my country creat me a ginipig
গত ১৫ মে দৈনিক ইনকিলাবে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলনের স্ত্রী নাজমুন নাহার বেবীর 'কারাগারে যাওয়ার অপেক্ষায়' শিরোনামের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। লেখাটি ব্লগারদের সাথে শেয়ার করলাম--
কারাগারে যাওয়ার অপেক্ষায়
নাজমুন নাহার বেবী, আ ন ম এহছানুল হক মিলনের সহধর্মিনী
সংসদ সদস্য শেখ হেলাল ও তার স্ত্রী রূপা চৌধুরী বর্তমানে কারাগারে আছেন। তাদের সেই কারাগারের অবস্থান হলো রাজধানীর গুলশান অভিজাত এলাকায়। অর্থাৎ সরকারি নথিপত্রে তারা কারাগারে গেলেও বাস্তবে তারা রয়েছেন গুলশানের একটি নামকরা হাসপাতালের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল স্যুটে। সেখানে তাদের চলাফেরায় কোনো বিধি-নিষেধ থাকা দূরের কথা, উল্টো তাদের হরেক রকম আরাম-আয়েশ নিশ্চিত করার কাজেই ব্যস্ত কারা কর্তৃপরে লোকজন।
শেখ হেলালের পরিচয় হলো, তিনি দিনবদলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই।
শেখ হেলাল ও তার স্ত্রী রূপা, দু’জনই দুর্নীতির মামলায় দন্ডিত হয়ে এতদিন পুলিশের খাতায় পলাতক ছিলেন (যদিও বাস্তবে তারা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়িয়েছেন, স্বাভাবিক জীবন যাপন করেছেন)। গত ৯ মে রবিবার হঠাৎ করেই তারা নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থণা করলে আদালত স্বাভাবিকভাবেই জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর আদালতের হুকুম তামিল করতে গিয়েই হেলাল-রূপা দম্পতিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে মর্মে সরকারি নথিপত্রে দেখানো হলো। নি:সন্দেহে এটি একটি বিরল ঘটনা।
কিন্তু হেলাল-রূপা দম্পতির বিরল সুবিধা লাভের ঘটনা দিনবদলের সরকারের আমলে এটিই প্রথম নয়। এই সরকার মতায় আসার পরপরই ২০০৯ সালের ১১ জানুয়ারী তারা হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের সামনে গিয়ে হাজির হন। দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী হওয়া সত্বেও সেখান থেকে তারা জমিন পেয়ে যান। গত ৯ মে একটি জাতীয় দৈনিকে সেই খবরটি বিস্তারিত ছাপা হয়েছে।
দিনবদলের সরকার মতায় থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ হেলাল কোথায় কি সুবিধা পেয়েছেন বা পাচ্ছেন তা নিয়ে আমার মাথাব্যথার কোনো কারণ ছিল না।
কিন্তু ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে আমি আজ এমন দু:সহ দিনবদলের শিকার হয়ে চলেছি, যা প্রতিমুহুর্তেই আমাকে বর্তমান সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্রের ভয়ংকর সব বৈষম্যমূলক আচরণের ঘটনাগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
এই লেখাটি যখন পত্রিকার পাতায় ছাপা হচ্ছে ঠিক তখনও হয়তো আমি ত্রস্ত গতিতে রংপুর, দিনাজপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর অথবা অন্য কোনো দূরপথে ছুটে চলেছি। নাওয়া-খাওয়া, ঘুম-বিশ্রাম ভুলে আমাকে এভাবেই ছুটতে হচ্ছে প্রতিদিন। সত্যিই দিন বদলে গেছে আমার জীবনে। দূরন্ত শৈশব, উচ্ছল কৈশর কিংবা টগবগে যৌবনের দিনগুলোতেও এভাবে কখনো ছুটে চলার প্রয়োজন হয়নি আমার।
কিন্তু আজ না ছুটে যে আর উপায় নেই। আমাদের একমাএ কিশোরী মেয়েটির গত ১১ মে “০” লেবেল পরিা অনুষ্টিত হয়েছে। অথচ সকালে নাস্তা না করে, অশ্র“ সজল নয়নে চোখ মুছতে মুছতে বাবা মা ছাড়া আমার ঘনিষ্ট বান্ধবী কে নিয়ে পরিা দিতে যায়। সারাণ বিষন্ন-মনমরা হয়ে বসে থাকে প্রাণহীন বাসাটিতে। পড়াশোনা তার লাটে উঠেছে, বাবার চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমুতেও পারে না।
আমি মিলনের কথা বলছি। আ ন ম এহছানুল হক মিলন। তিনি বাংলাদেশের সাবেক শিা প্রতিমন্ত্রী। একজন নির্ভেজাল দেশপ্রেমিক রাজনীতিক। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।
কিন্তু এর বাইরে তিনি আমার স্বামী। আমাদের একমাত্র সন্তান তানজিদা নাহার হকের বাবা। গত প্রায় দু’মাস ধরে মিলন কারাগারে বন্দী। শুধু বন্দী বললে ভুল হবে, দেশের দূর দূরান্তের এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে তাকে টানা-হেঁচড়া করা হচ্ছে প্রতি নিয়ত। আর সেই কারণে আমাকেও ছুটে চলতে হচ্ছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।
কি অপরাধ মিলনের ? অনেক কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত মার্কিন নাগরিকত্ব বিসর্জন দিয়ে মাটির টানে দেশে ফিরে আসা ? নাকি জীবন বাজি রেখে নকলমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেয়া ?
প্রিয় পাঠক, এতদিনে হয়তো আপনারা পত্রিকা মারফত জেনে গেছেন যে, আপনাদের প্রিয় মিলন ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে একজন ছিনতাইকারী হিসাবে। প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি নাকি এলাকার লোকজনের মোবাইল ফোন, ভ্যানেটি ব্যাগ, মোটারসাইকেল ইত্যাদি ছিনতাই করেছেন। অন্যের গাড়ি ভাংচুর, এমনকি ষাটোর্ধ এক মহিলাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরূদ্ধে।
অনেকেরই নিশ্চয়ই জানা আছে, আবার কেউ কেউ হয়তো জানেন না যে, আজকের রাজনীতিক এহছানুল হক মিলন এক সময়ের কৃতী অ্যাথলেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী ব্লু পদকপ্রাপ্ত এবং আন্তজাতিক ভলিবল টিমের খেলোয়াড় তিনি।
ছাত্রজীবনে ক্যাম্পাসে দারুন জনপ্রিয়তা ছিল তার। প্রচলিত ধারার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও মিলন কখনোই সংঘাত, সহিংসতা বা অস্ত্রবাজির মতো নোংরামির সঙ্গে নিজেকে জড়িত করেননি। সে কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে আরও উচ্চতর শিা গ্রহণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবন ধারণের জন্য কঠোর পরিশ্রমও করেছেন নিরন্তর। তিলে তিলে নিজেকে তৈরী করেছেন দেশে ফিরে ভাল কিছু করার মহান ব্রত নিয়ে।
মার্কিন শাসনব্যবস্থার কল্যাণমুখী ও টেকসই ব্যবস্থাগুলো স্বদেশের মানুষের কল্যাণে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়েও সব সময় আলোচনা করতো সে।
এমন ভাবনা থেকেই নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরে নিজের বাপ-দাদার জন্মস্থান চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলায় গিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু সেই নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে আজকের মতাসীনরা। তাদের একজন টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, যার বাড়ি কচুয়ায়।
প্রচন্ড প্রতিহিংসা পরায়ন সেই প্রতিমন্ত্রীর দোর্দন্ড প্রতাপে প্রকম্পিত হয় গোটা কচুয়া। তার বাহিনীর অত্যাচারে হাজার হাজার বিএনপি সমর্থক এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নেয়। বিএনপির নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদির কারণে নাভিশ্বাস উঠে কচুয়াবাসীর। টানা পাঁচ বছর ধরে চলে এমন অরাজক পরিস্থিতি।
এরপর ২০০১ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এহছানুল হক মিলন।
দায়িত্ব পান জোট সরকারের শিা প্রতিমন্ত্রী হিসাবে। আওয়ামী লীগ আমলের পাঁচ বছরে নির্যাতিত-নিষ্পেশিত বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা কচুয়ায় ফিরে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিশোধের স্পৃহায় ফুঁসে উঠে। পরিস্থিতি আাঁচ করতে পেরে মিলন দ্রত এলাকায় ছুটে যান এবং নিজ দলের সকল কর্মী-সমর্থককে সম্পূর্ণরূপে শান্ত থাকতে বলেন। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধপরায়নতার রাজনীতি বাদ দিয়ে সবাইকে জনকল্যাণে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি। তার অনুরোধে সাড়া দিয়ে কচুয়ায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের প্রায় সকলেই ধৈর্যের পথ বেছে নেন।
প্রতিপরে ওপর হামলা বা প্রতিশোধ গ্রহণের পথ থেকে ফিরে আসেন তারা। হাতে গোনা কিছু লোক উশৃঙ্খল আচরণের চেষ্টা করলে মিলন তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ জন্য নিজ দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল তাকে। তবুও নিজের অবস্থান থেকে বিচ্যুত হননি তিনি। অথচ সেই মিলনই আজ দিনবদলের সরকারের রাজনৈতিক জিঘাংসার অন্যতম শিকার।
২০০৩ সালের কথিত একটি ছিনতাইয়ের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গত ১৪ মার্চ এহছানুল হক মিলন চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে তাকে গ্রেফতার করে চাঁদপুর জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন রাতেই তাকে স্থানান্তর করা হয় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে। ২২ মার্চ তাকে কুমিল্লা থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় পিজি হাসপাতালে। সেখানে প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে তাকে আবার প্রিজন সেল থেকে কুমিল্লা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
১৩ এপ্রিল তাকে চাঁদপুর কোর্টে হাজির করা হয়। ওইদিনই আবার তাকে কুমিল্লা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। দশদিন পর ২৩ এপ্রিল তাকে কুমিল্লা কারাগার থেকে আবার ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ২৫ এপ্রিল তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পিজি হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানে ডাক্তার তাকে জরুরী ভিত্তিতে ভর্তির জন্য প্রেসক্রিপশন লিখে দিলেও হাসপাতালের পরিচালক জনৈক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার সাহেব জোরপূর্বক তাকে জেলখানায় ফেরত পাঠিয়ে দেন।
এরপর ২৮ এপ্রিল মিলনকে আবার ঢাকা থেকে কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়। ২৯ এপ্রিল নিয়ে যাওয়া হয় চাঁদপুর। সেখানে কোর্টে হাজিরা শেষে আবার তাকে কুমিল্লা কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। ৬ মে কুমিল্লা থেকে মিলনকে আবার চাঁদপুর নেয়া হয়। সেখানে হাজিরা শেষে ফিরিয়ে নেয়া হয় কুমিল্লা কারাগারে।
গত ৭ মে সকাল বেলায় কোনো অফিস আদেশ ছাড়াই মিলনকে হঠাৎ কুমিল্লা থেকে রংপুর কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কুমিল্লা থেকে তাকে রংপুর নেয়া হয় অত্যন্ত জরাজীর্ণ একটি গাড়িতে করে। মাত্র ৫ দিনের মাথায় ১১ মে সকাল বেলায় আবার তাকে রংপুর থেকে নিয়ে আসা হয় কুমিল্লা কারাগারে। কেন তাকে এভাবে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে টানা-হেঁচড়া করা হচ্ছে এর কোনো জবাব নেই কারা কর্তৃপরে কাছে।
এই মুহুর্তে মিলনের পরিবারের সদস্য বলতে আমি এবং আমাদের মেয়ে তানজিদা।
গ্রেফতারের পর থেকে আমাদের সঙ্গে খুব কমই দেখা হয়েছে মিলনের। অনেক বার চেষ্টা করে হয়তো কয়েক মিনিটের জন্য একবার সাাত হয়। তাকে কখন কি কারণে কোথায় নেয়া হচ্ছে তাও জানতে দেয়া হয় না আমাদের। এমনকি এক কারাগার থেকে অন্য কারাগার নেয়ার েেত্র কখনোই কোনো অফিস আদেশ জারি করা হয় না। সে কারণে সারাণই উদভ্রান্তের মতো ছুটতে হয় আমাকে।
বিশেষ করে আজকাল মিলনের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে নানা আশঙ্কায় থাকি আমরা। এক কারাগার থেকে অন্য কারাগারে স্থানান্তরের নামে কখন তাকে আরও কোন বড় বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া হয়, তারই বা নিশ্চয়তা কি ? আর তাই কোনো সূত্রে খবর পাওয়া মাত্রই দু:স্বপ্নের সেই প্রিজন ভ্যানের পিছু পিছু ছুটে চলি আমি এবং তানজিদা। ব্যাপারটা আজকাল অনেকটা রুটিন হয়ে গেছে। হায় রে দিনবদল ! এমনই বদলেছে দিন যে, কোনো যুক্তগ্রাহ্য অভিযোগ ছাড়াই একজনকে হয়রানী করা হচ্ছে অমানবিকভাবে। অথচ দুর্নীতির মামলায় ১৩ বছরের দন্ড মাথায় নিয়েও আরেকজন কাটাচ্ছেন গুলশানের অভিজাত হাসপাতালে, পাঁচতারকা হোটেলের সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন স্যুটে।
নকলমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগের অংশ হিসাবে মিলন এক সময় দেশের প্রতিটি অঞ্চল চষে বেড়িয়েছেন। এদেশের আপামর জনতা অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল তার সেই চেষ্টার প্রতি। ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের নেতারাও স্বীকার করেন সেই কথা। দিনবদলের মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীও কোনো একদিন এক ব্যক্তিগত পরিবেশে নকল বিরোধী সংগ্রমের জন্য মিলনের উচ্ছসিত প্রশংসা করে তাকে দারুন উৎসাহ যুগিয়েছিলেন। এদেশের সাংবাদিক সমাজ তো মিলনের সেই সংগ্রামের সাথে রীতিমতো এককার হয়ে গিয়েছিল।
প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে বিদায় নেয়ার পরও মিলন যখনই যেখানে গেছেন, মানুষের অকুন্ঠ ভালবাসা ও শ্রদ্ধা পেয়েছেন। ৭ মে মধ্যরাতের পর মিলনের প্রিজন ভ্যান যখন রংপুর কারাগারের সামনে পৌঁছায়, সেই গভীর রাতেও কয়েক হাজার জনতা সেখানে কয়েক ঘন্টা ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিল মিলনকে এক নজর দেখার জন্য।
গ্রেফতার হওয়ার পর মিলন এ পর্যন্ত ৬টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। কিন্তু প্রতি সপ্তাহেই তার বিরূদ্ধে এক বা একাধিক নতুন মামলা দায়ের করা হচ্ছে। প্রতিটি মামলায়ই ৬ থেকে ৭ বছর আগের ঘটনার উল্লেখ করে তাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
অথচ কথিত এসব ঘটনার সময় মিলন কখনোই এলাকায় ছিলেন না। এমনকি কোনো কোনো ঘটনার সময় তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করেছেন। অথচ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য দিনবদলের সরকার একের পর এক গোয়েবলসীয় সব অভিযোগে তাকে মামলার আসামী করছে। একটি পুরনো হত্যা মামলায় তাকে জড়ানোর জন্য পুলিশকে চাপ দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটি মামলায় তার সঙ্গে আমাকেও আসামী করা হয়েছে।
কয়েক দিন ধরে শুনতে পাচ্ছে যে, মিলনের মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে ছুটাছুটির কারণে আমার ওপরও বেজায় নাখোশ মতার মদমত্ততায় অন্ধ লোকেরা। তারা নাকি এবার আমাকেও জেলখানার চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী করার ফন্দি চুড়ান্ত করেছে। হয়তো যে কোনো মুহুর্তে আমিও হয়ে যাবো জেলখানার বাসিন্দা। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছি আমিও। সেই আশির দশকের প্রথমার্ধেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখার সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করেছি।
দেশের বাইরে যতদিন কাটিয়েছি, কখনোই রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে দূরে ছিলাম না। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে রাজনীতি আর জেল-জুলুম তো সমান্তরালেই চলে। সুতরাং জেলখানায় যাওয়ার প্রশ্নে আমি একেবারে অপ্রস্তুত নই। ভয় শুধু মেয়েটিকে নিয়ে। বাবা-মা দু’জনকে ছাড়া ওর চলবে কি করে ?
লেখক: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।