স¤প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দক্ষিণ দোরিয়া সফর শেষ করে দেশে ফিরে এসেছেন। সফরটি ছিল খুবই তাৎপর্যপূণ বিশেষ করে আমাদের দেশের দূষিত নদীগুলো বাচাঁনোর জন্য একটি শিক্ষণীয় অধ্যয় ছিল এবারের সফরটিতে। দক্ষিণ কোরিয়ার একসময় যে নদীটি ছিল খুবই দূষিত সেটি হলো হান নদী। হান নদীটি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত এবং একসময় আমাদের ঢাকার আশেপাশের বুড়িগঙ্গার মত ছিল। মৃতপ্রায় নদীটিকে কোরিয়া সরকার আবার সজীব ও প্রাণবন্ত করে তুলেছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী সফরের এক অংশে হান নদীতে প্রমোদ ভ্রমনে গিয়েছিলেন।
সেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দারুন সময় উপভোগ করেছিলেন, সাথে ছিলেন আমাদের মন্ত্রীবর্গ। সবাই নৌবিহারের আনন্দ উপভোগ করেছিলেন । শেষে সিউলের মেয়র কিভাবে নদীটিকে দূষিত অবস্থা থেকে বর্তআন অবস্থায় ফিরিয়ে এনেছিলেন তা বনর্না করেছেন। এখানেই সফরটির তাৎপর্য এবং আমাদের দেশের জন্য শিক্ষণীয় । বর্তমানে আমাদের রাজধানী ঢাকার আশেপাশে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ ও টঙ্গী নামে যে চারটি নদী রয়েছে সেগুলোর অবস্থাও এক সময়ের দঃ কোরিয়ার হান নদীর ন্যায়।
তবে আমাদের নদীগুলোর সাথে হান নদীর একটু বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। হান নদী কেবল দূষিত হয়েছিল আর আমাদের নদীগুলো দূষনের পাশাপাশি বেদখলও হয়ে গেছে ।
এবারের সফরে দুইটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে কোরিয়া সরকারের সাথে। চুক্তি দুইটির মধ্যে একটি হল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নদীর পরিবেশ পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত। আমরা আশা করছি এর ফলে আমাদের ঢাকার আশেপাশের নদীগুলো ফিরে পাবে আগের প্রাণ ও সজীবতা।
তবে নদীগুলো বেদখলের ক্ষেত্রে কোরিয়া সরকার কি প্রদক্ষেপ নেবে কারণ যেখানে আমাদের সরকারই এ বিষয়ে হিমসিম খাচ্ছে। হাইকোর্ট পর্যন্ত রায় দিয়েছে অবৈধ স্থাপনা সরানোর জন্য এবং নদীর দূষণ কমিয়ে নদীগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য।
তবে পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে একটু লেখা পড়া করার সুবাদে যতটুকু জেনেছি তা হলো- নদী দূষণ প্রতিরোধ করতে গেলে প্রথমেই আমাদের কে দূষণের উৎসসমূহ জানতে হবে। আমাদের দেশের বিশেষ করে ঢাকার নদীগুলো দূষণের প্রধান কারণ দুইটি ১। নদীর পাড়ে ও পাড় সংলগ্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য সরাসরি কোন ট্রিটমেন্ট ছাড়াই নদীতে নিক্ষেপ ২।
মিউনিসিপ্যাল বর্জ্যসমূহ সরাসরি নদীতে ছেড়ে দেয়া। তাছাড়া আরো অন্যান্য ছোটখাটো কারণ তো আছেই। প্রতিটি কারখানায় যদি ইটিপি বসানো যায় এবং এগুলোর মাধ্যমে বর্জ্য শোধন করে তবে তা নদীতে ছাড়া হয় তবে দূষণ রোধ করা অনেক সহজ । কথাগুলো বলা যত সহজ কার্যকর করা হাজারগুণ কঠিন। কারণ এর সাথে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা থেকে আরম্ভ করে রাজনৈতিক পরিবেশ, কমিটমেন্ট, মানুষের সচেতনতা ইত্যাদি অনেক ফ্যাক্টর জড়িত।
তো দেখা যাক চুক্তির আওতায় দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কি প্রদক্ষেপ গ্রহণ করে আমাদের রাজধানীর নদীগুলোর হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনার জন্য। তবে নদী দূষণ রোধে না হয় কোরিয়া সরকার সহায়তা দিবে কিন্তু নদীর অবৈধ দখল রোধে কিন্তু সরকারের কঠোর অবস্থান প্রয়োজন হবে । নতুবা সকল আয়োজনই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।