আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা কতটা যৌক্তিক



বর্তমান বাংলাদেশে যে সরকার ব্যবস্থা আছে সেটা কতটুকু সফল। দেশ স্বাধীন হয়ে ৪০ বছরে পা দিতে চলেছে। এতগুলো বছরে আমাদের বর্তমান সরকার ব্যবস্থা কতটুকু সফল হয়েছে? সে প্রশ্নের উত্তর জেনেও যদি আমরা সাবেক স্বৈরাচার ও লম্পটের দেয়া গোলটেবিল বৈঠকে দেশের সুশীল ও ভামরা প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থার চালু করার পক্ষে ওকালতি করেন। তখন না হেসে পারি না। এসি কক্ষে থেকে দেশকে নিয়ে তারা নানা স্বপ্ন দেখতেই পারেন।

কাম কাজ নাই কিছু একটা করে তো মিডিয়ার আলোচনায় থাকতে হবে। যেদেশের সিংহভাগ মানুষ রাজধানীমুখি সেদেশের মানুষ হঠাৎ করেই নিজ গ্রামে চলে যাবে। নির্বোধের ভাবনা এটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের কোনো চিকিৎসককে গ্রামে বদলি করলে সে ঢাকায় চলে আসার জন্য বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে তদবির শুরু করে দেয়। ফলাফল ,পুনরায় সে রাজধানীতে ফিরে আসে।

স্বয়ং স্বাস্থ্য মন্ত্রী কিছু দিন আগে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে এরকম বলেছেন। একই রকম বিবৃতি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী নুরল ইসলাম নাহিদসহ অন্যান্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীরা। সব আমলে চিত্র যখন এই রকম তখন প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা কতটুকু সফল হবে? এবার আসি প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা সফল হওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে। ভারত -পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থায় চলছে। এ ধরনের সরকার ব্যবস্থায় ভারত ও পাকিস্তান কতটুকু সফল হয়েছে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

ভারত ও পাকিস্তানে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর বাস রয়েছে। পাকিস্তানে পাঞ্জাব,সিন্দু,বেলুচিস্তান ও উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গঠিত । প্রতিটি প্রদেশেকে ভাগ করার পেছনে ওই অঞ্চলের ভাষা ভিত্তিক জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও তাদের বিস্তৃতি এগুলো গুরুত্ব পেয়েছে। ভারত এমন একটি দেশ যেখানে এক অঞ্চলের মানুষের ভাষা ও শরীরীক গঠন বর্ণ ও লোকাচারে নানা রকম বিভিন্নতা রয়েছে। তাদেরকে একই ছাতার তলে আনতে একটি কেন্দ্রীয় সরকার থাকা উচিত।

আর প্রদেশ গুলোকে স্বায়ত্বশাসনের মাধ্যমে শাসন করার অধিকার দেয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকে এ ধরনের সরকার ব্যবস্থায় গেছে ভারত ও পাকিস্তান। আমাদের দেশ তাদের তুলনায় খুব ছোট। ভাষা একটি । আঞ্চলিকতা মানুষের মধ্যে থাকলেও এক অঞ্চলের মানুষ অন্য অঞ্চলের মানুষের সাথে চলাফেরা বা আত্মীয়তা গড়তে কোন অসুবিধা হয় না। পাকিস্তানে পাঠানের কোন মেয়েকে যদি অপাঠান কোনো ব্যক্তি বিয়ে করে তবে সেখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়।

তেমনি সিন্দুতে যদি কোনো মোহাজিরের সাথে সে অঞ্চলের কোন ব্যক্তির বিয়ে হয় সেটিকেও ভাল চোখে দেখে না সেখানকার বাসিন্দারা। একই চিত্র আমরা ভারতেও দেখতে পাই। বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী সাম্প্রদায়িকতা এখনো কলকাতা গেলে চোখে পড়ে। কিছুদিন আগে মহারাষ্ট্রে উত্তর ভারতীয়দের ওপর সেখানকার লোকদের হামলার খবর নিশ্চয় শুনে থাকবেন। এসবই হচ্ছে সেখানে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থার কুফল হিসেবে যদি আপনি বিষয়গুলোকে একটু তলিয়ে দেখেন।

বর্তমান ভারতে আরো কয়েকটি রাজ্যে ভাঙ্গনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কথায় আছে ভাঙ্গাতে পারে বান্দির পোলাও কিন্তু গড়তে পারেনা বিবির পোলাও। কোনো কিছু ভাঙ্গা খুব সহজ কিন্তু একে জোড়া লাগান কঠিন। যেকোনো সময় সরকার প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থায় যেতে পারে কিন্তু ফলাফল বরং আগের চেয়ে খারাপ হবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.