আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমেডি নাকি ট্রাজেডি !!! !

কত কিছু যে করতে চাই, তবুও কিছু করতে না পারার দায়ে মাথা খুঁটে মরি ।

ঘটনা হল, ঘটনা অনেক আগের। অনেকদিন পরে মনে হল। নিজেই হাসলাম। কলেজে বছরের কোন এক সময় কিছু নতুন টিচাররা ট্রায়াল দিতে আসত।

এক কি দুই সপ্তাহ বিভিন্ন টিচাররা ক্লাস নিতেন। পেছনে আরেকটা সিনিয়ার টিচার দাঁড়ানো থাকত, উনাদের ক্লাস নেয়া দেখতেন। বেশির ভাগ সময়েই নতুন টিচাররা ক্লাস নিতে আসলে খুব মজা পেতাম। এরা কখনও ঝাড়ি দিতেন না, ধমক দিতেন না। পড়া না পারলে কিছু বলতেন না।

ত, একবার পড়ছি এক বদরাগী নতুন টিচারের সামনে। প্রথমে ত বুঝি নাই, অন্য সব নতুন টিচারের ক্লাসের মতন ফিঁসফাঁস কথা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর, টিচার ত পারলে পুরা খেয়েই ফেলে। যাকে যা ইচ্ছা ধমক ধামক দিয়ে ফাটায়া দিতেসে। এটা ছিল কেমিস্ট্রি ক্লাস।

আর, স্যার কি যেন একটা ঝামেলার বিষয় ঝাড়ি দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করতেছিল। স্যারকে চেক করার দায়িত্বেও ছিলেন ভাইস প্রিন্সিপাল। আর উনি সম্ভবত ক্লাসের পুরোটুকু দেখবেন না। কোন একটা সময় এসে একটু দেখে যাবেন। যাই হোক,আমাদের কলেজে কখনও স্টুডেন্টদেরকে মারার সিস্টেম ছিল না।

এই ব্যাটা নতুন স্যার এসে মার দেয়ার হুমকি দেয়। পোলাপান সবার চরম মুড অফ। আমার পাশে বসছিল আমার এক মহা বিটলা দোস্ত (এখন জ়ে ইউ তে পলিটিক্স করে)। মাঝে মাঝে আমরা ফিঁস্ফাঁস করছিলাম। হঠাৎ স্যার টার্গেট করল ওই দোস্তকে।

-এই ছেলে এত কথা বল কেন? শুরু হল ঝাড়ি দেয়া। সবার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। স্যার এক সময় দোস্তকে বললেন, এখন যা পড়াইছি সে প্রশ্নের উত্তর বল। ছেলে বলে, “ বলব না । ” স্যার ত পুরা চ্যাতা।

“ বলবা না মানে? তুমি এখনই বলবা। যদি পার এখনই বল। ” ছেলে তেমনই নিষ্পৃহ গলায় বলে, “ পারিনা। ” স্যার খুবই বিরক্ত হলেন। স্যার সবার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন, পড়াশোনা না করাটা কত খারাপ।

আর আমি সেই সুযোগে আস্তে আস্তে পাশে বসে বই দেখে ওকে উত্তর বলে দিচ্ছি। স্যার আরও উলটা পালটা ঝাড়ি দিয়ে বললেন, “ আমি ত ঠিকই পড়ালাম, তুমি শয়তানিতে ব্যস্ত ছিলা তাই পারো নি। এখন যদি না পারো, দাঁড়িয়ে থাকবা। সামনের সব ক্লাসের স্যারদেরও আমি বলে যাবো যেন তোমাকে দাঁড়া করিয়ে রাখে। আর যদি পার তাহলে যা করতে চাবা, তাই করতে দিব।

” এইবার ওই দোস্ত সুযোগে পুরা প্রশ্নটা পট পট করে বলে দিল। স্যার ত পুরাই টাস্কি। এখন স্যার ওকে বলতেছে, “ তুমি কী চাও এখন? ” ছেলে বলল, “ স্যার আমি ক্লাস করব না। আমি বের হয়ে যেতে চাই। ” আমি ত তবদা।

পুরা ক্লাস অবাক। স্যারও খুব বিরক্ত হয়ে ওকে বের করে দিল। এই ছেলে সোজা ভাইস প্রিন্সিপালের রুমের সামনে যেয়ে এলোমেলো হাঁটা শুরু করে দিল। স্বাভাবিক ভাবেই ভিতর থেকে ভিপি ওকে ডাকল, “ ক্লাস নাই? এখানে এভাবে ঘুরাঘুরি করতেছ কেন? ” ছেলে বলতেছে, “ স্যার আমি পড়া পারছি। পরে নতুন স্যার আমাকে ক্লাস থেকে বের করে দিছেন।

” হে হে হে হে আর যা হওয়ার তাই হল। ভিপি স্যার ত দৌড়ে আমাদের রুমে আসল দোস্তকে নিয়ে। স্যারকে এসে জিজ্ঞাসা করতেছে, “ এ ছেলে কী করছিল? একে বের করে দিসেন কেন? ” নতুন স্যার উত্তর দিল, “ স্যার এই ছেলে পড়া পারছিল, চরম বেয়াদব। ” পুরা ক্লাস ত হেসে দিল। স্যার থতমত খেয়ে গেল।

পরে ভিপি উনাকে বুঝালেন যে আমরা খুবই খারাপ। আমাদেরকে কন্ট্রোল করতে উনাকে আরও কিছু কিছু জিনিস শেখা লাগবে। আরও কিছু টেকনিক আছে এই সব। মানে বুঝানো হল, উনি আমাদের কন্ট্রোল করতে পারবেন না। খেক খেক খেক সেই নতুন স্যারের পরিবর্তে আরও রাগী স্যার আসার আগ পর্যন্ত আমার ঐ বিটলা দোস্ত ছিল পুরা ক্লাসের হিরো।

হে হে হে লেটেস্ট একটা কাহিনী বলি। ভার্সিটিতে জুনিয়র সেমিস্টারের একটা মেয়েকে দেখি। মেয়েটা একটু শ্যামলা। সে খুব পাউডার মেখে আসে (আমার মনে হয়)। সম্ভবত, এই ধারণার কারণেই তার পাশাপাশি থাকলে আমি ট্যালকম পাউডারের ঘ্রাণ পাই।

ত তার এমন চরম মাত্রার পাউডার প্রীতির কারণে আমি তার নাম দিসি পাউডার। এই নারী জাতির সাথে জীবনে কথা হয় নাই। আর তার নামও জানি না। কিন্তু আমার দেয়া নাম এমন ভাবে হিট করসে, পুরা ভার্সিটির যে তাকে সামনে পায়, বলে, “ এই পাগলা, তুই না এর নাম পাউডার দিসিলি?? চরম করছিস। হা হা হা ” আমি পুরাই তবদা খেয়ে যাই।

মেয়েকেও শোনায়, আমাকেও ধরা খাওয়ায়। মেয়েটা নিশ্চয়ই মনে মনে কষ্ট পায়। এখন মনে হয় সে আর পাউডার দেয় না। কিন্তু আমাদের ব্যাচের পোলাপান ও পাশে থাকলেই বলা শুরু করে, “ আকাশে বাতাসে পাউডার আর পাউডার। ” বেচারীর চোখে আমি নিশ্চয়ই খুব খারাপ লোক।

কিন্তু আমি ত ওকে পাউডার বলা বাদ দিসি অনেক আগেই। পোলাপান আমার নাম ভাঙ্গায়া খায়। মেয়ে এমনি হেঁটে গেলে আমার ব্যাচের পোলাপান ফিসফিস শুরু করে, ঐ যে যাচ্ছে পাউডার। আজকে ও সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, আমি লাফ দিয়ে আমার পাশের ছেলেটার মুখ চেপে ধরলাম যেন উলটাপালটা চিৎকার না দেয়। ও অতক্ষণে আমার হাত মুখে নিয়েই পাউডার পাউডার বলে চিল্লানো শুরু করছে।

তাও গলায় জোর পাচ্ছে না। আমি ত মুখ চেপে আছি। ওই মেয়েটা এখনও শোনে নাই। পাশের এক দোস্তকে ডাকলাম, আমাকে সাহায্য করতে। যেন ওর মুখ আরও জোরে চেপে ধরা যায়।

কিন্তু কী ভাগ্য ! ওই ব্যাটা এসে জোরে জোরে বলে, “ আরে ওই ত সামনে পাউডার। ওর সামনে এমন করতেছিস কেন? ” মেয়েটা পুরা ঘুরে তাকালো। দেখলো আমি দাঁড়িয়ে আছি। কী অবস্থা !!! (আমার এক বান্ধবী লেটেস্ট আবিষ্কার করসে, ওই মেয়ে কখনও পাউডার দিত না। যা দিত তার নাম ‘ফাউন্ডেশন’।

মুখেও যে বিল্ডিং এর মত ফাউন্ডেশন দেয়া যায়, এই “অতি স্বাভাবিক” জিনিসটা জানতাম না বলে আমি নাকি মনে করতাম যে সেই মেয়ে পাউডার দেয়। আসলে তার নাম নাকি পাউডার না দিয়ে নাকি ফাউন্ডেশন দেয়া উচিত ছিল !!) কী দিন আইল! পুরা ধরা ! © আকাশ_পাগলা এই ক্যাটাগরীর সব পর্বের কাহিনী সত্যি। তাই দম ফাটানো হাসির কৌতুক আশা না করাই ভাল। এই ক্যাটাগরীর অন্যান্য পর্বের লিংক দিলাম। Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।