এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র দুই রকমের মানুষ আছে। ভালো মানুষ যারা ভালো কাজ করে। আর খারাপ মানুষ যারা খারাপ কাজ করে। এটাই মানুষদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য। আর কোন পার্থক্য নেই... আমি ভাল মানুষ...☺☺☺
কিছুক্ষণ আগেই বৃষ্টি হয়ে গেল।
এখনো বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে (এই পোষ্ট লেখার সময়)। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহে এই বৃষ্টি সবার কাছে যেনো শান্তি বয়ে আনলো। বৃষ্টি শুরু হবার সময় রাস্তায় ছিলাম। বিকালের হাটাহাটি শেষ করে বাসায় আসবো আসবো করছিলাম। অমনি শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি।
সবাই যে যেদিকে পারলো দৌড়াদৌড়ি শুরু করলো। আমিও তাদের সঙ্গী হলাম। আশ্রয় নিলাম একটা রিকশার গ্যারেজের নিচে। কিন্তু বৃষ্টি দেখে মাথা আর ঠিক রাখতে পারলাম না। যা থাকে কপালে, ভেবে বের হয়ে ভেজা শুরু করলাম।
শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট নিয়েই ভিজতে শুরু করলাম। কি শান্তি যে লাগলো! হাটার সঙ্গী ছিল এক ফ্রেন্ডের চাচা। চাচার বয়সও খুব বেশি হবেনা। ১৯ কি ২০। আমার সাথে খুব ফ্রি।
তাকেও ভিজতে বললাম। সে রাজী হলোনা। তার নাকি জ্বর হবে। কি আর করার? একা একাই ভিজতে লাগলাম। রিকসার গ্যারেজের সবাই অবাক হয়ে দেখতে লাগলো সতের বছরের এই বালকের কান্ড।
বৃষ্টিতে ভিজছে আর বৃষ্টির পানি হা করে খাচ্ছে। পকেটে মোবাইলের ভাইব্রেশন শুনতে পেলাম। আম্মু কল করেছে।
: এই তুই কোথায়?
: তাজলেনের পাশে। বৃষ্টিতে ভিজছি।
। ।
: দেখিস। জ্বর না হয়।
: না।
জ্বর হবেনা। তবে মোবাইলটার জ্বর হতে পারে। বৃষ্টির মধ্যেই কথা বলছি।
: আচ্ছা, তাড়াতাড়ি বাসায় আছিস।
: ওক্কে।
। ।
মানুষ অবাক হতে খুব ভালবাসে। আস্তে আস্তে রিকসার গ্যারেজে মানুষ বাড়ছিল আর আমার ভিজা দেখছিল। কিন্তু কেউ আমার সঙ্গী হলোনা।
অবশেষে সঙ্গী পেলাম কিছু পথের শিশুকে। তাদেরকে নিয়েই ভিজতে লাগলাম। আমাকে ভিজতে দেখে চাচারও লোভ হলো। চাচাও আসতে চাইলো। আর আমার হঠাৎ করে ক্ষুধা লাগলো।
রিকসার গ্যারেজের দোকান। একটা বিস্কিতমতো জিনিস পেলাম। গোল, উপরে চিনি ফালানা। বিশাল আকৃতি। পাচ টাকা দিয়ে একটা কিনলাম।
মানিব্যাগ জানান দিলো, “তোমার ব্যালেন্স শেষ তাজুল। দ্রুত রিচার্জ করো...”। ঐটা খেতে লাগলাম আর বৃষ্টির পানিতে ভিজতে লাগলাম। চাচা এতোক্ষণে আমার সঙ্গী হলো। চাচার বাসা পর্যন্ত তার সাথেই আসলাম।
তারপর তাকে বিদায় জানিয়ে একা একাই ভিজতে ভিজতে বাসায় আসলাম। আসার পথে দেখলাম কিছু বড় বড় ছেলে রাস্তায় ফুটবল খেলছে। ফুটবল খেলতে পারিনা। ফুটবলে লাথি মারলে পা ভাঙ্গার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তাই খেলার প্রতি বেশি একটা আগ্রহ দেখালাম না।
বাসায় ফিরলাম পুরো ভেজা শরীর নিয়ে। বাসায় ঢুকেই এক দৌড়ে বাথরুম। একেবারে গোসল করে তারপরে বের হলাম। আম্মু একদমই রাগ করলোনা। ছেলের এই পাগলামীর সঙ্গে সে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।
সে জানে যে, বৃষ্টি দেখলে তার ছোট ছেলের মাথা ঠিক থাকেনা। গোসল করে লুঙ্গি পড়ে এখন এই পোষ্ট লিখছি। মজাই লাগছে। একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। তবে এই পোষ্ট লেখা পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্থ আছি।
এখন গান শুনছি। কণা’র বরষা। আপনাদের জন্য গানটা দিয়ে দিলাম। লিরিক্স ব্লগার জর্জিস এর কাছ থেকে ধার করা। ।
।
মেঘের গায়ে, নূপুর পায়ে, নাচে বরষা
বৃষ্টি কি তার ছন্দ জেনেছে
শ্রাবণ কি তার মন্ত্র বলেছে
দুহাত তুলে কোমল সুরে
ডাকে কুয়াশা ভেজে বরষা
চোখে কি তার ছায়া ফেলেছে
হৃদয়ের কাছে ছোঁয়া মিলেছে
কাজল দীঘির ক্লান্ত বধির
তুলেছে কি ঢেউ
সুরের মায়ায় কোমল ছায়ায়
দেখেছে কি কেউ
মনে কি তার আগল খুলেছে
আধারের পাশে মূর্তি গড়েছে
ঢেউয়ের তালে বানের জলে
মেশে মোহনায়
ছন্দ তালে নদী ভিজে যায়
ডাইরেক্ট ডাউনলোড লিংক (ক্লিক করলেই ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে...)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।