আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারী চাকরী ওরফে গু জব

মানুষ হবার প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই গুজব উঠেছে যে বিসিএসের প্রশ্ন নাকি ফাঁস হয়েছে। আ জব তো বেশীর ভাগ সরকারী চাকরীই তো গু জব। এই গু জবের জন্য মানুষ এতো পাগল??? বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করে এই গু জব প্রাপ্তির জন্য। দিন নাই, রাত নাই সব সময় পড়া আর পড়া!!! ৮ নাম্বার বাসে যারা কন্ট্রাকটারি করে তারা প্রতিদিন ১০০০ টাকার উপরে উপার্জন করে। সপ্তাহে ৫ দিন ডিউটি দিলে মাসে ২০,০০০।

আর গু জবের ২০,০০০ টাকা সেলারি (উপরি ইনকাম ছাড়া) অনেক কিছু। এই গু জবে ঢোকা যেমন কষ্টের বের হওয়াও তেমনি কষ্টের। মানুষ বৈচিত্র্য খুজে, কর্ম ক্ষেত্রেও মানুষের বৈচিত্র্যতা মানুষকে দক্ষ করে তুলে। ৫০ বছর ধরে একই ফিল্ডে কাজ করা অথবা ঐ ফিল্ডেই প্রোমোশন হওয়া অনেকটা একঘেয়েমি ছাড়া কিছুই না। গু জবে আপনার জন্য নির্ধারিত চেয়ারে একটা অন্য শিক্ষিত মানুষকে বসালেও সেও আপনার কাজ করতে পারবে।

অর্থাৎ আপনার এমন কোন বালের দক্ষতা নেই যা দিয়ে আপনি ঐ চেয়ারটির শোভা বর্ধন করবেন। রুটিন মাফিক কিছু কাজ আর কলমের খোঁচা যেকোনো শিক্ষিত মানুষই মারতে পারে। কর্ম ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যতা অর্থনৈতিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করে। আপনি একটা জব থেকে আরেকটা জবে তখনই শিফট করবেন যখন সেই জবটি আপনাকে বেটার ফ্যাসিলিটি এবং বেটার সেলারি দিবে। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে করতে আপনার দক্ষতা বাড়বে, যেখানে গু জবে একই পরিবেশে অফিসে আসা ও যাওয়া এবং মধ্যের সময় গুলো বোরিং আড্ডা দিয়ে আপনার সময় কাটবে।

যারা চেলেঞ্জিং তারা কখনই গু জব করে না। বরং যাদের চ্যালেঞ্জ নেবার সামর্থ্য নেই, যারা নিরাপদ ভবিষ্যতের অন্বেষণ করে তারাই এই গু জব করার স্বপ্ন দেখে। যদিও বাস্তবতা হল আমাদের দেশে দ্বিতীয় ধরনের মানুষিকটার মানুষই বেশী। গু জব করা অবস্থায় ব্যাক্তি স্বাধীন ভাবে তার মত প্রকাশ করতে পারে না। সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলার অধিকার থাকে না তার।

সরকারের সকল অন্যায় অত্যাচারও সে মুখ বুঝে সহ্য করতে বাধ্য হয়। প্রচলিত সমাজের চিন্তার বাইরে গু জব করা ব্যাক্তি তার চিন্তাকে কখনই প্রকাশ করতে পারে না। এই কারনেই তসলিমা নাসরিন এই গু জব ছেড়ে দেন। গু জব করা ব্যাক্তির সভা সমিতি সংগঠন করার অধিকারও শর্ত শাপেক্ষ। অনেকেই বলেন যারা এতো প্রতিযোগিতার মধ্যে নিজেকে প্রমান করে তারা আসলেই মেধাবী।

কিছু গদবাধা অবজেক্টিভ ও প্রশ্ন পড়ে মেধাবী কতটা হওয়া যায় তা বিতর্কিত তবে চাকরী পাবার ২ মাস পর থেকেই ঐ মেধাবী তার মেধা হারানো শুরু করে। ২ বছর পর তার মেধা সে যে কিছুই দেখাতে পারবে না এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আপনি কাকে মেধাবী বলবেন, যে অফিসে বসে ২ টা কলমের খোঁচা মারে তাকে না যে বাসের প্রত্যেকটা যাত্রী কোথায় নামবে উঠবে তা হিসেব রেখে সঠিক ভাড়া আদায় করে তাকে??? আমি এই গু জবকে কখনই পছন্দ করি না। তবে আমার বাবা মার স্বপ্ন তার ছেলে একটি গু জব করুক। বিয়ার বাজারেও গু জব করা বলদ ভালো দামে জবাই হয়।

তবে লজ্জার কথা আজকে আমি প্রস্তুতি ছাড়াই এই গু জবের পরীক্ষা দেই। মা আমাকে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে (তার স্বপ্ন, তার আশা, তার আকাঙ্ক্ষা ……) পরীক্ষা দিতে বাধ্য করে। এই বৃষ্টিতে একেবারে সকালে ঘুমেকে গুম করে গু জব নিয়ে কামড়া কামড়ি করতে আমিও গেছিলাম। প্রশ্ন বেশ সহজ এসেছে। আমি যেগুলো পারি না সেগুলোও ভরাট করছি (গোল্লা ভরাট করতে আসলেই খুব মজা)।

নেগেটিভ মারকিং করে যা ফলাফল আসবে তাতে মা কে যেন আমি বলতে পারি যে মা আমি চেষ্টা করেছিলাম। কারো কর্মানুভুতিতে আঘাত করে থাকলে দুঃখিত। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.