প্রতিনিয়ত নতুন করে চিনছি নিজেকে, চারপাশের সবাইকে...
মাঝে মাঝে বিরক্তি লাগে। এত রাত পর্যন্ত কেউ ল্যাপটপ ইউজ করে? সাধারনত রাত দুইটার সময় ঘুমাই আমি। কিন্তু আমার ইন্ডিয়ান রুমমেটকে কখনো ভোর চারটার আগে ঘুমাতে দেখিনি। আর তার ল্যাপটপের মৃদু আলোই আমার সেই বিরক্তির কারণ। তাদের তো আর সকাল দশটায় উঠে ল্যাবে যেতে হবেনা।
আসে মেহমানের মত অনেকটা। এক্সচেঞ্জ স্টুডেন্ট। আমাদের মত নিয়মিত ছাত্রদের মত এত নিয়ম কানুন ওদের না মানলেও চলে। আমি যখন মাঝে মাঝে শনিবারেও ল্যাব মিটিং শেষ করে সস্তির নিশাস ফেলে রুমে ফিরি, ওরা তখন নানান জায়গা ঘুরে ছবি তোলায় ব্যস্ত, যেটা আমার হিংসা আরো বাড়ায় পরের দিন ফেইসবুকে ওদের রং-বেরঙ্গের ছবি দেখে।
আরেকজন আবার একটু বাউলা টাইপের।
সে তার নিজের জিনিস গুছিয়ে রাখতে পারেনা। তার চেয়ার দেখলে আস্ত একটা কাপড়ের পাহাড় মনে হয়। এই জিনিসটাও আমার মহা বিরক্তির কারণ।
আজ ওরা চলে যাচ্ছে। হ্যাঁ, একটু আগে ওদের গেট খুলে দিয়ে আসলাম।
ওদের মতই আরো দুইজন ছিল। তারাও তাদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম শেষ করে চলে গেছে। তাদেরকেও ট্যাক্সিতে তুলে দিয়েছি আট মাস আগের কোন এক নিস্তব্ধ ভোরে।
আজ থেকে কেউ ভোর চারটা পর্যন্ত ল্যাপটপ জ্বালিয়ে রাখবেনা। শুন্য পড়ে আছে বিছানাটা দুটো।
হয়ত এই সেমিস্টারে শুন্যই থাকবে। তাদের বিদায় দিয়ে এসে ঘুম আসছিল না, যে চেয়ারটায় বসে এই লিখা লিখছি, তার পাশের চেয়ারটা, যেটা কাল পর্যন্ত এলোমেলো কাপড়ের পাহাড় ছিল, সেটাও খাঁ খাঁ করছে শুন্যতায়।
তারা এখন এয়ারপোর্টের পথে। আমার কাছে শুধু তাদের বিছানা, তাদের টেবিল-চেয়ারগুলোই খালি মনে হচ্ছেনা, আমার ভিতরে, খুব মৃদু ভাবে কোথায় যেন একটু খালি খালি লাগছে।
শুভকামনা তাদের প্রতি, নিরাপদে ফিরুক তারা বাবা-মা’র কাছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।