ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক পার্টি(আইডিপি) -র আহবায়ক মাওলানা আব্দুস সালাম। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ডিজিএফআই, এনএসআই এবং এসবির কর্তাব্যাক্তিদের সাথে প্রায় বছরদুয়েক ধরে চলে আসা আলাপ-আলোচনার পর এসব সংস্থার মাধ্যমে সরকারের সবুজ সংকেত পেয়ে ১৮ মে, ২০০৮ সালে গঠন করেন ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক পার্টি(আইডিপি)। যদিও এসব সংস্থার কর্তাব্যাক্তিরা নির্বাচন পরবর্তী সরকারের মনোভাব আইডিপির প্রতি নেতিবাচক হতে পারে বলে বারবার সতর্ক করেন করেন আইডিপি নেতৃবৃন্দকে। ডিসেম্বর ২০০৮ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই আইডিপিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানায় আইডিপি।
একই সাথে রাজনৈতিকভাবে সংগঠনকে মজবুত করার কাজও চলতে থাকে। সরকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নতুন করে আইডিপির ব্যাপারে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আইডিপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখতে পায় আইনীভাবে এরা সবাই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিসম্পন্ন। এমনকি স্বয়ং মাওলানা আব্দুস সালামের নামে কোন মামলা এমনকি সাধারণ ডায়েরী পর্যন্ত নেই। কিন্তু আইডিপিকে তো ঠেকাতে হবে! অতএব সাদা পোশাকে সিআইডির গোয়েন্দারা বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসল মাওলানা আব্দুস সালামকে ২৩ মার্চ, ২০০৯ সালে।
কেন গ্রেফতার করা হল, কি অভিযোগে গ্রেফতার করা হল কিছুই জানানো হলনা কাউকে। দুইদিন পর তাকে ২০ জানুয়ারী, ২০০১ সালে পল্টন ময়দানে সিপিবির বোমা হামলা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হল। অথচ ঐ সময় তিনি অবস্থান করছিলেন পাকিস্তানে। গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে মামলার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা বা এ জাতীয় কিছুই করা হলনা। নিছক আটকে রাখা হল কারাগারে ।
অবশেষে ২০ জুলাই, ২০০৯ তারিখে তাঁকে ছেড়ে দেয়া হল জামিনে আর সেইসাথে তালীম দেয়া হল আইডিপির কাজ যেন আর না করেন।
দেশের কিছু মিডিয়া ইসলামী শক্তির বিরোধিতায় সদা তৎপর। বিরোধিতা করবি ভাল কথা তাই বলে পরনের লুঙ্গি মাথায় বেধে করতে হবে কেন? আইডিপি প্রধান মুক্তি পেলেন ২০ জুলাই, ২০০৯ তারিখে (ডেইলী স্টারের প্রতিবেদন দেখুন) আর সরোয়ার আলম নামক এক মহান প্রতিবেদক দৈনিক যুগান্তরে ০৯ আগস্ট, ২০০৯ তারিখে প্রতিবেদনে লিখলেন: 'কারাগার থেকে হুজি নেতা মুফতি হান্নান ও আবদুস সালাম নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন '(প্রতিবেদনের চার নম্বর লাইনটি দেখুন) । এর আগে ১৭ জুলাই, ২০০৯ তারিখে একই ব্যাক্তি আইডিপি আহবায়ককে নিয়ে আরও কিছু গাঁজাখুরি গল্প লিখেন। যে ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইডিপি নেতৃবৃন্দ তাঁদের ব্লগে।
এখানেই শেষ নয়, আইডিপিকে নিয়ে একশ্রেণীর মিডিয়ার বাড়াবাড়িমূলক কথাবার্তা নিয়ে আমার দেশের সহকারী সম্পাদক সঞ্জীব চৌধুরীর সম্পাদকীয় লিখার পর টনক নড়ে সরোয়ার সাহেবের। তিনি পরদিনই প্রতিবেদন লিখলেন জামিনে মুক্তি পেয়েই মাওলানা সালাম মাঠে নেমেছেন শিরোনামে। আর সাথে সেই পুরনো ভাঙ্গা রেকর্ড বাজানো। ২৩ মাত্রার ডায়াবেটিস রোগী যিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আর বিছানা থেকেই উঠা যার পক্ষে কষ্টকর তিনি কিভাবে দল পরিচালনা করেন তাও আবার ঢাকায় থেকে তা এই মহান প্রতিবেদকের মাথায় কি করে ঢুকল আল্লাহই ভাল জানেন।
সরোয়ার সাহেব তাঁর মেধার সাক্ষর আবারও রেখেছেন গত তিনদিন আগের যুগান্তরে।
সেখানে তিনি আবারও তাঁর আষাঢ়ে গল্পের ভাণ্ড উপুড় করেছেন। মাওলানা সালামের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদেরকেই দেখা করতে দেয়া হয়না। সেখানে তাঁর দলের নেতাকর্মীরা কিভাবে দেখা করেন তা বুঝা মুশকিল। দুইএকজন আইডিপি নেতা দেখা করতে গেলে ছবিসহ দরখাস্ত, বিশেষ শাখার লোকদের উপস্থিতে সাক্ষাৎ ইত্যাদি ঝক্কি-ঝামেলা দেখে আর আগে বাড়েননি। তাছাড়া নিজেদের যেকোন সময়ে বিনা কারণে গ্রেফতার হওয়ার আশংকা তো আছেই।
অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করার ছিল। কিন্তু কলেবর বৃদ্ধির ভয়ে আর বড় করা হলনা। দেশের সাংবাদিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রত্যাশা আর এজেন্ডা বাস্তবায়নমূলক আর গঞ্জিকাসেবনপূর্বক আষাঢ়ে গল্প না লিখে দেশের প্রকৃত সমস্যাগুলো নিয়ে লিখে দেশের মানুষের পক্ষে কিছুটা হলেও কাজ করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।