উন্নত দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা
আমাদের মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করার পবিত্র দায়িত্বটি দেশে থাকতে আমার নিজ গুণে গুণান্বিতা স্ত্রী ই নিয়েছিলেন। এ নিয়ে মেয়েদের মেয়েবেলায় আমার খুব একটা খোঁজ খবর নিতে হয় নি। এবারই আমাকে এই দায়িত্বটি "বেটার হাফ" বিদেশ্ থেকে দেশে প্রত্যাবর্তনের টেলিফোনে দিলেন।
প্রাথমিকভাবে এই দায়িত্ব পালনে অবশ্যই আমার সাময়িক ব্যর্থতার দায় দায়িত্ব স্বীকার করে নিতে হবে। কারন শারিরীক ভাবে কোন স্কুলে উপস্থিত হয়ে আমি কোন খোঁজ-খবর নেই নি, নেবার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করিনি।
যা খোঁজ-খবর নিয়েছিলাম নিতান্তই সতীর্থদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই। তাতে যা অনুমান করে ছিলাম, সংশয়ের কোন কারন ছিল না।
কিন্তু এই মুহূর্তে পরিবার ও ছোট মেয়ে দেশে চলে এসছে। টরন্টোতো যে দিন পা দিই তার পর দিনই মেয়েদেরকে গ্রেড ২ ও গ্রেড ৮ এ শুধুমাত্র ল্যন্ডিং পেপার ও পাশপোর্ট দেখে বয়সানুসারে ভর্তি করে নেয়। ইংরেজী না জানলে, বললেন স্পেশাল ক্লাশে স্কুল কর্তৃপক্ষ তা ঐ বাচ্চাকে শিখিয়ে নেবার ব্যবস্থা করবেন (এটা অবশ্য তাদের সাধারন স্কুলে)
ঢাকায় প্রথম যেই স্কুলে যাই, সেটি ছিল বি, আই, টি এবং গুলশানে অবস্থিত।
দিন-১
ক) নিরাপত্তা প্রহরী কে জিজ্ঞেস করা। তিনি মোবাইল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে দালানের গেটের দিকে যেতে বললেন।
খ) দালানের গেট দিয়ে ঢুকতেই দু দুজন মহিলা অভ্যর্থনা কারী কে সম্মুখীন হতে হোল। বালাদেশী উচ্চারনে ইংরেজীতে আমাদের আগমনের হেতু জিজ্ঞেস করায় ত বাংলায় উত্তর দিয়ে জানালাম।
গ) ভেতর থেকে গুরু গম্ভীর্য মুখ নিয়ে আরেকজন বেরুতে বেরুতে আাবার আমাদের কে একই রকম প্রশ্ন ইংরেজীতেই করলেন; আমি বাংলায় উত্তর দিলাম।
ঘ) ২০০টাকার ভর্তি ফর্ম কিনে নিতে বললেন; (অন্যথায় ম্যডামের সাথে দেখা হবে না, জানিয়ে দিলেন।
দিন -২
ক) প্রহরীদের স্তর পেরিয়ে, আবেদন পত্র ও বিসনেয কার্ড দিলাম।
খ) গুরু গম্ভীর্য মুখের (ভদ্র) মহিলা হে এলেন, জিজ্ঞেস করলেন," হোয়্যর ইজ গার্লস মাদার"? আমি বলি তিনি আসেন নি।
--- না দুজনকেই আসতে হবে। বোথ ফাদার এন্ড মাদার।
দুটি বাক্যই ইংরেজিতে বলা।
--- চেষ্টা করলাম বলতে, আপনি দু'জনের কথা বলেননি।
তিনি তাতে সম্মতি দিতে নারাজ। মনে মনে বললাম, এক পিতা বা এক মাতার পরিবার হলে কি করতেন। একই লিংগের পিতা-পিতা বা মাতা-মাতা পরিবার হলে কি হোত।
--- নো আই টোল্ড ইয়োর ওয়াইফ, বোত প্যরেন্টস আর টু কাম।
গ) জানাতে চেষ্টা করি আমার দফতরে কাজ আছে। সময় করা সম্ভব না।
ঘ) গুরু গম্ভীর্য মুখের (ভদ্র) মহিলা অতি সহজে জানালেনঃ
--- দ্যট্স আপ টু ইউ।
ঙ) অজ্ঞতা দিন - ২ এ কোন সাক্ষাত নয়।
দিন -৩
ক) বাবা - মার সাক্ষাতকার হবে মেয়ের ভর্তির জন্য, অজ্ঞতা দুজনেই বাধ্য ছাত্র - ছাত্রীর মত স্কুল প্রাঙ্গনে মেয়েকে নিয়ে।
খ) আধ ঘন্টা পর শ্রদ্ধেয়া ম্যডাম ডাকলেন। কথোপকোথন ইংরেজীতে, আমি বাংলায় বলার চেষ্টা করি। আমাকে উপদেশ দিলেন ইংরেজিতে বলতে।
গ) প্রথমেই জানালেন ক্যনাডার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশ থেকে নিচু মানের না হলেও তার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ে অনেক নিচে।
ঘ) উধাহরন স্বরুপ জানালেন ক্যনাডায় কেন্দ্রীয় পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। আর বাংলাদেশে তার প্রতিষ্ঠানের ছাত্র - ছাত্রীরা "ও" লেভেলের নবম শ্রেনীর পাঠ্যসূচী ক্লাশ সিক্স থেকেই শুরু করে দেয়। সুতরাং আমাদের মেয়ে, যে কি - না ক্লাশ নাইনে দু মাস পরার পর সেপ্টেম্বর সেশান থেকে ক্লাশ টেনে যাবে, কোন প্রকারেই তার স্কুলের পাঠ্যসূচী অনুসরন করে একই স্তরে আসতে পারবে না
ঙ) দেখছি মেয়ের বাংলাদেশে আসার ও থাকার উৎসাহ হ্রাস করতে শুরু করেছে। ক্যনাডার কোন স্কুলে বাচাদেরকে এত নিরুৎসাহি পরিবেশ সৃষ্টি করে কথা বলেন না।
চ) তিনি কিছু তথ্য সবার উপকারের জন্যই আমাদেরকে জানালেন।
তার মধ্যে "ও" লেভেল এ এক সিটিং এ পাঁচটি পরীক্ষা দিতে পারলে ছাত্রের পরবর্তী মার্কিং এর জন্য কম সংখ্যক বিষয়ে দিতে পারা ছাত্রের চেয়ে ভাল। আরা প্রাইভেটলি পরীক্ষা দেবার চেয়ে একটি মানসম্মত স্কুলের মাধ্যমে পরীক্ষা দেবার গুরুত্ব অনেক বেশী। কারন, প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা একটি ভাল ল্যব এর মাধ্যমে অনুশীলন করতে পারেন না।
দিন -৪
ক) এখনও স্কুল খুঁজে বেরাচ্ছি।
কেউ সন্ধান দিতে পারলে বাধিত হব।
ফেরদাউসআলআমিন এ্যএ জিমেইল ডট কম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।