আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাজারে কোন জিনিসটার দাম কম?

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

বহুদিন ধরেই আমরা বাজারের ষ্টীমরোলারের নিচে পিষ্ঠ হচ্ছি। সেক্ষেত্রে সমস্যায় আছে বেশী সমাজের নিম্নবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্তরা। কিন্তু খরচের সাথে তাল মিলিয়ে ইনকাম সোর্স বাড়েনি। তাই বাড়তি টাকার যোগানটা আসছে প্রত্যেকের অন্যান্য খাত থেকে।

যেমন মানুষ আগে বিনোদনে যেটাকাগুলো খরচ করতো সেটা হয়ত কেউ কেউ এখন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পিছনে খরচ করছে আবার হয়ত কেউ জমানো টাকা শেষ করছে। দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণ ছিল বিশ্ববাজারে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়া। আর তার সাথে ছিল এদেশের তখনকার সরকার প্রাসাশনিক অক্ষমতা। তারা বাজারকে কোনভাবেই একটা লিমিটের মধ্যে রাখতে পারেনি। পক্ষান্তরে প্রমান হয়েছে তারা যথেষ্ট কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রনে।

দায়িত্বশীল ব্যাক্তির মূখ থেকে এমনও কথা শুনতে হয়েছে যে, "আমাদের করার কিছুই নেই। " সেইসাথে বিশ্বব্যাপী একটা অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল দিনের পর পর। মন্দার সূচক ধীরে ধীরে শুধু উপরেই উঠছিল। তারও রয়েছে বিভিন্ন কারণ। বিশ্বনিয়ন্ত্রক পরাশক্তিগুলোর হটকারী সিদ্ধান্ত আর বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা, যুদ্ধ বিগ্রহ ইত্যাদি।

আর সেই সাথে তো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছেই। যাইহোক, এই নতুন সরকারের প্রধান একটা প্রতিশ্রুতি ছিল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম মানুষের হাতে নাঙালে নিয়ে আসা এবং সেটা যেকোন উপায়েই হোক না কেন। সে চ্যালেঞ্জ এখন মোকাবেলা করতে হবে। আমরা কামনা করি সরকার সেখানে সফল হোক। আর এখানেই পার্থক্য একটা গণতান্ত্রিক সরকারের সাথে আরেকটা চাপিয়ে দেয়া সরকারের।

কারণ গণতান্ত্রিক বা রাজনৈতিক সরকারের একটা জবাবদিহিতা থাকে জনগনের কাছে। তবে খুশির খবর এই যে, ২০০৮ সালের শেষ দিকে ধীরে ধীরে বিশ্ববাজারে সবকিছুর দাম করে আসতে শুরু করে। সেটার প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে পড়ে দেরিতে হলেও। তবে সেটা খুব আস্তে আস্তে। মূলতঃ প্রতিনিয়ত মানুষ পিষ্ঠ হচ্ছিল চাল, তেল, আটা, চিনি ইত্যাদি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির উর্দ্ধোমূল্যের কারণে।

যেমন সংসদ নির্বাচনের বেশ আগেই কোন কোন চালের মূল্য ২৭/২৮/২৯ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়। আর পাশাপাশি ৪৪/৪৫ টাকার আটা বিক্রি শুরু হয় ২২/২৩ টাকা দরে। আর ১২০ টাকা কেজি সোয়াবিন বিক্রি শুরু হয় বাজার ভেদে প্রায় ৯৫/১০০ টাকা দরে। তারপর সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পরে তেলের দাম কমে আসে। প্রতি লিটার তেলের দাম ৯০টাকা হয়।

আমার খেয়াল আছে ৫ লিটারের রূপচাঁদা সোয়াবিন তেলের দাম ৫৪৫ টাকা থেকে কমে ৪৪৫ টাকায় আসে। তারমানে লিটারের দাম হয় ৮৯টাকা। এর কম দামে আমরা কখনই বাজার থেকে তেল কিনতে পারিনি। তার কিছুদিন পরে ব্যাবসায়ীরা বলল, সোয়াবিন তেলের আরো ৫ টাকা কমিয়ে ৭৬ টাকা করা হলো। তারমানে আগে সরকার ঘোষিত রেট ছিল ৮১ টাকা লিটার।

কিন্তু আমরা কি সেই দামে পেয়েছি? এখনও কি দাম ৭৬ টাকা হওয়ার পরও তা পাচ্ছি? কেন পাচ্ছি না, সেটাই এখন ভেবে দেখার বিষয়। তাহলে এই বিরাট অংকের একটা টাকার অংশ কার পকেটে যাচ্ছে? এখানে কে কে শেয়ার পাচ্ছে? তবে কি এটা একটা আইওয়াশ? জনগনকে বুঝানো হচ্ছে যে, "সরকার কম দামে সোয়াবিন তেল মানুষকে দিচ্ছে?" গতকাল পেপারে দেখলাম, আরো ৩০টাকা কমে যাবে তেলের দাম। খুব ভালো। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষরা কি এই দামে জিনিস পাবো? এবার আসা যাক চালের ব্যাপারে। কেউ কি আছেন, কম দামে চাল কিনছেন? আমি বা আমার জানামতে কোন লোকই কম দামে চাল কিনতে পারছেনা।

যে মিনিকেট চালের দাম ভোটের আগে ৪০/৪১ টাকা ছিল, সেই চালই এখন ৩৯/৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভ্যানে করে যে চাল বিক্রি হচ্ছে সেটা কি কেউ একবার খেয়ে দেখেছেন যে সেটা খাওয়া যায় কিনা? তাহলে তো চালের দাম কমেনি। শাক-সবজীর, তরকারীর অবস্থা তো আরো খারাপ। প্রত্যেকদিন প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়ছে। নতুন যে সবজী উঠেছে সেটার দামও প্রচন্ড বেশী।

তাহলে এমন হচ্ছে কেন? নতুন আলুরতো অনেক কম দাম হওয়া উচিত। কিন্তু সেটাও বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৪ টাকা কেজি দরে। বেগুন ২৮/৩০ টাকা। এক মুঠা পুঁই শাক ১২/১৫ টাকা। এছাড়া বাজারের আর অন্য কোন জিনিসের দাম কমেছে এমন আমার চোখে পড়েনি শুধু সোয়াবিন তেলের দাম ছাড়া (যদিও আমরা ন্যায্য দামে তেল কিনতে পারছি না)।

তাহলে লাভের গুড়টা কে খাচ্ছে? সেটা কি সয়ং ব্যাবসায়ী না জনগনের ভাগ্য নিয়ন্ত্রনকারীরা, নাকি ভাগে যোগে একসাথেই?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.