আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজিএমইএ ভবন রক্ষায় লিভ টু আপিল

রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্পে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ভবন অবৈধ ঘোষণা করে ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, বিজিএমইএর সভাপতি লিভ টু আপিলের আবেদন করেন। গত ২১ মে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় লিভ টু আপিল করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বিজিএমইএর কৌঁসুলি রফিক উল হক প্রথম আলো ডটকমকে জানান, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল হয়েছে। আদালত খুললে শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।


২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এতে স্থগিতাদেশ চেয়ে করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৫ এপ্রিল চেম্বার বিচারপতি হাইকোর্টের রায়ের ওপর ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। পরে এ সময়সীমা বাড়ানো হয়। গত ১৯ মার্চ ভবনটি ভেঙে ফেলতে হাইকোর্টের দেওয়া ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আবেদনে বলা হয়, সরকার বিজিএমইএকে জমি বরাদ্দ দেয়।

ভবন নির্মাণে রাজউকের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। রাজউক মাঝে মধ্যে অনুমতির বিষয়টি জানিয়েছে এবং ওই অনুমোদনের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, বিজিএমইএ যাঁদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাট বা অংশ বিক্রি করেছে, তাঁদের টাকা ফেরত দিতে হবে দাবি করার ১২ মাসের মধ্যে। কারণ তাঁদের সঙ্গে চুক্তি ছিল বেআইনি। কেননা বিজিএমইএর ওই ভবন নির্মাণ বা ভবনের অংশ কারও কাছে বিক্রি করার কোনো অধিকার ছিল না।

তবে ক্রেতারা নিজেরাও জানত বা তাঁদের জানা উচিত ছিল, এই জমির ওপর বিজিএমইএর মালিকানা নেই ও ভবনটি বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। আদালতের মতে, তাঁরা কোনো সুদ পাওয়ার দাবিদার নন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ওই ভবনটি সৌন্দর্য ও মহিমান্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো। এই ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটা শুধু হাতিরঝিল নয়, গোটা ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে। কাজেই সরকার ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ওপর নির্দেশ হলো, ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে।

ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প।
রায়ে আরও বলা হয়, এখানে দেখা যাচ্ছে যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, অর্থাত্ যাদের প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, তারাই মোট ৬ দশমিক ২১ একর জমি অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় ছেড়ে দেয় একই বছরে, অর্থাত্ ১৯৬০ সালে। পরে ১৯৯৮ সালে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো ওই জমি একটি স্মারকের মাধ্যমে বিজিএমইএকে এর নিজস্ব ভবন তৈরির জন্য বেআইনিভাবে প্রদান করে। অথচ রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ২০০৬ সালের আগ পর্যন্ত আদৌ ওই জমির মালিক ছিল না।


জানা যায়, ২০১০ সালের ২ অক্টোবর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদন ছাড়া বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। ওই প্রতিবেদনটি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মুনিরউদ্দিন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রুলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্টে রায় ঘোষণা করেন।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.