মধ্যে 'ইউনিক মানুকা এক্টর' বা ইউএমেফ নামের একটি অজ্ঞাত উপাদান রয়েছে। এই উপাদানের মাত্রার প্রকারভেদে মানুকা হানির গুরুত্ব ও কার্যকারিতা নির্ভর করে।

উপাদানটির পরিমান মধুতে যত বেশি হবে, মানুকা মধু হবে তত গাঢ়, কৃষ্ণ এবং দামও হবে ততোধিক। ২৫০ গ্রাম মাঝারি মাত্রার ইউএমেফ সমৃদ্ধ মানুকা মধু বিক্রি হয় ৩০ ডলারে। আগেই খানিকটা ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মধুর প্রতি আকর্ষন বাড়ার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কাজ করছে। আগে যেমন বলা হয়েছে, বর্তমান বাজারে প্রাপ্ত ট্র্যাডিশনাল অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ক্রমান্বয়ে জীবানুর বিরুদ্ধে অকার্যকর হয়ে পড়ছে। ২০০০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলেছিল, নতুন নতুন সংক্রামক রোগ মোকাবেলায় ১৯৭০ সাল থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়নি।

প্রতিটি অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনের গবেষনায় গড়ে ১০ থেকে ২০ বছর সময় লেগে যায়। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের সূত্র মতে, বর্তমান বাজারে প্রচলিত বহুল ব্যবহৃত প্রতিটি অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে, সংক্রামক রোগের জন্য দায়ী বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া ইতিমধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। সুতরাং সংক্রামক রোগ মোকাবেলায় বা প্রতিকারে মধু এই শূন্যস্থান পূরন করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়। প্রফেসর মোলান ওয়াইকাটো হাস্পাতালে মেথিসিলিন রেজিস্টেন্ট স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস সংক্রমনের কারনে সৃষ্ট প্রতিটি ক্ষতস্থানে মানুকা ড্রেসিং প্রয়োগ করে আশাতীত সাফল্য পাচ্ছেন। তিনি বলেন, মানুকা মধু শুধু সংক্রমন সারায় না, মানুকা যুগপৎ সংক্রমন সারাতেও সক্ষম।

আরো একটি ভয়ংকর রোগের ক্ষেত্রে মধু সাফল্যজনকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশ্বের ১৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগী পায়ের আলসারে ভোগেন। এই আলসারের কারনে বিশ্বে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একটি করে পা কেটে ফেলা হচ্ছে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ডায়াবেটিস, আলসার এবং পা কেটে ফেলার পেছনে ব্যয় হয়েছিল ১১ বিলিয়ন ডলার। গবেষকরা ইদানীং ডায়াবেটিস ও আলসারে মধুর ব্যবহার নিয়ে জোর গবেষনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

.........চলবে (শেষ পর্ব আগামী পোস্টে) রেফারেন্সঃ প্রিয় শিক্ষক ড.মুনির উদ্দিন আহমদ অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।