বাংলায় কথা বলি,বাংলায় লিখন লিখি, বাংলায় চিন্তা করি, বাংলায় স্বপ্ন দেখি। আমার অস্তিত্ব জুড়ে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে বর্তমানে হাটে-বাজারে যে সব দাঁড়িপাল্লা চালু রয়েছে সেগুলো কি ওজন নেয়ার ক্ষেত্রে সঠিক পাঠ দেয়? আমার মনে হয় প্রচলিত এই দাঁড়িপাল্লা গুলো মোটেই বৈজ্ঞানিক নয়। এগুলোর পাঠও সঠিক হয়না। যুগ যুগ ধরে চলে আসা প্রাগেতিহাসিক এই দাঁড়িপাল্লাগুলো এখন পরিবর্তন করা দরকার।
কারণ, এই সব দাঁড়িপাল্লায় ওজন নেয়া হয় অনেকটা অনুমানের ভিত্তিতে। সঠিক রিডিং নেয়ার কোন ব্যবস্থাই এতে নেই। এর ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এক জন বিক্রেতার উচিত সঠিক মাপে মাল বিক্রি করা। আর একজন ক্রেতার উচিত সঠিক মাপে মাল ক্রয় করা।
এগুলোর কোনটিই প্রচলিত দাঁড়িপাল্লার দ্বারা সম্ভব নয় বলে আমি মনে করি। এগুলোতে “মোটামুটি” ধরনের একটা রিডিং আসে যাতে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়েই দারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হন। এটা যুগ যুগ ধরে চলতে পারেনা।
বর্তমানে বাজারে বিশেষ করে খুচরা বাজারে যে দাঁড়িপাল্লাগুলো ব্যবহৃত হয় সেগুলো হাতে তৈরী। একটি বড় কাষ্ঠ দন্ড কে সমান দুইভাগে ভাগ করে মাঝখানে একটি ছিদ্র করে সেখানে একটি সুতো বেঁধে দেয়া হয়্ ।
দন্ডের দুইপাশে থাকে বেত কিংবা টিনের পাতের তৈরী দুটি প্লেট যার একটিতে মাল এবং অন্যটিতে বাটখারা রাখার ব্যবস্থা থাকে। এর একটিতে বাটখারা রেখে অন্যটিতে মাল তোলা হয়। যখন চোখের আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় উভয় দিকের প্লেট অনুভূমিক অবস্থানেএসেছে তখন ধরে নেয়া হয় যে ওজন নেয়া শেষ। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর।
আমার মনে হয় বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর আর কোন দেশে এমন বৈজ্ঞানিক দাঁড়িপাল্লা ব্যবহৃত হয়না।
সঠিক ওজন নির্ণয় এবং সঠিক দাম নির্ণয় করা ব্যবসার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। অথচ আমাদের দেশে বিষয়টিকে কেন জানি না যুগ যুগ ধরে অবহেলা করা হচ্ছে। আমার মনে হয় আমরা ইচ্ছে করলে খুবই সহজে বিজ্ঞান অথচ কম দামে আধূনিক মানের ওজন নেয়ার দাঁড়িপাল্লা চালু করতে পারি। যে সব দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করলে বিক্রেতা ও ক্রেতারর উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা হবে। আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে স্বর্ণকারের দোকানে যে সব দাঁড়িপাল্লা ব্যহৃত হয় তা দিয়ে সোনার মতো মূল্যবান জিনিসের ওজন নেয়া আদৌ উচিত কিনা আমি বুঝতে পারিনা।
স্বর্ণকারের দোকানে যেখানে প্রয়োজন বৈদ্যুতিক ওজন যন্ত্র , সেখানে তারা ব্যবহার করে মান্ধাতার আমলের দাঁড়িপাল্লা যার দ্বারা কেউই উপকৃত হয়না। ক্ষতিটা বেশী হয় ক্রেতার । তাকে দাম দিতে হয় অনেক ক্ষতি স্বীকার করে।
বিষয়টি আমি তুললাম এই কারণে যে, কেউ যদি বিষয়টি সরকারের নজরে বিষয়টি আনতে পারে তাহলে আমি মনে করি সরকার বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবেন এবং তারা ইচ্ছে করলে বর্তমানে বাজারে প্রচলিত দাঁড়িপাল্লার বদলে বিজ্ঞানসম্মত দাঁড়িপাল্লা প্রচলন করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। এটি করা জরুরী একারণে যে এর সাথে ক্রেতা বিক্রেতা সহ সর্বসাধরণ এমন কি খোদ রাষ্ট্রের স্বার্থও জড়িত।
আমি মনে করি, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রচলিত দাঁড়িপাল্লাবন্ধ করে বিজ্ঞান সম্মত দাঁড়িপাল্লা চালু করা প্রয়োজন। খাদ্যে ভেজাল দেয়া যেমন একটি অপরাধ তেমনি ওজন নেয়ার সময় যদি সঠিক রিডিং না আসে সেটাও একটি অপরাধ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সম্মানিত পাঠকেরা কি বলেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।