আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বর সম্পর্কে আলোচনা

আমি একজন সঙ্গীত অনুরাগী

■ স্বর: জীবজন্তু প্রভৃতির কন্ঠ হতে এবং কোন পদার্থের আঘাতে যে একপ্রকার শব্দ বা আওয়াজ (ধ্বনি) নির্গত হয় তাকে স্বর বলে। কিন্তু, সেই স্বর যখন সঙ্গীত উপযোগী হয় বা সেই স্বর শ্রবণে চিত্ত প্রসন্ন হয় তখন তাকে প্রকৃত সঙ্গীতের স্বর বলে। ■ সুর: বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রাদি হতে নির্গত ধ্বনিকে সাধারনভাবে সুর বলা হয়। যেমন: বাঁশীর সুর, হারমোনিয়ামের সুর, বীণার সুর, তানপুরার সুর, এসরাজের সুর ইত্যাদি। অনেকে চলতি কথায় শাস্ত্রীয় রাগগুলিকেও সুর বলে থাকেন।

যেমন: বিলাবল সুর, ভৈরবী সুর, ইমন সুর, বেহাগ সুর ইত্যাদি। ■ সঙ্গীতে স্বর -এর প্রয়োজনীয়তা: বাংলা, ইংরেজী বা যে কোন বিদ্যা শিখতে হলে কতকগুলি বর্ণ বা অক্ষরের সাথে প্রথমে পরিচিত হতে হয়। পরে, একাধিক বর্ণ বা অক্ষরের সংযোগে এক-একটি অর্থবোধক শব্দ এবং কয়েকটি শব্দের সংযোগে এক-একটি অর্থবোধক বাক্যের সৃষ্টি হয়, সঙ্গীত বিদ্যাতেও তেমনি কতকগুলি স্বর ব্যবহৃত হয় এবং পরে স্বর হতে সপ্তক, সপ্তক হতে ঠাট, ঠাট হতে রাগের সৃষ্টি হয়। অতএব, বিদ্যা বা ভাষায় যেমন বর্ণ বা অক্ষরের প্রয়োজন, সঙ্গীতেও ঠিক তেমনি স্বরের প্রয়োজন অপরিসীম। ■ স্বরগুলির শাস্ত্রীয় নামগুলি নিম্নে প্রদান করা হলো: সা - ষড়জ / খরজ রে - ঋষভ / রেখাব গা - গান্ধার মা - মধ্যম পা - পঞ্চম ধা - ধৈবৎ নি - নিষাদ / নিখাদ ■ স্বর কয়টি ও কি কি ? স্বর -এর শ্রেনীবিভাগসমূহ বর্ণনা: বাংলা ভাষায় যেমন ১২ টি স্বরবর্ণ ও ৪৮ টি ব্যঞ্জনবর্ণ, ইংরেজিতে ২৬ টি বর্ণ বা অক্ষর ও আরবীতে ৩০ টি হরফ আছে, তেমনি সঙ্গীতেও সর্বমোট ১২ টি স্বর আছে।

বাংলা ভাষায় যেমন স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ এবং ইংরেজী ভাষায় (ঠড়বিষ ্ ঈড়হংড়হধহঃ) অর্থাৎ দুই জাতীয় বর্ণ বা অক্ষর আছে, সঙ্গীতের স্বরগুলির মধ্যেও তেমনি প্রকারভেদ আছে। সঙ্গীতের এই ১২ টি স্বরকে ২ ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। (ক) শুদ্ধ স্বর ও (খ) বিকৃত স্বর ■ শুদ্ধস্বর ও বিকৃতস্বর: (ক) কোন একটি নির্দিষ্ট সুরকে সা ধরে, ঐ সা থেকে রে, রে হতে গা, মা হতে পা, পা হতে ধা এবং ধা হতে নি স্বরগুলি পূর্ণান্তরে (একটি বাদে একটি রূপে) অবস্থিত হলে, সেই স্বরগুলি হয় শুদ্ধ স্বর। শুদ্ধ স্বরগুলি হলো ৭ টি, যথা: স, র, গ, ম, প, ধ ও ন (খ) প্রতি দুটি স্বরের মধ্যে বাদ দেয়া অর্ধান্তরে অবস্থিত স্বরগুলি হয় বিকৃত স্বর। কিন্তু গা ও মা এবং শুদ্ধ নি ও সা স্বর দুটি পাশাপাশি অর্ধান্তরে অবস্থিত।

বিকৃত স্বর ৫ টি, যথা: রে (ঋ), গা (জ্ঞ), মা (ক্ষ), ধা (দ) ও নি (ণ)। কিন্তু এই বিকৃত স্বর আবার দুই ভাগে বিভক্ত, যথা: (ক) কোমল স্বর ও (খ) কড়ি স্বর। কোমল স্বর ৪ টি, যথা: ঋ, জ্ঞ, দ ও ণ এবং কড়ি স্বর ১ টি, সেটি হলো ক্ষ। অর্থাৎ ক্ষা স্বরটিকে কড়ি বলতে হবে এবং বাকী ৪ টি স্বরকে কোমল বলতে হবে। ■ উপসংহার: উপরোক্ত আলোচনায় আমরা জানতে পারি স্বর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও এর শ্রেণীবিভাগসমূহ।

রাগ ভেদে এই স্বর কখনও শুদ্ধ, কখনও কোমল ও কখনও কড়ি রূপে ব্যবহৃত হয়। প্রকৃতপক্ষে স্বরই হলো সঙ্গীতের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান একটি বিষয়, যা ছাড়া সঙ্গীতে কন্ঠসাধনা বা স্বরসাধনা সম্ভব নয়। প্রেক্ষিতে, একজন শিক্ষার্থীর জন্য স্বর সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত জরুরী এবং এর গুরুত্ব অপরিসীম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.