জামায়াতের বিনামূল্যে ৫০ লাখ বই
যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে জনমত গঠন
দীনেশ দাস: মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে কোমর বেধে নেমেছে জামায়াতে ইসলামী। এ কাজে দলটি জনমত গঠনে বহুমুখী কৌশল নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে সরকার বিরোধী প্রচারণা, আš-র্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আইনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ও সরকার দলীয় ব্যক্তিদের একাত্তরে পাক সরকারের সংশি¬ষ্টতা প্রকাশ করার জন্য কাজ করছে দলটির নেতাকর্মীরা। যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত কৌশল বই প্রকাশ ও সেগুলো বিনামূল্যে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটি। দলটির শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এক ডজন পু¯ি-কার অš-ত ৫০ লাখ কপি প্রকাশ করে সারাদেশে বিনামূল্যে বিতরণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
পাশাপাশি এ সংক্রাš- আইনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জামায়াত ইতিমধ্যে তাদের কৌশল বা¯-বায়নে দলের রুকনদের দিয়ে নানা ধরনের সংগঠন তৈরি করেছে। ‘আমরা বাড্ডাবাসী’, ‘আমরা মিরপুরবাসী’, ‘আমরা কাফরুলবাসী’ এ রকম নানা ব্যানারে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সমস্যা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠন এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে ইসলামী দাওয়াতের নামে ঘরোয়া আয়োজন।
গত ১৬ এপ্রিল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘দ্য ন্যাশনাল ফোরাম ফর প্রটেকশন অব হিউম্যান রাইটস’ শিরোনামে আš-র্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিষয়ক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মূলত জামায়াত নেতারা নেপথ্যে থেকে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। সম্মেলনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী ১১ আইনজীবী ও এক বুদ্ধিজীবীর বক্তব্যের সংকলন নিয়ে গত মাসের শেষ দিকে একটি পু¯ি-কা প্রকাশ করা হয়। পু¯ি-কার প্রচ্ছদে বিচারপতি টি এইচ খানের ছবি দিয়ে সংশোধিত ১৯৭৩ সালের আš-র্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও মানবাধিকার পরিপন্থি বলে উলে¬খ করা হয়। এছাড়া জেলা আমির সম্মেলন, ওলামা সমাবেশ, বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে দলীয় আমির নিজামীর বক্তব্য নিয়েও তিনটি পু¯ি-কা প্রকাশ করা হয়েছে।
জামায়াত সেক্রেটারি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ৩১ মার্চের সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য নিয়ে একটি পু¯ি-কা প্রকাশ করা হয়। এর শিরোনাম ‘যুদ্ধাপরাধ মীমাংসিত ইসু’’। উপশিরোনাম 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জিগির আরেকটি ধোঁকা, ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার এ ইসুকে কাজে লাগাচ্ছে’।
সংগঠনের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীও ‘খোলা চিঠি’ নামে একটি পু¯ি-কা প্রকাশ করা হয় গত মার্চে। এতে সাঈদীকে রাজাকার ও যুদ্ধাপরাধী বলার বিরোধিতা করে পিরোজপুরের ১০ জন কথিত মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্য ছাপানো হয়।
‘জামায়াত এবং জামায়াত নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ বানোয়াট মিথ্যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ শীর্ষক পু¯ি-কাটির সারাদেশে বিতরণ করা হয়েছে। একই সময়ে ‘এলিগেশনস অব ওয়ার ক্রাইমস এগেইনস্ট দ্য লিডার্স অব বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঃ এ ট্রাভেস্টি ও অব ট্রুথ’ শিরোনামে ১৫ পৃষ্ঠার আরেকটি ইংরেজি পু¯ি-কা প্রকাশ করে বিভিন্ন দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে।
‘মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা প্রকল্প’ নামে আসাদ বিন হাফিজের ‘দৃশ্যপট একাত্তর, একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ যুদ্ধাপরাধী রাষ্ট্রদ্রোহী’ শিরোনামে দুইটি বই বাজারে ছেড়েছে জামায়াত। সব কটি প্রকাশনায় জামায়াত নেতাদের নির্দোষ বলে দাবি করা হয়। সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়, ২৮/০৫/২০১০
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।