অসুস্থ নগরে একটু সুস্থতার খোঁজে ...........
একসময় স্বপ্ন দেখতাম বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলবে। সময়টা মনে হয় ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাবার পর। সাবের হোসেনের বোর্ড লবিংটা ভালো জানত। তাইতো শুধুমাত্র ঢাকা স্টেডিয়াম আর বিকেএসপি দেখিয়েই বাংলাদেশ টেস্ট খেলার সনদ পেয়ে গেল। ডালমিয়ার তখন আইসিসি সভাপতি থাকাটা ছিল প্লাস পয়েন্ট।
অবশেষে ভারতের সাথে অভিষেক টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে গেল বাংলাদেশ। দল ঘোষণা করা হলে একটা চমক চোখে পড়ল। তখন দারুন ফর্মে থাকা হাবিবুল বাশার দলে নেই। সেটা আমাকে বেশ হতাশ করেছিল। পরে শুনলাম সাবের হোসেনের নির্দেশে তাকে দলে নেয়া হয়েছে।
তারপর সব ইতিহাস। বাংলাদেশের কোন ব্যাটসম্যান আগারকার-কুম্বলেকে পিটিয়ে রান তুলতে পারে তা দেখালেন হাবিবুল বাশার (সুমন)। টেস্ট ইতিহাসে দেশের প্রথম ফিফটি তার,এবং যা ছিল দাপুটে ব্যাটিং-এর অপরূপ প্রদর্শনী। দুর্ভাগ্য বাশার ৭১ রান করে প্রিয় পুল শটে আউট হয়ে যান। পরের ইনিংসে ৩০ রান করে তিনি সর্বোচ্চ স্কোরার,যেখানে বাকীরা মিলে করেছেন ৬০ রান।
পরের কিছুদিনে বাশার হয়ে গেলেন টেস্টে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। যিনি নামলেই তিনি ফিফটি করবেন এটা ধরে নিতাম। অধিনায়কত্বও পেলেন তিনি। হয়ে গেলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক।
হতে পারতেন তিনি আমাদের টেন্ডুলকার,হতে পারতেন স্টিভ ওয়াহর মত বিপদে হাল ধরা কাপ্তান।
কিন্তু তাকে সে সুযোগ দেয়া হল কই? অফ-ফর্মের দোহাই দিয়ে অভিজ্ঞতার প্রয়োজন দেখালোনা নির্বাচকরা। বাদ পড়লেন বাশার। আইসিএলে গিয়ে অনেকের সুবিধাই করে দিলেন তিনি। দলে ঢুকে পড়ল রাকিবুলের মত আনকোরা প্লেয়ার,আশরাফুল হয়ে গেল অভিজ্ঞ।
সেই বাশার যখন আইসিএল ছাড়ল তখন শাহরিয়ার নাফিস, আফতাবের কথা ভাবা হলেও তাকে বিবেচনায় আনাই হলো না।
আফতাব কখনোই টেস্টে সপ্রতিভ ছিলোনা। তার জায়গায় বাশারকে নেয়া যেত না? নাকি সে রাকিবুলের চেয়েও খারাপ প্লেয়ার? নিউজিল্যান্ড ট্যুরে আমরা তাকে সুযোগ করে দিতে পারতাম সম্মানের সাথে অবসর নেয়ার। সে সুযোগ তাকে দেয়া হয়নি। নিরবেই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন আমাদের হাবিবুল বাশার। যার ব্যাটিং ধারাবাহিকভাবে অন্যদের ব্যর্থতার মাঝে ছিল সুখের পরশ।
আশরাফুলকেও সুযোগ দেয়া হয়েছে, সে কি পেরেছে বাশারের মত গড় বানাতে?
আরেকজন অন্যতম সেরা ক্রিকেটারকে তার মতো করে বিদায় জানানোর সুযোগ দেয়া হলো না। যেমনটি হয়নি আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম,খালেদ মাসুদদের। নান্নুকে একটা টেস্ট খেলার সুযোগও দেয়া হয়নি।
হায়রে বিসিবি,গুনীর কদর কখনো বুঝল না। আফসোস, শুধুই আফসোস।
হাবিবুল বাশার সুমন
টেস্ট:
ম্যাচ -৫০ ইনিংস-৯৯ রান-৩০২৬ ১০০-৩ ৫০-২৪ গড়-৩০.৮৭ স্ট্রাইক রেট-৬০.২৭
ওয়ানডে:
ম্যাচ-১১১ ইনিংস-১০৫ রান-২১৬৮ ১০০-০ ৫০-১৪ গড়-২১.৬৮ স্ট্রাইক রেট-৬০.৪৫
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।