এহহামিদা'র ব্লগ!!
********************************************************************
মওলানা আসামের মানুষ, তিনি ইন্দিরার অনুগ্রহে শেষ জীবনটা জন্মস্থানে কাটানোর ইচ্ছে জানাতেই পারেন। কিন্তু ভারতের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের কনফেডারেশন গঠনের ব্যাপারটা আমার মাথায় একদমই ঢোকেনি। প্রবাসী মুজিব নগর সরকারের তরফে এমন কোন প্রস্তাবনার কথা কখনোই শোনা যায়নি।
********************************************************************
http://omipial.amarblog.com/posts/99814
অমি পিয়ালের উপরের পোস্ট থেইকা জীবনে প্রথম বারের মত জানলাম ভাসানীর জন্ম আসামে!! সিরাজগন্জ যে কোন এক সময় আসামের অণ্তর্গত ছিল, তা অমি পিয়ালের পোস্ট পড়ার আগ পর্যন্ত জানার সৌভাগ্য হয় নাই!!! উনি ইতিহাস লেখেন আর আমি পাতিহাস লেখি এই যা পার্থক্য!!
সেই একই পোস্টে কুলদা রায় আনিসুজ্জামানের সুত্র ধরে একটি মন্তব্য করে!!
********************************************************************
কুলদা রায় ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১০ @ ৪:১৫ পুর্বাহ্ন ৭.৩
@পেটে খিদা হাসতে থাকে
আহা, পি মুন্সী ওরফে পুটকি মুন্সি (প্রাতঃস্মরণীর ডোবার ব্যাঙ কর্তৃক প্রদত্ত) ওরফে লুঙ্গি মজহার ওরফে ফরহাদ মজহার যাহার নাম লৈলে দিন মাটি হয়।
ভাসানী বিষয়ে তিনটি উদ্ধৃতি--
..আইয়ুবের কারাগার থেকে সোহরাওয়ার্দীর মুক্তিলাভের অল্পকাল পড়ে মওলানা ভাসানীরও কারমুক্তি ঘটে।
যদিও তিনি গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা দাবী করেছিলেন, কিন্তু আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যাপারে তেমন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন নি এবং এক্ষেত্রে সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে একযোগে কাজ করতেও সম্মত হন নি। পরে--সোহরাওয়ার্দীর জীবদ্দশায়ই--তিনি আইয়ুব খানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষাৎ করেন, এক প্রতিনিধিদলের নেতা হিসাবে চীন সফর করেন, এবং ফিরে এসে--মূলত পররাষ্ট্রনীতির দোহাই দিয়ে --আইয়ুব খানের প্রতি সমর্থনজ্ঞাপনের আহ্বান জানান।
১৯৬২ সালে চীন-ভারত সীমান্ত-সংঘর্ষ অভাবিতভাবে যুদ্ধের রূপ নিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পক্ষ নেয়। ভারত-বিরোধিতার নীতি থেকেই আইয়ুব চীনের সঙ্গে সদভাব-স্থাপনে উদযোগী হন। তাতেই মওলানার চোখে আইয়ুব গ্রহণযোগ্র হয়ে ওঠেন।
--কাল নিরবধি/ আনিসুজ্জামান।
********************************************************************
কুলদা রায়ের এই মন্তব্য অমি পিয়াল সোতসাহে সামু ব্লগের তারই একই পোস্টে প্রচার করে!! উদ্দেশ্য ভাসানীর পোংগা মারা!!
এনি ওয়ে!!
মুজিব গুরু সোহরোয়ার্দীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তিনি দেশ ভাগ হওয়ার পরেও ভারতেই থেকে গিয়েছিলেন!! এক সময়ে সেখানকার ট্যাক্স কালেক্টরদের দৌড়ানী খেয়ে পুর্ব বাংলা বা পুর্ব পাকিস্থানে এসে ভাসানীর গড়া আওয়ামী মুসলিমলীগে তার রাজনীতির পুন:সুচনা করেন!!
এরপর একসময়ে সোহরোয়ার্দী সমগ্র পাকিস্থানের প্রধান মন্ত্রী হন ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৭ পর্যন্ত!! প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি পুর্ব- পাকিস্থানের জন্য কিছু অর্থনৈতিক সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করলেও তিনি ছিলেন পু্র্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্বশাসন বিরোধী!! ভাসানী-সোহরোয়ার্দী দুইজনই আওয়ামী মুসলীম লীগের নেতা হলেও পু্র্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্বশাসনের দাবীই হয়ে দাড়ায় ভাসানী-সোহরোয়ার্দী সংঘাতের অন্যতম একটি কারন!!
১৯৫৭ সালের ৩ রা এপ্রিলের রিপোর্ট ও ৪ ঠা এপ্রিলে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট থেকে জানা যায়
The East Pakistan Legislature in Dacca called today for the fullest autonomy for the province.
..........
The vote seriously embarrassed Prime Minister Hussain Shahid Shurawardy by bringing his AwamiLeague Party in direct conflict with his own views.
Source: East Pakistan asks for Full Autonomy, The New York Times, Apr 4, 1957.
ষোহরোয়ার্দীর মতে তখন পুর্ব পাকিস্থান অলরেডী পাকিস্থানের সংবিধান অনুযায়ী ৯৯% এরও বেশী স্বায়ত্বশাসন সউবিধা ভোগ করে আসছে!! তখনপুর্ব পাকিস্থান সরকারে ছিল আতাউর রহমান খানের আওয়ামী মুসলিমলীগ সরকার!!
Mr. Suhrawardy, an easterner, has become a symbol of East Pakistan's political prestige even though he is at odds with many of the men who helped him get into the Prime Minister's office.
Source: Pkistan face threat to Unity, The New York Times, Apr 14, 1957.
ষোহরাওয়ার্দীর এই সংঘাত ছিল আসলে ভাসানীর সাথে!! ভাসানী তখনও আওয়ামী মুসলিম লীগে ছিল এবং পু্র্ব পাকিস্থানে স্বায়ত্বশাসন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন!!
১৯৫৭ সালের জুনের ২৮ তারিখের রিপোর্টে দেখা যায় সোহরোয়ার্দী ভাসানীকে রাজনৈতিকে কৌশলে আওয়ামী মুসলীম লীগের সর্বাধিক সদস্যের সমর্থনে ভাসানীকে একপ্রকার আম্বালীগ থেকে বিতারিত করতে সমড়্থ হয়!!
A measure of political stability has been achieved here,at least temporarily, by the recent intraparty victory of Prime Minister Hussain Shaheed Suhrawardy over Maulana Abdul Hamid Khan Bhasani.
.....
Mr. Suhrawardy whose government belongs to the South east Asia treaty organisation and the bagdad Pact, stands for a pro-western foreign policy and strong central authority.
The Maulana advocates " positive neutralism", regional Autonomy for East-Pakistan, and according to an authoritative indian source-friendlier relations withIndia.
Source: Pakistani Chief Bests Party Foe, The New York Times, June 28,1957.
এই সময়েই ভাসানীর অনুসারীদের আম্বা লীগ থেকে বিতাড়িত করা হয়, ভাসানী আম্বালীগ ত্যাগ করেন ও নতুন পার্টি গঠন করেন!!
সোহরোয়ার্দী অবশ্য পরে আয়ুব ক্ষমতা নেয়ার পরে করাচীতে থেকে যান। প্রথম দিকে অবশ্য ভাসানী রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে গ্রেফতার হলেও সোহরোয়ার্দী গ্রেফতার হন নি। পরে আয়ুব ভাসানীকে কাছে টেনে, সোহরোয়ার্দিকে দুরে ঠেলার চেষ্টা করলেও ভাসানী তা আয়ুবের একটা চাল বলেই মনে করত!!!
তবে ভাসানীই সেই ব্যক্তি যার নেতৃত্বে আয়ুবের পতন ঘটে!! তবে এর ফল ভোগ করে পুর্ব বাংলায় মুজিব এবং পশ্চিম পাকিস্থানে আয়ুবের এক সময়ের পররাষ্র্ট্রমন্ত্রী ও পরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভুট্টো জেলে থেকে!! এখানে বলে রাখা ভাল যে, ১৯৬৯ এর আয়ুব বিরোধী গন অভ্যুত্থান পরিচালিত হয়েছিল পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্থানে একযোগে!! ভাসানী নেতৃত্বাধীন সেই আয়ুব বিরোধী আন্দোলনের কারনেই মুজিব ও ভুট্টোর রাজনৈতিক আধিপত্যের সুচনা হয়!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।