সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com
মকবুল ফিদা হুসেন কাতারের নাগরিকত্ব নেওয়ার পর তারে নিয়া মিডিয়ার নিউজগুলা খেয়াল করতেছিলাম। (Click This Link)। সর্বসাম্প্রতিক খবর হইলো ফিদা হুসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলার কার্যকারিতা রদ করার জন্য একজন উচ্চ আদালতে আবেদন করছিলেন। উচ্চ আদালত জানায়ে দিছে, মামলাগুলা যেহেতু ফৌজদারি আর এই গুলা যেহেতু ভারতের বিভিন্ন স্থান থিকা বিভিন্ন ব্যক্তি দায়ের করছেন সেইহেতু এই মামলার কার্যকারিতা রদ করার এক্তিয়ার উচ্চ আদালতের নাই।
মানে দাঁড়াইলো এই যে, ফিদা হুসেন স্বরস্বতী, ভারতমাতা ইত্যাদি আঁকার পর তার বিরুদ্ধে ভারতের কোনাকাঞ্চিতে যে অসংখ্য মামলা দায়ের করা হইছে সেইগুলার কার্যকারিতা বহাল থাকতেছে। অর্থাৎ, যদি আদালতগুলা চায়, তাইলে ভারতের আনাচে কানাচে ছড়ায়ে থাকা আদালতগুলাতে হাজিরা দিতে বাধ্য। প্রশ্ন হইলো ১৯১৫ সালে জন্ম নেওয়া একজন বৃদ্ধের পক্ষে কি এমনে কইরা ভারত ঘুইরা হাজিরা দিয়া বেড়ানো সম্ভব? সো ফার আই ক্যান রিকল, ফিদা হুসেনের পক্ষে আইনজীবী আবেদন করছিলেন যে, ওনারে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে রেয়াত দেওয়া হউক। কিন্তু আদালত সেইটারে বাতিল কইরা দেয় এবং ফিদা হুসেন হাজিরা দেওয়ার হুজ্জত থিকা বাঁচার তাগিদে দেশান্তরি হন।
এখন প্রশ্ন হইলো, নাগরিকরা কি মামলা কইরা ভুল করছেন? মামলা করার অধিকার সবারই আছে।
যে কেউ বিক্ষুব্ধ হইলে মামলা করতে পারে। এমনও হইতে পারে যে, একই বিষয়ে বিভিন্ন স্থানে মামলা হইলো। একই অভিযোগে, একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে মামলা হইলে বিচার বিভাগ কি আঙ্গুল চুষবে? স্বাভাবিক যুক্তি হইলো, মামলার তদন্ত, বিচার, সাক্ষ্য-সাবুদ ঠিক মতো হওয়া। এই কাজটা করতে একশ জায়গায় মামলা চালানোর তো দরকার নাই। উচ্চতর আদালত এই ক্ষেত্রে একটা জায়গা নির্ধারণ কইরা দিলে সেইখানে মামলা চলতে পারে।
আমি জানি না, এইরকম কোনো আইন আছে নিকি। তবে, সাধারণ জ্ঞানে বুঝতেছি এইরকম হওয়া দরকার। কারণ, শাস্তি ফাঁসি হবে নাকি যাবজ্জীবন সেই ভয়ে না যখন হাজিরা দেওয়ার ভয়ে আসামী দেশ ছাড়ে তখন বুঝতে হবে নাগরিক অধিকারের নামে হাজার জায়গায় মামলা দেওয়ার ঘটনা খালি চোখে নাগরিক অধিকার হইলেও, এইটা একটা বদমাইশি। কারণ, কেউ গণঅসন্তোষের কাজ করলে তার বিরুদ্ধে মামলা হইলে সেইটা সংবাদপত্র মারফত সবাই জানতে পারে। এক্ষেত্রে নিত্যনতুন মামলার কোনো দরকার থাকে না, যদি না মামলাকারী অভিযুক্তকে হুজ্জতির মধ্যে ফেলতে চান।
ফিদা হুসেনের মামলা খেয়াল করতে করতেই দেখলাম, বাংলাদেশেও সেম ঘটনা ঘটাইতেছে সরকার সমর্থকরা। সরকারের হাতে ক্ষমতা, সরকারের হাতে পুলিশ, প্রশাসন। তারপরও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের মামলা অ্যাক্টিভিজম দেখলে অবাক হয়া যাইতে হয়। এর মধ্যে বেশ কিছু লোকের বিরুদ্ধে গণমামলা দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এই লোকগুলা বিএনপির।
হইতে পারে, এইলোকগুলা আওয়ামী লীগের মতো খারাপ বা তাদের চেয়েও খারাপ। আর খারাপ বইলা তাদের হুজ্জতির কাহিনী আমরা খেয়াল করতেছি না। কিন্তু কচু কাটতে কাটতে আওয়ামী কর্মীরা যেমনে ডাকাইত হয়া উঠতেছে তাতে কাইলকা এই হুজ্জতি অন্য কারো কপালে জুটতে পারে। বিশেষ কইরা যে কোনো মিডিয়া সম্পাদক এই হুজ্জতির মধ্যে পড়তে পারে। যদ্দুর মনে পড়ে, তসলিমা নাসরিন ছাড়া এই রকম সংগঠিত মামলা হুজ্জতি সাম্প্রতিক কালে দেখা যায় নাই।
খিয়াল করেন, আমার দেশ পত্রিকায় যখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলো তখন ওই পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে আওয়ামী পন্থীরা দেশের আনাচে কানাচে মামলা দেওয়া শুরু করলেন। একই ভাবে ভিওআইপি বিজনেসের অভিযোগ করলে জয়নাল আবেদিন ফারুকের বিরুদ্ধেও মামলা দেওয়া শুরু হইলো। আরও কিছু উদাহরণ দেওয়া যাবে। এই ঘটনাগুলার ধারাবাহিকতায় বুঝা যাইতেছে, সরকারি ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারের বাইরে আদালতি হুজ্জতি কায়েম করার এক ধরনের রাজনীতির চর্চা করতেছে আওয়ামীপন্থীরা। নিশ্চিত করে বলা যায়, মাহমুদুর রহমান বা জয়নালের বাইরে যে কেউ যদি এইরাম সংবাদ পরিবেশন করে বা এইরাম তথ্য দেয় তাইলে তিনিও একই হুজ্জতির মধ্যে পড়বে।
কিন্তু তার আগে এই ঘটনা নিয়া কথা উঠবে না বলেই আশা করা যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।