সমসাময়িক নতুন বা আকর্ষনিয় কোন বিষয়বস্তু নিয়ে লেখার একটা প্রত্তুতি নিয়ে বসেও - মনটাকে কিছুতেই ১৯৯১ থেকে ফেরাতে পারছি না। অবাধ্য সন্তানের মত মনটাকে বারবার টেনে-হিচরে ২০১০ এ ফেরাবার অপচেষ্টা বিফল হলো। ১৯৮৭মার্চের ষোল তারিখ আমার জীবনের একটি মধু ময় স্মৃতি ফ্রেমিং করে আছে।
ঐ বছরটি তে পরম করুণাময় আমাদের প্রেমকে পরিণয়ে সার্থক রূপ দিয়েছিলেন আর বছর ঘুড়তেই আমার কোল জুড়ে দিলেন ফুটফুটে শিশুকন্যা । বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে চিকিৎসক স্বামী চলে গেলেন জীবিকার অন্বেষনে সুদূর ইরানে।
কিছুদিনের মধ্যে আমাদের ভিসা ও চলে আসলো । আমার ভিতর একটা টান টান উত্তেজনা ! জীবনে এই প্রথম দেশের বাইরে যাচ্ছি।
মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইরান শাহ - এর শাসনামলের অবসানের পর সেখানে কট্টর মুসলমান শাসনতন্ত্র কায়েম হলো। ইমাম আয়াতুল্লাহ খোমেনী তুলে নিলেন ইসলামী শাসন ভার। ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠা পারস্য তখন দ্বৈত সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত।
ইসলামী রীতিনীতির দায়ভার অধিকাংশ মেনে নিতে বাধ্য সেখনকার নারীকুল নিজেদের কালো কাপড় (বোড়খা) দিয়ে ঢেকে চলায় তখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
আমাদের দেশ একটি মুসলিম দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত হলেও আমাদের সরকার বা সংস্কৃতি আমাদের নারী স্বাধীনতা ও রীতিনীতি তে যথেষ্ট উচ্চমনোভাব পোষণ করেন। সেই সুবাদে আমরা বাং লাদেশের মেয়েরা আমাদের ইচ্ছাশক্তি তে চলেছি এবং চলবো। কিন্তু আমার এ ইচ্ছাশক্তি কোন কাজে লাগলো না ওই কট্টর মুসলিম আনুশাসনের দেশে। ইচ্ছা শক্তির কাছে হার মেনে আমাকেও কচ্ছপের মত ঢুকতে হবে কালো আচ্ছাদনের ভিতর।
তারই জন্য যোগার যন্তর শুরু হলো। শেষ হলো আমার অপেক্ষার দিন।
আমার বাবার বড় ধরনের আপত্তি সত্যেও (এখানে উল্লেখ না করলেই নয়, আমার বাবা স্বাধীন বাংলা বেতার এবং জাগরণের গানের একজন বিশিষ্ট গীতিকার । তাঁর লেখা গান ৭১ এ, এমন কি নব প্রজন্মদেরও এখনো নাড়া দিয়ে যায়। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য ,"জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো" , নোংগর তোল তোল ইত্যাদি গান ) পি,আই,এ (পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস) -এ ইরানের রাজধানী তেহেরানের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।
সন্তানের মা হয়ে গেলেও আমার মনটা তখনো প্রামিকা থেকে দ্বায়িত্বশীল মা বা স্ত্রী হিসেবে পরিণত হয়নি তখনো । কেমন একটা নেশা নেশা ভাল লাগা ঘোরের মাঝে পৌছেঁ গেলাম পাকিস্থানের করাচি শহরে।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।