আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডিজিটাল না এ্যানালগ বাংলাদেশ ? খোলা চিঠি কার বরাবর- সরকার না আমজনতা?

আমি কিছু বলতে চাই...........

খালেদুর রহমান শাকিল, ঢাকা। স্বপ্নের দেশ বাংলাদেশ; প্রাণ প্রিয় এ দেশে বার বার ছুটে এসে দেশ ও জাতির অগ্রগতিতে পুনরায় প্রাণ দিতে মন চায় হাজারও দেশপ্রেমি বাঙ্গালীর। যারা এ দেশের মুক্তি সংগ্রামে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন নির্দিধায় অকপটে নিজেদের জীবন বাজি রেখে। আর এ দেশের নব প্রজন্ম হারিয়ে ফেলছে এ স্বপ্নের দেশের সেই প্রসূতি ইতিহাস জানার অধিকার, আমাদেরই গড়া অন্ধকার রাজনীতির ধূম্রজালের মাধ্যমে। ১৯৪৮শে শুরু হওয়া বাঙ্গালী ভাষা আন্দলোন, ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে সৃষ্টি হওয়া নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলীম লীগ ও ১৯৫০ সালের দাস প্রথার বিলোপসাধনের রথ যাত্রার মাধম্যেই তা চরম পরিনতিতে উপনিত হয় ১৯৫২’র ২১শে ফেব্রুয়ারীতে; আজ আমারা যে ভাষায় লিখার, বলার ও শুনার স্বাধীন অধিকার পেয়েছি আর সে ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবীতেই জলাঞ্জলী দিতে হয়েছিল একরাশ নিস্পাপ প্রানকে।

আর তারি সাথে এক আত্নিক দগ্ধতায় তৎপরবর্তিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল স্থপতি জনাব সিরাজুল আলম খান এর নেতৃত্তে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছত্রছায়ায় বাঙ্গালী জতির উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকায় অবতীর্ন গোপন সংগঠন স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস বা স্বাধীন বাংলা বিপ্লবি পরিষদ নামে পরিচিত (১৯৬২) থেকে শুরু হওয়া স্বাধীনতা মুক্তি সংগ্রামের প্রতিবাদী পথ চলার প্রথিকৃৎ সিরাজুল আলম খান ১৯৪৮শের ৪ঠা জানুয়ারী জন্ম নেওয়া ছাত্রলীগের ১৯৬৩-৬৪’র ও ১৯৬৪-৬৫’র এই দুই বছরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারান সম্পাদক হয়ে ছাত্র সংগ্রামকে প্রবলবেগে তরান্বিত করেন তার প্রধান দুই সহযোগী যোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদকে সাথে নেওয়ার মধ্য দিয়ে। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবার জন্য সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মণি, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে নিয়ে নিওক্লিয়াস কর্তৃক গড়া তাদেরই রাজনৈতিক উইং বি এল এফ (মুক্তিবাহিনী) যা ১৯৬৯-১৯৭০ এ মুজিব বাহীনিতে রূপান্তরিত হয়ে বাংলার মানচিত্র সম্বলিত প্রথম পতাকাটির উত্তলন ও স্বাধীন বাংলার ইশতেহার ঘোষনার দুইটি গুরু দ্বায়িত্ত কাধে দেওয়া হয় যথাক্রমে জনাব আ স ম আব্দুর রব ও জনাব সাজাহান সিরাজ এর উপর। ২রা মার্চ ১৯৭১ সালে জনাব আ স ম আব্দুর রব কর্তৃক বাংলার জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হওয়া ও ৩রা মার্চ জনাব সাজাহান সিরাজ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইশতিহার পাঠের মাধ্যমে উপনিবেশে অনেকটা পথ এগিয়ে যায় জাতির মুক্তি সংগ্রামের ডাকের। যার সমন্বয়ে ১৯৭১’এর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের সেই অবিস্মরণীয় ভাষন এনে দেয় সিংহভাগ স্বাধীনতার আলোকস্পিত শিখা। যার দীর্ঘ ৯ মাসের বর্ননাতীত ত্যাগ তিতিক্ষার মাধ্যমে অবশেষে সফলতা আসে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১।

আর বাংলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকুক বাংলার জাতীয় জাগরনের প্রকাশ্য মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং নেপথ্যে মহানায়ক সিরাজুল আলম খানের নাম। শুধু তাই নয় জাতির মুক্তি সংগ্রামে সিরাজুল আলম খান কর্তৃক ১৯৬২ তে গড়া সেই নিওক্লিয়াস জতিকে দিয়েছে ১৯৬২-’৭১ পযর্ন্ত বিশ্ব কাপাঁনো ছাত্র আন্দোলন, ৬-দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার আন্দোলন, ১১-দফা আন্দোলন পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়্ন, স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলনে ‘জয় বাংলা’ সহ সকল স্লোগান নির্ধারন এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে “...এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” বাক্যসমুহের সংযোজন, ’৬৯-’৭০ সনে গন-আন্দোলনের চাপে ভেঙ্গে পড়া পাকিস্তানী শাসনের বিপরীতে ছাত্র-ব্রিগেড, যুব-ব্রিগেড, শ্রমিক-ব্রিগেড, নারী-ব্রিগেড, কৃষক-ব্রিগেড, সার্জেন্ট জহুর বাহিনী যার প্রধান কাজ ছিল ভেঙ্গে পড়া পাকিস্তানী শাসনের পরিবর্তে যানবাহন চলাচল, ট্রেন-স্টীমার চালু রাখা, শিল্প-কারখানা উৎপাদন অব্যাহত রাখা এবং থানা পযার্য়ে আইন-শৃঙ্খ্লা রক্ষা করার দায়িত্ব পালন, ১৯৭০ সনের নিবাচর্নে অংশগ্রহণ এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের নিবার্চিত করার দায়িত্ব পালন, নিবাচর্নে অংশগ্রহণের মাধ্যমে গণ-আন্দোলনে গড়ে ওঠা জনমতকে সাংবিধানিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে গণরায়ে পরিণত করার কৌশল নির্ধারণ করা, ১৯৭০-’৭১ সনে বি.এল.ইফ এর সদস্য সংখ্যা ৭ হাজারে এসে পৌছালে এদের প্রত্যেকেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে উন্নত সামরিক ট্রেনিং দিয়ে ‘মুজিব বাহিনী’ নামে মুক্তিযুদ্ধের কাযর্ক্রম পরিচালনা করার দায়িত্ব প্রদান, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্হ ১১টি সেক্টরের পাশাপাশি ৪টি সেক্টরে বিভক্ত করে বি.এল.এফ-এর সশস্ত্র সংগ্রামের পরিকল্পনা ও কৌশল ছিল কেবল ভিন্ন ধরনের নয়, বরং অনেক উন্নতমানের এবং বিজ্ঞানসম্মত সহ নানা কাযর্ক্রম। অপরদিকে বাঙ্গালি জাতীয় জাগরনের প্রকাশ্য ও অবসংবাদিত মহা নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯৩৮ সালে এক রাজনৈতিক জনসমাবেশে জাতীয়তাবাদি ভাষনের জন্য কারারুদ্ধ হন। শুরু হয় তার বাঙ্গালী জাতির মুক্তির সংগ্রাম। প্রথমে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক হিসাবে ১৯৪৬ সালে নিবার্চিত হন।

পরবর্তীতে তিনি ১৯৪৭ সালে পূব© পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ তৈরি করেন। এই নেতা ১৯৪৭ সালের নভেম্বরে পূব© পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের নারায়নগঞ্জে এক আলোচনা সভায় প্রথম “বাংলাদেশ” নামটি ব্যবহার করেন। তৎপরবর্তীতে তিনি কারাবন্দী থাকা অবস্থায় ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন আওয়ামী মুসলিমলীগের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম-সম্পাদক হিসাবে নিবার্চিত হয়ে জুলাই মাসে মুক্তি পান কিন্তু এ মুক্তি ছিল ক্ষণিকের। অচিরেই আবার তিনি বন্দি হলেন অনসন ধর্মঘটের জন্য। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের বীরদের জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অনসন ধর্মঘট করেন।

জাতির উদ্ধারের সংকটময় সময়ে ১৯৫৩ সালে এই লরাকু নেতাকে আওয়ামী মুসলীমলীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদানের মধ্য দিয়ে ১৯৫৪ সালের ১২ই মে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফজলুল হক এর নেত্রিত্তে একটি নতুন মন্ত্রনালয় গঠন করা হয় আর এই মন্ত্রী পরিষদে লরাকু এই নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সবর্কনিষ্ট নেতা হিসাবে বরন করে নেওয়া হয়। কিন্তু এ লড়াইকে পথ পিষ্ট করার পায়তারায় ১৯৫৪ সালের ৩০শে মে ফজলুল হক এর এ মধ্যবর্তী সরকারকে বিলুপ্ত করা হয় এবং তাদের প্রধানতম শত্রু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এবার বেশি সময় আটকে রাখতে পারেনি প্রতিবাদী এই নেতাকে ঐ বছরেই ১৮ই ডিসেম্বরে মুক্ত করে দিতে হয়। সময় আসে ঘুরে দাড়ানোর; ১৯৫৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঘটে যায় আওয়ামী মুসলিমলীগের নাম পরিবর্তন। নুতুন রুপে জন্ম নেয় আওয়ামী মুসলিমলীগ থেকে ‘‘মুসলিম’’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু ‘‘আওয়ামীলীগ’’।

বাংলার মুক্তি জাগরনে যাতে এই প্রতিবাদী নেতা মাথা তুলে দাড়াতে না পারে এরি লক্ষে ২রা জুন ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের নিবার্চকমন্ডলীর সভার সদস্য হিসাবে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবার্চিত করা হয়। আর তার ঠিক তিন মাস পরে সেপ্টেম্বর মাসে তাকে আতাউর রহমান কর্তৃক শিল্প, বাণিজ্য ও দূর্নীতি দমন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী করা হয়। রাজনীতির এই কাল মরন জাল বুঝতে পেরে তিনি ১৯৫৭ সালের মে মাসে বাংলার মুক্তি ও দলের স্বার্থে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। এই লরাকু নেতাকে কোন ক্রমেই দমাতে না পেরে ১৯৫৮ সালের অক্টোবর মাসে স্বৈর শাসক জেনারেল আইয়ুব খান ১২টি মিথ্যা অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেন। পরবর্তীতে ক্রমাগতভাবে নিউক্লিয়াস কর্তৃক আন্দোলন তী©ব হতে থাকে।

আর তা ১৯৬৬ সালের ৫ ও ৬ই ফেব্রুয়ারী জাতীয় আলোচনা সভায় শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম এই নিউক্লিয়াস কর্তৃক সমন্বিত করা সেই ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবী ঘোষণা করেন আর গ্রেফতার হন। আর এই মহান নেতাকে ফাসানোর জন্য তার বিরুদ্ধে ১৯৬৮ সালের জানুয়ারী মাসে করা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। আন্দোলনের ঝড় উঠে বাংলার মাটিতে শুরু হয় গন অভ্যুত্থান পা পিছাতে থাকে জেনারেল আইয়ুব খানের আর তাতে ১৯৬৯ সালের ২২ শে ফেব্রুয়ারী আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তুলে নিতে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করে দিতে বাধ্য হন আইয়ুব খান। বাংলার জনগন এক অবিস্মরনীয় অভ্যর্থনা দেয় ১৯৬৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত শেখ মুজিবুর রহমানকে সাথে অন্যান্য সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের পক্ষে জনাব সিরাজুল আলম খান ও জনাব তোফায়েল আহমেদ এর সুপারিশে শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলার জনগন ভূষিত করে সেই উপাধি ‘‘ বঙ্গবন্ধু ’’ বাংলার বন্ধু হিসাবে। ঘটনার পরম্পরায় ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যু বার্ষিকিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দেন স্বাধীন পূব© পাকিস্তানের নাম হবে বাংলাদেশ।

পাকিস্তনের সাধারন নিবার্চনে পূব© পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামীলীগ ১৬৭টি আসন ১৯৭০ এর ৭ই ডিসেম্বর জয় লাভ করে। কিন্ত জেনারেল ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা দেন। শুরু হল ১৯৭১ সময় আসে প্রতিবাদের ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ সেই ঐকিহাসিক ভাষণে তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন “...এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”। ৭১’এ ২৫শে মার্চ কাল রাত্রিতে শুরু হয় পাক বাহীনির ববরর্তা; নিরিহ মানুষের হত্যা যজ্ঞের নির্মম খেলা তাই পাক বাহীনির হতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেস এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বধীনতার ঘোষণা দেন ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাসা থেকে। ১লা মার্চ থেকে বিভিন্ন সময় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেনামী এক ভদ্রলোক বা বলতে পারি ছদ্মবেশে একটি আগাম তারবার্তা আসত জনাব আ স ম আব্দুর রবের কাছে ইকবাল হলের প্রভোষ্টের টেলিফোনে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার প্লান-পরিকল্পনা নিয়ে।

ঠিক এমনি একটি ফোন আসে ২৫ শে মার্চ বিকেল চারটায় শুধু বললেন – ‘‘ রাত ১২-০ মি: ক্রাকডাউন হবে। আপনারা য়েখানে পারেন নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। ’’ অতপর সন্ধা ছয়টা নাগাদ জনাব আ স ম আব্দুর রব, জনাব সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি, জনাব আব্দুর রাজ্জাক, জনাব তোফায়েল আহমেদ সহ অনেক ছাত্র-যুব নেতা শেখ মুজিবের বাসায় যান। তারা শেথ মুজিবকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার একটি পরিকল্পনা পেশ করেন। শেখ সাহেব রাজী হলেন না।

তিনি বললেন ‘‘ তোরা চলে যা। আমার জন্য চিন্তা করিসনা। ’’ জনাব আ স ম আব্দুর রব তখন বললেন- ‘‘ আমাকে তো পূব© সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাত ৮টায় বুড়িগংগা পার হতে হবে। আপনার খবর জানবো কিভাবে?’’ বঙ্গবন্ধু এ কথার কোন উত্তর না দিয়ে জনাব আ স ম আব্দুর রব এর হাতে ১২-১৪ হাজার টাকা তুলে দিয়ে বিদায় দিলেন। ২৫শে মার্চ রাত ৮টার সময় বেংগল রেজিমেন্টর ৫ জন সৈনিক নিয়ে জনাব আ স ম আব্দুর রব বুড়িগংগা পার হলেন।

কলকাতা যাওয়ার পথে জনাব আ স ম আব্দুর রব মুহূর্মুহ ট্রেসার বুলেটের আওয়াজ পান তখন ১১-১ মি: চেয়ে দেখেন ঢাকা শহরের আকাশ-বাতাসে আগুনের ফুলকি ছুটছে। ‘বাচাঁও বাচাঁও’ আর্তনাদে বাংলার সমর্গ্র ঢাকা বুঝি কাপঁছিল তখন। এমনি করে শুরু হলো কুখ্যাত ২৫ শে মার্চের কাল রাত্রির নির্মম হত্যাযজ্ঞ। জনাব আ স ম আব্দুর রব তখন নিস্ফল আক্রোশে অর্ন্তদাহে প্রজ্জলিত হয়ে উঠলেন। ঢাকার দিকে মুখ ফিরিয়ে বিড়বিড় করে বললেন- ‘‘জান থাকতে ছাড়বোনা তোদের।

যে কোন মূল্যে এই নিষ্ঠুরতার প্রতিশোধ নেব। ’’ শুরু হয়ে গেল মুক্তি যুদ্ধ গঠন হল মুজিবনগর সরকার স্বাধীনতা পেল বাংলাদেশ ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১। পাকিস্তানের সামরিক কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়া হল ১৯৭২ ৮ই জানুয়ারী আর মুক্তির পর এই জাতির পিতা দেশে ফিরলেন ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী শুরু হল দেশ পরিচালনা করা। ১৯৭৩ সালের ৭ই মার্চ সাধারন নিবার্চনে আবার সরকার গঠন করলেন। তৎপরবর্তীতে ১৯৭৩ এর ২৩শে মে তাকে জুলিও কুড়ি শান্তি পদক প্রদান করা হয়।

দেশের অর্থনৈতিক স্বাতন্ত্র্যে জন্য ১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাকসাল (বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক-আওয়ামীলীগ) গঠন করেন। কিন্তু বেশি দিন আর নয় ১৯৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট স্ব-পরিবারে এক রাজনৈতিক হত্যার স্বীকার হন এই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতীয় জীবনের আকাশে নেমে আসে অন্ধকারচ্ছন্ন এক মেঘ শুরু হয় অকল্পনিয় ঝড়। ‘‘স্বাধীনতা অজর্নের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন’’— প্রবাদ বাক্যটি আজ মনে হয় ব্যাখ্যা করা সাবার কাছেই খুবই সহজ কাজ। ‘স্বাধীনতার অধ্যায় দু’টো’ একটি স্বাধীনতার গর্ভাবস্থা আর আরেকটি স্বাধীনতার জন্ম।

স্বাধীন বাংলার এ অধ্যায় দুটি সম্পর্কে স্বাধীনতা পরবর্তী নতুন প্রজন্ম কি জানে? সেই দেহ ও মন কাপাঁনো ইতিহাস জানে কি বাংলার আপামর আমজনতা? প্রশ্ন কার কাছে; সরকার? আমজনতা? না জাতির নিকট? প্রথমেই স্বাগত জানাই বাংলার জাতীয় জাগরনের প্রকাশ্য মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর কন্যা গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তার দু:সাহসী উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে আবারো আমাদের শুরু থেকে শুরু করতে হবে। শুধু নতুন প্রজন্মের যারা জানেনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অধ্যায় দুটোর কথা। জাতিকে আবারো একবার যুদ্ধ করতে হবে।

ফিরে যেতে হবে সেই প্রবল ঝড় উঠানো আন্দলোনের ইতিহাসের দিকে। কোথায় সেই নিউক্লিয়াস? রাজাকার-মৌলবাদী-যুদ্ধাপরাধী তথা সেই মীরজাফরদের ষড়যন্ত্রকে রুখে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দু:সাহসী উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে আবারও পুন:জন্ম নিতে হবে সেই ১৯৬২’র নিউক্লিয়াসকে সেই ছাত্রলীগ তথা ছাত্র সংগ্রামকে। কিন্ত এই ছাত্রলীগ কি সেই ১৯৪৮ এর ছাত্রলীগ না অন্য কিছু? আর এরই সুযোগে বুক ফুলে কথা বলার সাহস পেয়ে বসেন অনেকেই। আর তাদেরই এক নেতা গত ১৯ শে মার্চ ২০১০ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের প্রধান অতথির বক্তব্যে মন্তব্য করে বলেন “ বর্তমান সরকারের পতনের জন্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগই যথেষ্ট। ” এখনেই সময় জাতীয় জাগরনের।

এখনেই সময় এ্যানালগ বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত করার। আর তার জন্যই আবারো জাগ্রত হতে হবে সেই ছাত্র-জনতাকেই। জানাতে হবে জাতির এই জন্ম ইতিহাস ও প্রতিবাদী সেই দিনগুলোর কথা। স্বাধীন বাংলার মাটিতে কোন মীরজাফর তথা রাজাকার-মৌলবাদী-যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক আসনে বসে এ দেশকে লুটপাট করবে তা এদেশের আমজনতা আর হতে দিবে না। আজ আমরা রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই, বাংলার মাটিতে সকল হত্যার বিচার চাই।

ডিজিটাল না এ্যানালগ বাংলাদেশ ? প্রশ্ন কার কাছে করব? বুঝে উঠা বড় দায়। জাতি দীর্ঘ ৩৯ বছর পর আবারো একবার স্বপ্ন দেখবে বলে আমার মনে হয়। আর সেটা হল এ্যানালগ বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত করা। তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়ন করলেই কি বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হয়ে যাবে? আমার মতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রথম যেটা দরকার সেটা হল সময় নিয়ন্ত্রন করা যা আমাদের দেশের জানযোট বা রাস্তার সংকীর্নতার কারনে সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা বিভাগ থেকে অন্যান্য বিভাগের জনগনকে যার যার নিজস্ব বিভাগে ফেরত পাঠানো।

ঢাকা সহ অন্যান্য ৬টি বিভাগকে ঢাকার ন্যায় স্বয়ংসম্পূর্ন করে গড়ে তোলতে হবে আর তার জন্য প্রতিটি বিভাগের প্রতিটি জেলার প্রথম একটি করে থানাকে নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। প্রতিটি বিভাগের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা হতে হবে ৩য় জেনারেশন তথ্য প্রযুক্তির সমন্বয়। অফিস, আদালত, ব্যাংক-বীমা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, শিল্প-কলকারখানা সহ নগরায়নের সকল সুযোগ দিয়ে পুন:প্রতিষ্ঠা করতে হবে প্রতিটি বিভাগকে। সকল বিভাগের সাথে ওয়েব সার্ভার কান্কেটিভিটি থাকতে হবে। এই সার্ভারকে সরকার এর একটি নিজস্ব সংস্থা দিয়ে নিয়ন্ত্রন করবে।

আর এর মাধ্যমে সরকার পুরো বাংলাদেশের তথ্য নিয়ন্ত্রন করতে পারবে শুধু তাই নয় ভিডিও ক্যামেরা ও স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে শহর ও গ্রাম পযার্য়ের সন্ত্রাস সহ ট্রাফিক কন্ট্রল করা যাবে। সচিবালয়কে পুরো-পুরি আধুনিকায়ন এর আওতায় আনতে হবে। সবর্পরি আমরা যদি আমাদের মূল্যবান সময় বাচাঁতে পারি তাহলেই আমরা উন্নতি করতে পারব। দেশের প্রতিটি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনিকে স্বচ্ছ করে নতুন আঙ্গিকে তৈরি করতে হবে। প্রতিটি বিভাগে একটি বিশেষ ডাক বিভাগ তৈরি করতে হবে যেখানে সাধারন আমজনতা তাদের অভাব-অভিযোগ লিখিত আকারে পোষ্ট করতে পারবেন।

আর সেটা অতীব জরুরী ভিক্তিতে সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে বাস্তববাদী সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। আদালতের মামলা বছরের পর বছর চলতে থাকে এই পদ্ধতির পরিবর্তন আনতে হবে। দেশের প্রতিটি আইন শৃঙ্খলা ও দেশ রক্ষাকারী বাহীনিকে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন কাজে লাগাতে হবে। ৭১’এ যদি কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-পুলিশ-সামরিক-শিক্ষক-নেতা-মা-বোন-বাপ-ভাই সহ কাধেঁ কাধঁ রেখে যুদ্ধ করতে পেরেছে; দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য তবে কেন আজ নয়? জাতির এ সংকটময় সময়ে আবারো ঐক্যবধ্য হতে হবে।

জীবন রক্ষায় সেচ্ছা নিবার্সীত বুদ্ধিজীবিদের দেশে স্ব-সম্মানে ফিরিয়ে এনে সরকারের উপদেষ্টা মন্ডলীতে বসিয়ে সেই ১৯৬২’র নিউক্লিয়াসের মত আল্ট্রা-নিউক্লিয়াস তৈরি করে দেশে আবারো মুক্তির আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এ আন্দোলন স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন। এ আন্দোলন ৭১’ পরবর্তী সকল হত্যার আন্দোলন। এ আন্দোলন রাজাকার-মৌলবাদী-যুদ্ধাপরাধী নির্মূল এর আন্দোলন। এ আন্দোলন বঙ্গবন্ধু কন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার আন্দোলন।

এ আন্দোলন উন্নয়নের আন্দোলন, সাবির্ক পরিবর্তনের আন্দোলন, এ আন্দোলন বাঙ্গালী জতিকে আত্মনির্ভরশীল জাতিতে রূপান্তরিত করার আন্দোলন। Email:

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.